শিরোনাম
◈ বাতাসের মান যাচাইয়ে রাজধানীর ২৫ যায়গায় বসবে আধুনিক যন্ত্র: ডিএনসিসি   ◈ অবৈধ অভিবাসন বন্ধে বাংলাদেশকে সহযোগিতার প্রস্তাব ইতালির, আরও লোক নিতে আগ্রহী ◈ সারাদেশে ৫০০-এর বেশি ব্যক্তির একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে: এনআইডি ডিজি ◈ চিকিৎসকদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা: স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন ◈ বহুমূখি সংকটে দেশের শিল্প খাত ◈ সর্বোচ্চ লেনদেন পুঁজিবাজারে ◈ বেইলি রোডে আগুন নিয়ন্ত্রণে, ১৮ জনকে জীবিত উদ্ধার (ভিডিও) ◈ এপ্রিলে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৯.১৭ শতাংশ, খাদ্য মূল্যস্ফীতিও কমেছে ◈ দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া, ডিএমপির ১০ নির্দেশনা ◈ নিউজিল্যান্ড এ’ দলকে উড়িয়ে দিলো বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ০৫ মে, ২০২৫, ০২:১১ দুপুর
আপডেট : ০৫ মে, ২০২৫, ১০:০৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভারতে আত্মগোপনে বাহাউদ্দিন নাছিম: কলকাতায় বিলাসবহুল জীবন, পাচার করা অর্থে ব্যবসায় বিনিয়োগ

জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় আওয়ামী লীগ সরকার। এরপর দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ভারতে পালিয়ে যান। শুরুতে তিনি আশা করেছিলেন, দুই-এক মাসের মধ্যেই দেশে ফিরতে পারবেন। কিন্তু ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ়ভাবে ক্ষমতায় বসার পর তার সেই আশা ভেঙে পড়ে। ফলে বাধ্য হয়ে কলকাতায় আশ্রয় নেন তিনি। সূত্র: নিউজ২৪ টিভি

দেশের একটি গণমাধ্যমে সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সেখানে এখন বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন তিনি এবং দেশ থেকে পাচার করা অর্থে গড়ছেন সম্পদ। বিনিয়োগ করে চলেছেন নতুন নতুন ব্যবসায়।

স্থানীয় সূত্রগুলো প্রতিবেদন তৈরির প্রতিবেদককে জানিয়েছে, কলকাতার তপসিয়া সায়েন্স সিটি বাইপাসের পাশে সানফ্লাওয়ার গার্ডেন আবাসন প্রকল্পে একটি দৃষ্টিনন্দন ফ্ল্যাট কিনেছেন নাছিম। ফ্ল্যাটটির অবস্থান ১৮ সি ব্লকে এবং এর মূল্য প্রায় ১ কোটি ৩৫ লাখ রুপি।

শুধু বাসস্থানই নয়, ব্যবসার ক্ষেত্রেও সক্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ব্যবসা সম্প্রসারণ করছেন। কলকাতার একজন প্রভাবশালী আমলা, যিনি নিজেও সানফ্লাওয়ার গার্ডেনে থাকেন, তিনি জানান—নাছিম এখন সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা।

ওই আমলা জানান, প্রথমে তিনি বুঝতে পারেননি, তার প্রতিবেশী একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ। পরে ভাষার টানে এবং কথাবার্তার ভঙ্গিতে নিশ্চিত হন তিনি।

ওই সরকারি কর্মকর্তার সহায়তায় প্রতিবেদক যখন ১৮ সি ব্লকের সামনে পৌঁছান, তখন ফ্ল্যাটের দরজায় বেল টিপে জানানো হয়, নাছিম ফ্ল্যাটে নেই—তিনি পার্ক সার্কাসে গেছেন। পরে ওই কর্মকর্তার ফ্ল্যাটে বসে অপেক্ষা করতে হয়। আলাপচারিতার একপর্যায়ে তিনি জানান, তার ‘বাংলাদেশি বন্ধু’র নাম বাহাউদ্দিন নাছিম, যিনি একসময় ঢাকার সংসদ সদস্য ছিলেন এবং আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। গুগলে খোঁজ নিয়েই মিলল সেই তথ্যের সত্যতা।

ওই সরকারি কর্মকর্তা জানান, কলকাতায় পাড়ি জমানোর পর প্রথমে হায়াত হোটেলে উঠেছিলেন নাছিম। তখনও তিনি ভাবতেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার দেশে ফিরে যাবেন। কিন্তু সময় গড়াতে থাকায় এবং বাংলাদেশের নতুন সরকার ক্ষমতায় শক্ত অবস্থান নেওয়ায় তিনি বুঝতে পারেন, ফিরে যাওয়া সহজ হবে না। তাই সিদ্ধান্ত নেন এখানেই থেকে যাওয়ার এবং ‘থ্রি বিএইচকে’ বিলাসবহুল একটি ফ্ল্যাট কেনেন।

এছাড়া, কলকাতায় বিভিন্ন ব্যবসায় হাত দিয়েছেন নাছিম। জানা গেছে, সরকারদলীয় নেতা ফয়েজ আহমেদ খানকে কাজে লাগিয়ে বেশ কিছু প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছেন তিনি। ‘কলিম রিয়ালটি’ নামে একটি ফ্ল্যাট তৈরির কোম্পানিতেও বিনিয়োগ করেছেন, যেটিতে মূলত কালো টাকাই খাটানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র বলছে, নাছিম বর্তমানে টয়োটা গাড়িতে ঘুরে বেড়ান পার্ক সার্কাস, নিউটাউন ও রাজারহাট এলাকায়। তার পরিচালনায় থাকা ব্যবসাগুলো এবং ওই সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক দেখেই স্পষ্ট হয়, কলকাতায় পলাতক আওয়ামী লীগ নেতারা শুধু লুকিয়ে নেই, বরং এখানকার আমলা ও রাজনীতিবিদদের সহায়তায় তারা নিজেদের প্রভাব বিস্তার করছে।

সংবাদকর্মীর সঙ্গে দেখা করার কথা থাকলেও শেষমেশ তা হয়নি। অপেক্ষার কিছুক্ষণ পরেই ওই কর্মকর্তার মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি বুঝে ফেলেন, একজন সাংবাদিককে নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করাতে এসেছেন সেই সরকারি বন্ধু। সঙ্গে সঙ্গেই জানিয়ে দেওয়া হয়, দেখা করা সম্ভব নয়। এভাবেই শেষ হয় ভারতে আত্মগোপনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা বাহাউদ্দিন নাছিমের সাক্ষাৎপ্রচেষ্টা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়