শিরোনাম
◈ উত্তরায় মহাসড়ক অবরোধ করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি ছাত্র-জনতার, ঘণ্টাব্যাপী যানজট ◈ বিভাজন নয় ঐক্য, প্রতিশোধ নয় ভালোবাসা—গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের ◈ আইপিএল আয়োজনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে আরব আমিরাত ◈ ভারত আসবে না বাংলাদেশ সফরে, হবে না এশিয়া কাপও ◈ এপ্রিলে  ১০১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছে বিজিবি ◈ ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়: সারজিস আলম ◈ জনআকাঙ্খা ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জনতা পার্টি বাংলাদেশের ◈ ভারত-পাকিস্তান তৃতীয় দিনের মতো সংঘর্ষে জড়ালো, যুদ্ধাবস্থা সীমান্তজুড়ে ◈ 'আপ বাংলাদেশ' নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ◈ দেশে অনলাইন জুয়া সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে: কঠোর হচ্ছে সরকার

প্রকাশিত : ২৮ মার্চ, ২০২৫, ১২:৩৫ রাত
আপডেট : ০৭ মে, ২০২৫, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তুরস্কজুড়ে বিক্ষোভ আরও তীব্রতর হয়েছে, ব্ল্যাকআউটেও নিয়ন্ত্রণের বাইরে

গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তুরস্কজুড়ে বিক্ষোভ আরও তীব্রতর হয়েছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটির কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রায় ১ হাজার ৯০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে ইমামোগলুর গ্রেপ্তারের ঘটনায় বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বিবৃতিগুলোকে প্রত্যাখ্যান করেছে তুরস্ক।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, গত সপ্তাহে ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলু আটকের পর বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও জলকামান ব্যবহার করেও বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। বিক্ষোভ দমাতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রায় ১৯০০ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে। 

২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন জোটকে চ্যালেঞ্জ জানাতে একরেম ইমামোগলুকে প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করেছে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)।

প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান চলমান বিক্ষোভকে ‘সহিংসতার আন্দোলন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। তিনি এ বিক্ষোভকে ‘পথ সন্ত্রাস’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে দাবি করেন, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর হামলা করছে এবং জনগণের সম্পদ নষ্ট করছে। 

তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) চেয়ারম্যান ওজগুর ওজেল বলেছেন, আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত অথবা ইস্তাম্বুলের কারাবন্দী মেয়র একরেম ইমামোগলুকে কারাগার থেকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত ‌‌‘প্রতিটি শহরে’ বিক্ষোভ অব্যাহত থাকবে।

তিনি জানান, দেশব্যাপী বিক্ষোভের মধ্যেই শনিবার ইস্তাম্বুলে একটি বড় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। এটি ২০২৮ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে ইমামোগলুকে দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট পদে এগিয়ে নেওয়ার জন্য দলের প্রচারণার সূচনা করবে।

একরেম ইমামোগলুর মুক্তি দাবি এবং দেশের জনগণের গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্বাস চলমান বিক্ষোভকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলে মনে করেন ওজেল।

এদিকে তুরস্ক সরকার কঠোর পদ্ধতিতেও বিক্ষোভ দমাতে না পেরে দেশজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্ল্যাকআউট করেছে। বলকান ইনসাইট জানিয়েছে, সাংবাদিক, সম্প্রচারক, নাগরিক সমাজ সংগঠন এবং ছাত্র গোষ্ঠীসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নেটওয়ার্ক এক্স-এর প্রায় ৭০০ অ্যাকাউন্ট ব্লক করা হয়েছে। 

আদালতের সিদ্ধান্তে সাইটগুলোতে অ্যাক্সেসও বন্ধ করা হয়েছে এবং ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট আরোপ করা হয়েছে। এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং অন্যান্যসহ অনেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ হয়ে পড়েছে।

ইলন মাস্কের এক্স বলছে, তাদের প্ল্যাটফর্মের বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্ট ব্লক করার জন্য আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে। 

তুরস্কের মিডিয়া ওয়াচডগ, রেডিও এবং টেলিভিশন সুপ্রিম কাউন্সিলের একজন সদস্য বলেছেন, ইমামোগলুর গ্রেপ্তার সম্পর্কিত খবর প্রকাশের জন্য চারটি সম্প্রচারককে জরিমানা করেছে। বিরোধীপন্থী চ্যানেলে প্রচারিত অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এসজেডসি টিভি নামের একটি স্টেশনকে ১০ দিনের জন্য সম্প্রচার বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, ইস্তাম্বুলে পরপর দুইবার মেয়র নির্বাচনে জয়ী ইমামোগলুকে এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এরদোয়ান ২০০৩ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন এবং সর্বশেষ ২০২৩ সালে দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ১৯৯০-এর দশকে এরদোয়ানও ইস্তাম্বুলের একজন জনপ্রিয় মেয়র ছিলেন। গ্রেপ্তারের আগের দিন ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় ইমামোগলুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি বাতিল করে, যেখানে বলা হয়েছিল, এটি প্রতারণায় অর্জন করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য একটি বৈধ ডিগ্রি থাকা পূর্বশর্ত। 

একরেমকে গ্রেপ্তারের পর রবিবার আদালতে তোলা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, চাঁদাবাজি, অবৈধভাবে অন্যের ব্যক্তিগত তথ্য রেকর্ড, টেন্ডারবাজি এবং অপরাধী সংগঠনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনেন। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে একরেমকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়

এর আগে ২০১৩ সালে এ রকম বড় ধরনের বিক্ষোভ হয়েছিল তুরস্কে। তখন ইস্তাম্বুলের স্থানীয় একটি পার্ক ভেঙে ফেলার প্রতিবাদে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল। এর ১০ বছর পর একরামকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আবারও রাস্তায় নামল হাজার হাজার মানুষ।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়