শিরোনাম
◈ বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ২২% বৃদ্ধি, চীনের হারানো অর্ডার এলো দেশে ◈ বিরল দৃশ্যের অবতারণা, কাবা ঘরের ওপর নেমে এলো চাঁদ ◈ ফজলুর রহমানকে গালি দিয়ে স্লোগান দেওয়া সেই ফারজানা ১০ লাখ টাকা চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার (ভিডিও) ◈ মাহফুজ আলমের ওপর হামলা চেষ্টা, লন্ডন পুলিশকে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান অন্তর্বর্তী সরকারের ◈ সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই ◈ বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য চীনের ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া নিয়ে যে নতুন নির্দেশনা ◈ জনগণ রায় দিলে ৫ বছরেই দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন করা সম্ভব: জামায়াত আমীর ◈ সহকারী শিক্ষকদের জন্য নতুন নির্দেশনা, সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দিতে হবে যেসব তথ্য ◈ রাতে ঢাকাবাসীর জন্য দুঃসংবাদ দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর ◈ ডাকসুর পর জাকসুতেও শিবিরের জয়জয়কার

প্রকাশিত : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৩:৩৫ রাত
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ডাকসুতে শিবিরের জয়ে শশী থারুরের উদ্বেগ, জবাব দিলেন মেঘমল্লার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী-সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের বিশাল জয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা ও ভারতের বিশিষ্ট রাজনীতিক শশী থারুর। তবে তার এই মন্তব্যের কড়া জবাব দিয়েছেন ডাকসুর প্রতিরোধ পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী মেঘমল্লার বসু।

বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে একটি দীর্ঘ পোস্টে মেঘমল্লার সরাসরি শশী থারুরকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন— “প্রিয় মি. শশী থারুর, আমি নিশ্চিত এই বার্তাটি হয়তো আপনার কাছে পৌঁছাবে না। আর যদি পৌঁছায়ও, আপনি হয়তো এটিকে গুরুত্ব দেবেন না—মূলত আমার ইংরেজি আপনার মতো প্রাঞ্জল নয় বলেই। আমার নাম মেঘমল্লার বসু। সদ্য অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে আমি ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলাম। রাষ্ট্রীয় সংস্থার সম্পৃক্ততা, ক্রমবর্ধমান ইসলামোফ্যাসিস্ট প্রবণতা, এবং বিপুল অর্থ ও শক্তির ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও আমি প্রায় পাঁচ হাজার ভোট পেয়েছি। বলা যায়, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রছাত্রীদের প্রতিনিধিত্ব করি।

আমার ভোটারদের পক্ষ থেকে আমি বলতে চাই—বাংলাদেশে ডানপন্থী রাজনীতি নিয়ে আপনার কোনো মন্তব্য করার প্রয়োজন নেই। যদিও আপনার বিশ্লেষণ সঠিক যে, মানুষ দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের দুর্নীতিতে অতিষ্ঠ হয়ে বিকল্প খুঁজছে, কিন্তু আপনি বোঝেন না যে আপনার মন্তব্য কেবল বাংলাদেশের অতি-ডানদেরই উপকার করে। আপনি উপলব্ধি করেন না, বাংলাদেশে মানুষ আপনাকে কিভাবে দেখে। আপনার বক্তব্য আসলে জামায়াতের জন্য প্রচার হয়ে দাঁড়ায়, অথচ আপনি একটুও বিনয় দেখান না।”

তিনি আরও লেখেন, “ইসলামী ছাত্র শিবিরের জয় আপনার কাছে কেন এত উদ্বেগজনক? আপনি কি সেই একই ব্যক্তি নন, যিনি কেরালায় শবরিমালা মন্দিরে প্রবেশাধিকারের প্রশ্নে ডানপন্থী প্রচারণা চালিয়েছিলেন কেবল সিপিআইএম-কে হারানোর জন্য? যদি কোনো প্রতিবেশীকে উপদেশ দেওয়ার ইচ্ছে থাকে, তবে আগে নিজ দেশের জাতীয় নির্বাচনে হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্টদের হারান। একটা প্রবাদ আছে—যারা কাঁচের ঘরে থাকে, তারা অন্যের ঘরে পাথর ছোড়ে না। যারা তিনবার পরপর মোদি আর অমিত শাহকে হারাতে ব্যর্থ হয়েছে, তাদের অন্য দেশের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফলে মাথা ঘামানোর বিলাসিতা থাকা উচিত নয়।”

ভারতের ভূমিকাকে বাংলাদেশের জন্য ‘বিষাক্ত’ বলে আখ্যা দিয়ে মেঘমল্লার লিখেছেন, “আপনার এই মন্তব্যই আসলে শিবিরকে শক্তি জোগায়। যদি হাতে এত অবসর থাকে, আপনি আরও স্ট্যান্ড-আপ শো করতে পারেন। আপনার আগেরটা যথেষ্ট বিনোদনমূলক ছিল। আমরা আমাদের সমস্যার সমাধান নিজেরাই করব। আশা করি ভারতের জনগণও একদিন হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিস্টদের ভোটে হারাতে পারবে। আমরা বাংলাদেশে ইসলামোফ্যাসিস্টদের প্রতিরোধে প্রাণ দিতেও প্রস্তুত। প্রয়োজনে আমরা একে অপরের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করব। কিন্তু দয়া করে এই বক্তৃতা দেওয়া বন্ধ করুন। আপনার দেশ আমাদের থেকে কোনো অংশে ভালো নয়।”

এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে শশী থারুর ডাকসুতে জামায়াত-সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের সাফল্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন, “এটি হয়তো বেশিরভাগ ভারতীয়র কাছে আলোড়ন সৃষ্টি করেনি, কিন্তু এটি ভবিষ্যতের জন্য এক অশনি সংকেত। বাংলাদেশে এখন দুই প্রধান দল—আওয়ামী লীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) এবং বিএনপি—উভয়ের প্রতিই মানুষের বিরক্তি বেড়েছে। অনেকেই ‘উভয়ের সর্বনাশ হোক’ মনোভাব থেকে জামায়াতের দিকে ঝুঁকছে। তারা জামায়াতকে বেছে নিচ্ছে না ধর্মীয় উগ্রতার কারণে, বরং এজন্য যে দলটি, সঠিক হোক বা ভুল, দুই মূল ধারার দলের মতো দুর্নীতি ও কুশাসনে কলঙ্কিত নয়।”

থারুর আরও প্রশ্ন তোলেন, “এই প্রবণতা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে কীভাবে প্রতিফলিত হবে? ভারতকে কি তখন প্রতিবেশী হিসেবে জামায়াত সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে?”

বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির সাম্প্রতিক এই ফলাফল নিয়ে দুই দেশের এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের পাল্টাপাল্টি মন্তব্য নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়