শিরোনাম
◈ বিদ্যুৎ আমদানিতে আদানির ৪০ কোটি ডলারের ‘শুল্ক ফাঁকির’ অনুসন্ধানে দুদক ◈ হাইকোর্টে চিন্ময় দাসের জামিন ◈ আবারও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাগুলি ◈ আজ গভীর রা‌তে বা‌র্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মু‌খোমু‌খি ◈ প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি, প্রস্তুতি না রাখা আত্মঘাতী: প্রধান উপদেষ্টা ◈ বড় সুখবর দ্বৈত নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের জন্য ◈ টি-টোয়েন্টি সি‌রিজ খেল‌তে পাকিস্তানে যাচ্ছে বাংলাদেশ ◈ আমার স্বামী চায় আমি খোলামেলা জামা পরি: মডেল পিয়া বিপাশা ◈ বিচারকাজে বাধা ও হুমকি: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ◈ ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ঘর হস্তান্তর: সেনাবাহিনীর দক্ষতায় অর্ধেক খরচে সফল বাস্তবায়ন

প্রকাশিত : ০৮ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:৪৫ দুপুর
আপডেট : ৩০ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : এল আর বাদল

চীনা পণ্যে আরও ৫০ শতাংশ শুল্কের হুমকি ট্রাম্পের, 'শেষ পর্যন্ত' লড়াইয়ের ঘোষণা চীনের

এল আর বাদল ; চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পাল্টা শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে দেশটির ওপর আরও ৫০ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানোর হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সাফ জানিয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে তারা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই "ব্ল্যাকমেইলিং আচরণ" তারা কখনোই মেনে নেবে না। সূত্র, বি‌বি‌সি বাংলা

 চীনা পণ্যের ওপর আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকিকে "ভুলের ওপর ভুল" বলে অভিহিত করেছে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

চীনের অবস্থান হলো- শুল্ক আরোপের এই পরিকল্পনা প্রত্যাহার করা হোক এবং দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার মত পার্থক্যের সমাধান করা হোক।

সোমবার হোয়াইট হাউজে দেওয়া এক বক্তব্যে মি. ট্রাম্প বলেন, সম্প্রতি তিনি যে নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, তা স্থগিত করার ব্যাপারে তিনি ভাবছেন না। এমনকি এ নিয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে দর কষাকষি করতেও আপাতত ইচ্ছুক নন তিনি।

এর আগে, এরকম কিছু আলাপ সামনে এসেছে যে যুক্তরাষ্ট্র ৯০ দিনের জন্য নতুন আরোপিত শুল্ক স্থগিত করতে পারে। এই দাবিকে হোয়াইট হাউজ "ভুয়া খবর" বলেছে।

শুল্ক স্থগিতের সম্ভাব্যতার বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, "আমরা সেটার কথা ভাবছি না। অনেক দেশ আমাদের সঙ্গে চুক্তি করতে আসছে, আর এগুলো হবে ন্যায্য চুক্তি।"

মি. ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন, যদি চীন মঙ্গলবারের মধ্যে তাদের পাল্টা শুল্ক প্রত্যাহার না করে, তাহলে তিনি চীনা পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করবেন। এটি কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রে চীন থেকে নির্দিষ্ট কিছু পণ্য আমদানিতে মোট শুল্কহার দাঁড়াবে ১০৪ শতাংশ।

নিজের সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। গত শুক্রবার চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ৩৪ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে।

গত দোসরা এপ্রিল, যেটিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প 'মুক্তির দিন' হিসাবে আখ্যা দিয়েছিলেন, মি. ট্রাম্প চীনের পণ্যের ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় সব বাণিজ্যিক অংশীদারের ওপর আরোপিত ন্যূনতম ১০ শতাংশ শুল্কের অংশ হিসাবেই চীনের ওপর-ও তখন ওই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

কিন্তু এর আগে গত মার্চেও চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিলো।

এখন, যুক্তরাষ্ট্র যদি আবারও চীনের ওপর এই ৫০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করে, তাহলে চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত এই মোট ১০৪ শতাংশ শুল্ক চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য আমদানি করা মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য এক বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।

ট্রাম্প বলেন, "আমি আগেই সতর্ক করেছিলাম, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যদি কোনও দেশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, তবে তারা সঙ্গে সঙ্গে নতুন ও অনেক বেশি হারে শুল্কের মুখোমুখি হবে।"

এই প্রতিক্রিয়ায় চীন বলেছে, "চীনকে চাপ বা হুমকি দিয়ে কখনোই লাভ হবে না।"

ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংইউ বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে 'পারস্পরিক সুবিধাদানের নীতির নামে' একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, তা মূলত অন্য দেশের ন্যায়সঙ্গত স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করা এবং সমস্ত আন্তর্জাতিক বিধি-নিষেধকে অবজ্ঞা করে 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতিতে চলার নামান্তর।"

তিনি আরও বলেন, "এটা এক ধরনের একতরফাবাদ, সংরক্ষণবাদ এবং অর্থনৈতিক নিপীড়ন।"

মি. ট্রাম্প আরও বলেন, কিছু শুল্ক স্থায়ী হতে পারে, আবার কিছু কিছু নিয়ে আলোচনা সম্ভব। আমাদের ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণ রয়েছে," উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে "ন্যায্য ও ভালো মানের চুক্তি" করার ব্যাপারে আলোচনা করবে।

তিনি আরও বলেন, "এখন সময় আমেরিকা ফার্স্টের।" অর্থাৎ, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ দেখার। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ক্রমশ বাড়তে থাকা এই উত্তেজনা বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কাকে আরও জোরালো করেছে। পণ্যে রপ্তানিতে চীনের অন্যতম প্রধান গন্তব্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হওয়ায় এই অতিরিক্ত শুল্ক চীনের উৎপাদকদের জন্য একটি বড় আঘাত।

শুল্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা বিশ্বব্যাপী শেয়ার বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। নতুন শুল্ক ঘোষণার পর থেকেই বিশ্বের প্রায় সব বড় শেয়ার বাজার দরপতনের মুখে পড়েছে।

মার্কিন শেয়ারবাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই এর মূল্য আবারও তীব্রভাবে কমে যায়, আর ইউরোপের প্রধান শেয়ারবাজারগুলো, লন্ডনের এফটিএসই ১০০সহ, ৪ শতাংশের বেশি পতনের মধ্যেই দিনের লেনদেন শেষ করে।

এশিয়ার বাজারগুলো আরও বড় ধাক্কা খেয়েছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক একদিনেই ১৩ শতাংশ পড়ে গেছে। ১৯৯৭ সালের পর এটি সবচেয়ে বড় পতন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়