বিশ্বজুড়ে ব্যবহৃত চীনের তৈরি লজিস্টিক সফটওয়্যার লগইংককে মার্কিন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহে হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত এই সফটওয়্যারকে কেন্দ্র করে গোটা লজিস্টিক নেটওয়ার্কের উপর চীন নজরদারি করতে পারে—এমন শঙ্কা থেকেই বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশকে এটি ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
দেড় যুগ আগে চীনের প্রদেশে যাত্রা শুরু প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম লগইংকের। মূলত সাগর পথে পণ্য পরিবহনে ব্যবস্থাপনার তথ্য ও জাহাজ ট্র্যাকিংয়ে কাজে লাগে এ লজিস্টিক সফটওয়্যার। যা ব্যবহার করছে বিশ্বের অন্তত ৫০টি দেশ। তালিকায় আছে বাংলাদেশের নামও।
শুরু থেকেই বিনামূল্যে লগইংক সেবা দিচ্ছে বেইজিং। যদিও তা ভালোভাবে নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। তাদের ধারণা, এর মাধ্যমে তথ্যভান্ডার তৈরি করছে চীনারা। যা দিয়ে ব্যবহারকারী দেশগুলো থেকে বাড়তি সুবিধা নিচ্ছে দর কষাকষিতে।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা রিভিউ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাণিজ্যিক জাহাজে মার্কিন সামরিক পণ্যের গন্তব্য সহজেই জেনে যাচ্ছে চীন। মার্কিন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহের হুমকি হিসেবে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয় একে।
শুল্ক নিয়ে আলোচনায় বাংলাদশের লগইংক ব্যবহার দরকষাকষিতে সীমিত রাখেনি ওয়াশিংটন। আপত্তি জানিয়েছে সরাসরি। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন মার্কিন প্রশাসনের কাছে তাদের স্বার্থই আসল।
পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাশরুর রিয়াজ বলেন, চীনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া পাওয়া শুধু বাণিজ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং বিনিয়োগ, লজিস্টিক্স ও মেরিটাইম অপারেশন পর্যন্ত বিস্তৃত। এসব বিষয়ে বাংলাদেশ এখনও পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্রকে প্রভাবিত করার মতো পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব হয়তো এখনও আমরা দিতে পারিনি।
মার্কিনিদের উদ্বেগের কারণ যাই হোক, সেখান থেকে সরে আসা বাংলাদেশের জন্যে খুব সহজ নয় বলেই মনে করেন এ ব্যবসায়ী।
পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে শুধু ট্যারিফ কমিয়ে রপ্তানি বাড়ালেই চলবে না। বিষয়টি এখন অর্থনৈতিকের চেয়ে বেশি রাজনৈতিক, বিষয়টি বুঝতে আমাদের বেশ দেরি হয়ে গেছে।
শুধু মার্কিনিরাই নয়, সম্প্রতি ইইউ দেশগুলোর বন্দরে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে চীনের লগইংক। সূত্র: চ্যানেল২৪