শিরোনাম
◈ পেলেকে ছাড়িয়ে গে‌লেন, রেকর্ড ১৮ কোটি ২৬ লাখ টাকায় বিক্রি মেসির কার্ড ◈ মন্ত্রীপাড়া থেকে গ্রেফতার সেই বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতমার্কিন নাগরিক এনায়েত রিমান্ডে ◈ কোটিপতি তানিয়া বিয়ে করতে চান বেকার ছেলে, স্বামীকে বসিয়ে খাওয়াবেন সারাজীবন ◈ কাতার একা নয়, তাদের পাশে আছে পুরো আরব ও ইসলামি বিশ্ব: আরব লীগ ◈ ওসি নিয়োগে নতুন নীতিমালা: যোগ্যতা, স্বচ্ছতা ও সীমাবদ্ধতা নির্ধারণ ◈ পুলিশে ফের বড় রদবদল ◈ সীমানা পুনর্বিন্যাসে ভাঙ্গায় সহিংসতা: থানাঘেরাও, গাড়ি ভাঙচুর ◈ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা ◈ প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে কীভাবে ভোট দেবেন, জানালেন ইসি ◈ তারুণ্যের শক্তি আমাদের জাতির চালিকাশক্তি : প্রধান উপদেষ্টা

প্রকাশিত : ০১ জুলাই, ২০২৫, ০৪:১৩ দুপুর
আপডেট : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে যা বললেন জুলকারনাইন সায়ের

অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের বলেছেন, প্রবাসে বসে, স্বৈরশাসকের পুত্র আমাদেরকে শেখান গণতন্ত্র আর জনগণের পাশে দাঁড়ানো কীভাবে করতে হয়। তারা জুলাই ২০২৪ কে ঘৃণা করে—কারণ তখনই জনগণ তাদের শাসনের ভিত্তি কাঁপিয়ে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিল।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এসব কথা বলেন সায়ের।

সজীব ওয়াজেদ জয় ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকে দাঙ্গা বলতে পারেন তবে আমরা একে প্রতিরোধ বলি, যোগ তরেন তিনি।

ফেসবুক পোস্টে জুলকারনাইন বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের গণঅভ্যুত্থানকে “জুলাই দাঙ্গা” বলে আখ্যা দেওয়া সজীব ওয়াজেদ জয়ের সাম্প্রতিক বক্তব্য শুধু ইতিহাস বিকৃতি নয়, এটি একটি জাতির সমষ্টিবদ্ধ স্মৃতিকে পরিকল্পিতভাবে মুছে ফেলার ব্যর্থ অপচেষ্টা। তার কথাগুলো কৃত্রিম সহানুভূতি এবং রাজনৈতিক প্রতারণায় ভরা। তিনি যাকে “সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়” বলছেন, তা আসলে ছিল বাংলাদেশের মানুষের সাহস, মর্যাদা, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের এক দীপ্ত প্রহর।

তিনি আরো বলেন, যে আন্দোলনে ছাত্র, শ্রমিক, পেশাজীবী, সাধারণ মানুষ একত্রিত হয়েছিল—সেই গণঅভ্যুত্থানকে “দাঙ্গা” বলা ইতিহাসের এক নিষ্ঠুর অপমান।

ওই আন্দোলনে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে প্রকাশ্যে হত্যা করা হয়। শত শত আন্দোলনকারী তরুণ শিক্ষার্থীরা এখনো চোখে দেখে না, কারো পা নেই। কারো হাত নেই। আর এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে জয় “সহানুভূতি” আর “ক্ষমা”র গল্প শোনান।
কোন প্যারালাল পৃথিবীতে বাস করেন এই পলাতক প্রধানমন্ত্রীর পুত্র।
সজীব ওয়াজেদ জয় যেটা করছেন তা দেশবাসীকে 'একসঙ্গে' করা  নয়, এটি একধরনের ছল না বলে মন্তব্য করেছেন জুলাকারনাইন।

তিনি বলেন,  তিনি (জয়) প্রতিবাদকে ভুল বলে আখ্যা দিয়েছেন, যেন আন্দোলনকারীরা নির্বোধ বা বিভ্রান্ত। এর মাধ্যমে তিনি রাষ্ট্রের বর্বরতাকে ধুয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, আর যারা গণতন্ত্র চেয়েছিল তাদের “বিদেশি অর্থায়ন” ও “চরমপন্থা”র এজেন্ডা হিসেবে চিত্রিত করছেন। এই ভাষা পৃথিবীর মানুষ বহুবার শুনেছে— স্বৈরশাসকদের ও ফ্যাসিবাদীদের মুখে।

আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আসলে এটি সেই দল—আওয়ামী লীগ, যারা তিন-তিনটি কারচুপির নির্বাচন করেছে। এমনকি স্বাধীনতার পূর্বে পাকিস্তানের সামরিক শাসকরাও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন করেছিল, আওয়ামী লীগ যোগ‍্যতার বলেই ল্যান্ড স্লাইড ভিক্টরি পেয়েছিল, চুরি তাদের করতে হয়নি। কিন্তু গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, মিডিয়াকে স্তব্ধ করেছে, বিরোধীদের গুম করেছে এবং ‘আয়নাঘর’ নামের গোপন নির্যাতনকেন্দ্র পরিচালনা করেছে—যা বাংলাদেশে একটি গোপন গুয়ানতানাম বে হয়ে উঠেছিল।

তিনি বলেন, এখন প্রবাসে বসে স্বৈরশাসকের পুত্র আমাদেরকে শেখান গণতন্ত্র আর জনগণের পাশে দাঁড়ানো কীভাবে করতে হয়। আমরা অবাক হইনি। কারণ এটি ইচ্ছাকৃত অস্বীকার। তারা জুলাই ২০২৪-কে ঘৃণা করে— কারণ তখনই জনগণ তাদের শাসনের ভিত্তি কাঁপিয়ে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিল।

জুলকারনাইন বলেন, কিন্তু বাংলাদেশ ভুলবে না। বাংলাদেশ জুলাইকে মনে রাখবে সাহসিকতার মাস হিসেবে—যখন নিঃশস্ত্র মানুষ অস্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর ভয়কে জয় করেছিল, যখন সত্য মিথ্যার চেয়েও উচ্চকণ্ঠে উঠেছিল। জয় একে দাঙ্গা বলতে পারেন। আমরা একে প্রতিরোধ বলি।

সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্দেশ্যে জুলকারনাইন বলেন, জয়কে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষের আর কোনো 'উপলব্ধির' দরকার নেই। জুলাই আমাদের উপলব্ধির শ্রেষ্ঠ সময়। এখন আমাদের দরকার বিচার—সেই সব হত্যাকারী, নির্বাচন চোর আর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের যেন আর কোনো দিন কেউ নিজের জনগণের প্রতি এমন অত্যাচারের স্ট্রিম রোল চালানোর সাহস না পায়। জুলাই আমাদের গর্বের প্রতীক—অনুতাপের নয় বরং বিদ্রোহের।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়