ভারত ও পাকিস্তান এই দুই দেশের হাতেই রয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র। যদি যুদ্ধ তীব্র আকার ধারণ করে তবে প্রথমবার ইতিহাসে পরমাণু যুদ্ধ ঘটে যেতে পারে।
যুদ্ধ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী ও কৌশলগত বিশ্লেষণ নিয়ে কাজ করা ‘দ্য সুইফট সেন্টার’ নামে একটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে কি কি ভবিষ্যতে ঘটতে পারে এ নিয়ে পাঁচটি ভবিষ্যদ্বাণী করেছে। আন-হার্ড মিডিয়ার সম্পাদক স্যালি চ্যাটারটন এ নিয়ে লিখেছেন।
সংক্ষেপে সেই পাঁচটি ভবিষ্যদ্বাণী দেওয়া হলো
১. আগামী ৭ দিনের ভেতর হতাহত কতো হতে পারে?
অনেকে মানে করছেন ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ১০০ জন বা তার বেশি ইউনিফর্মধারী (সেনা, পুলিশ বা মিলিশিয়া) হতাহত হবে হতে পারে।
পূর্বাভাসদাতারা বলছেন এর সম্ভাব্যতা ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ খুব বেশি নয়। বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, বড় ধরনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শঙ্কা তুলনামূলকভাবে কম। ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধই ছিল সর্বশেষ বড় সংঘর্ষ, যেখানে হতাহতের সংখ্যা তিন অঙ্ক ছুঁয়েছিল। এর বেশি কিছু হবে না।
২. সিন্ধু পানি চুক্তি আবার কার্যকর হবে?
সিন্ধু পানি চুক্তি কার্যকর হবে আবার ? বিশেষ করে চলতি বছরে ? এ ব্যাপারে উত্তর হলো ,যদি দুই দেশের মধ্যে সংঘাতে ১০০ জনের কম হতাহত হয় তাহলে সম্ভাব্যতা ৬৭ শতাংশ। যদি ১০০ জনের বেশি হতাহত হয় তাহলে সম্ভাব্যতা ২২ শতাংশ। ভারত সরকার ইতিমধ্যে এই চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে। অথচ এই চুক্তি ১৯৬০ সাল থেকে কার্যকর ছিল। এমনকি ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের যুদ্ধেও তাতে প্রভাব পড়েনি। এবারই প্রথম তা স্থগিত হলো।
৩ হতাহত আর বাড়বে কি?
প্রশ্ন করা হয়েছিল ৩০ জুন ২০২৫-এর মধ্যে দুই দেশের মিলিয়ে ১,০০০ জন সৈনিক হতাহত হবে কি?
১৫ মের মধ্যে ১০০ জনের বেশি হতাহত হওয়ার সম্ভাব্যতা ১৯ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি আগামী দুই সপ্তাহে বড় সংঘর্ষ না হয়, তাহলে গ্রীষ্মে বড় ধরনের যুদ্ধের সম্ভাবনা খুবই কম। তবে যদি ১০০ জনের বেশি হতাহতের মতো ঘটনা ঘটে, তাহলে তা বড় ধরণের যুদ্ধ হতে পারে। তখন শান্তির পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তবে কেউ কেউ আশা করছেন যে দুই দেশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করবে।
৪. এ যুদ্ধে দুই দেশ কি পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করবে?
১০০ জনের বেশি হতাহত হলে সম্ভাব্যতা ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। ১০০ জনের কম হলে সম্ভাব্যতা ১ দশমিক ৬ শতাংশ। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, পাকিস্তান তার সামরিক কৌশলে ছোট আকারের ‘কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র’ ব্যবহারের কথা বলে রেখেছে। তবে তা ঘটবে যদি তারা কোনো প্রচলিত যুদ্ধে হেরে যেতে থাকে। ভারত এ ব্যাপারে কিছু বলেনি।
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, কারগিল যুদ্ধেও বহু হতাহতের পরও পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার হয়নি। সুতরাং এই ধরনের যুদ্ধ হবে না। তবে কাশ্মীরে যুদ্ধ যদি সীমান্তের মানচিত্র পাল্টানোর দিকে যায়, তখন পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার হতে পারে।
৫. ভারতের ব্যবসা কেমন হবে?
১০০ জনের বেশি হতাহত হলে আনুমানিক ২৯ বিলিয়ন ডলার। ১০০ জনের কম হলে আনুমানিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বের জেনেরিক ওষুধ সরবরাহে ভারতের বড় ভূমিকা বিশাল। তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এমনকি সংঘর্ষ হলেও ভারতীয় ওষুধ রপ্তানির ওপর প্রভাব খুবই সীমিত থাকবে। যুক্তরাষ্ট্র একাই বছরে ভারতের কাছ থেকে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলারের ওষুধ কেনে। যুদ্ধে সেই চাহিদা কমবে না।