মনজুর এ আজিজ : গত মাসে মালয়েশিয়ায় ৩৬ জন বাংলাদেশি আটক করেছিল সে দেশের পুলিশ। ভবিষ্যতে আরও বাংলাদেশি আটকের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। বুধবার (১৬ জুলাই) জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত মাসব্যাপী ফটোগ্রাফি এবং গ্রাফিতি প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, আমি মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। আমি জানিয়েছি, বিষয়টিকে আমরা খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। সন্ত্রাস বিষয়টি আমাদের সরকার খুব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে। আমরা পরিপূর্ণ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে তারা খালাস না পেলে ওই দেশের আইনে দুই থেকে সাত বছরের জেল হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, এরপরেও আরও দুইজনকে আটক করা হয়েছে এবং একই ধরনের অভিযোগে আরও কিছু গ্রেফতার হবে, সেটির ইঙ্গিত আমাদের দেওয়া হয়েছে। কারণ তারা সারাদেশেই দেখছে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে কেউ জড়িত আছে কি না।
এখন পর্যন্ত যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের আইনি সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, এটি স্পষ্ট যে, আটক সবার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি। পাঁচজনকে তারা পেয়েছে বলে মনে করে বিচারব্যবস্থার অধীনে নিয়ে এসেছে। এছাড়া মেয়াদের বেশি সময় থাকার জন্য কয়েকজনকে তারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। বাকিদের তারা তদন্ত করছে এবং শোনা যাচ্ছে, তাদের কয়েকজনকে পাঠিয়ে দেবে। আমি বলেছি, যখন পাঠিয়ে দেবেন তখন অবশ্যই আমাদের জানাবেন। এর কিছু নিয়মও আছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারি এবং তদন্ত করতে পারি। একজন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শকের নেতৃত্বে আমাদের একটি ছোট প্রতিনিধি দল সেখানে গেছেন। তিনি মালয়েশিয়ার পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
বাংলাদেশিদের ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার অনেক বেড়ে গেছে এবং এর কারণ খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছে সরকার।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, একটি কথা স্বীকার করতে আমার দ্বিধা নেই যে, এজন্য অনেকাংশে আমরা দায়ী। আমাদের যেসব কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়, সেগুলোর অনেকগুলো নির্ভরযোগ্য না। যে কারণে একজন জেনুইন মানুষও যখন কাগজপত্র জমা দেয়, তখন তারা প্রথমে ধরে নেয় যে, এটি জাল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ বিষয়ে তেমন কোন অগ্রগতি আমরা করতে পারিনি।
আমি মনে করি, যাদের জাল কাগজপত্রের কারণে ভিসা প্রত্যাখ্যান হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ। কারণ এটি একটি অপরাধ। এ বিষয়ে আমরা তেমন একটিভ না। আমি মনে করি, আমরা যদি আসলে দেখাতাম যে জাল কাগজপত্র জমা দিলে তাদেরকে আমরা শাস্তির আওতায় আনছি, তবে এই জিনিসটা আরও ভালো হতো বলে জানান তিনি।