বিএনপি নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করাকে সমর্থন করে না বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসায় জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
সালাহউদ্দিন বলেন, 'নির্বাহী আদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা আমরা সমর্থন করি না। বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিষয়টি নির্ধারিত হোক। এটা আদালত নির্ধারণ করবে। এর জন্য আইন সংশোধন করা হয়েছে। এই আইনটা আগে ছিল না। এখন গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য যেকোনো দলের বিরুদ্ধে আদালত ব্যবস্থা নিতে পারবেন। আদালত সিদ্ধান্ত নিলে নির্বাচন কমিশন মানতে বাধ্য। এই প্রক্রিয়ার বাইরে কোনো প্রক্রিয়াকে বিএনপি সমর্থন করে না।'
২০২৪ সালের নির্বাচনে ২৮ দল অংশগ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিষিদ্ধ চাইলে এই ২৮টি দলকে দোসর হিসেবে নিষিদ্ধ চাইতে হবে। তাহলে নির্বাচন কাদের নিয়ে হবে—প্রশ্ন রাখেন সালাহউদ্দিন।
তিনি বলেন, 'নিজেদের অতিরিক্ত সুবিধার জন্য কেউ আরও অনেক দল নিষিদ্ধ চাইতে পারে। তবে এখানে আওয়ামী লীগের বিষয়টি আলাদা। তারা গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী, দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংসের জন্য দায়ী। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরাই প্রথম আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি করেছিলাম।'
'গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাই। পাশাপাশি অন্য কোনো দলের বিরুদ্ধে যদি একই অভিযোগ থাকে, সেটা আদালতে উত্থাপন করা যেতে পারে। আইন আগে ছিল না, এখন সংশোধিত হয়েছে', বলেন সালাহউদ্দিন।
দ্রুত গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন না হলে দেশে একটি সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে বলেও মনে করেন বিএনপির এই নেতা। এতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট হবে এবং পতিত ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, কয়েকটি আসন পাওয়ার লোভে জাতীয় স্বার্থের বাইরে গিয়ে কারো পিআর পদ্ধতি চাওয়া ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনবে।
সার্বিক বিবেচনায় নির্বাচন পেছানোর সম্ভাবনা দেখছেন কি না, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে সালাহউদ্দিন বলেন, নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য অথবা বাধাগ্রস্ত করার জন্য যেকোনো রাজনৈতিক কৌশলকে এদেশের জনগণ প্রত্যাখান করবে। এটা আমরা আগেও বলেছি। কারণ, ভোটাধিকার প্রয়োগের দাবি আদায়, গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দেশের মানুষ ১৬-১৭ বছর সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে, রক্ত দিয়েছে এবং শহীদ হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কারের দাবি পরবর্তীতে গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। এই অধিকার তখনই প্রতিষ্ঠা হবে, যখন আমরা অবাধ-সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ পাবো, সরকার পাবো। সুতরাং যারাই এই পথে বাধা সৃষ্টি করতে চাইবে, তাদের জনগণ প্রত্যাখান করবে। এসব রাজনৈতিক কর্মসূচির জবাব দেওয়ার জন্য জনগণই বিচারক।
বিএনপি জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি মেনে নিলে অন্যরা নিম্নকক্ষে প্রচলিত পদ্ধতি মেনে নিতে পারে- এ বিষয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ সব জায়গায় পিআরের বিপক্ষে।