আল্লাহ তাআলা মানুষকে বিভিন্ন সময়ে অসাধারণ ঘটনা প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের মনে আস্থা এবং পরকালের প্রতি বিশ্বাস জন্মান। এগুলো মানুষকে সঠিক পথে চলার শিক্ষা দেয়। বনি ইসরায়েলের এক নওজোয়ান যুবকের সঙ্গে ঘটেছে এমন একটি অলৌকিক ঘটনা যা আমাদের মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া এবং নেক আমল করার গুরুত্ব শিখায়।
বনি ইসরায়েলের এক যুবক মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে, তার মা আল্লাহর কাছে একটি মানত করলেন। তিনি বললেন, যদি তার সন্তান সুস্থ হয়ে যায়, তবে সে অবশ্যই দুনিয়া থেকে সাত দিনের জন্য বেরিয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা তার ছেলেকে সুস্থ্য করলেন, কিন্তু মা তখনও মানতটি পূর্ণ করতে পারেননি।
এক রাতে মা স্বপ্নে দেখলেন, একজন তাকে বললেন, তুমি তোমার মানত পূর্ণ করো, যাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার প্রতি কঠিন বিপদ না আসে। পরদিন সকালবেলা তিনি তার সন্তানকে ডাকলেন এবং স্বপ্নের ঘটনা সম্পর্কে জানালেন। তিনি তার সন্তানের জন্য একটি কবর খননের এবং সেখানে দাফনের নির্দেশ দিলেন।
যুবক তার মায়ের নির্দেশ অনুসারে কাজ করলেন। যখন মা কবরের মধ্যে প্রবেশ করলেন, তিনি আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন, “হে আমার প্রভু! আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, আমাকে আমার সন্তানের মাধ্যমে হেফাজত করুন।” এরপর যুবক কবরের ওপর মাটি দিলেন।
হঠাৎ সে একটি উজ্জ্বল আলো এবং ছোট একটি জানালা দেখতে পেলেন। সেই গর্তের মাধ্যমে একটি বাগান দেখা গেল, যেখানে দুইজন মহিলাকে বসে থাকতে দেখল। তারা তার কাছে বলল, “আপনি আমাদের কাছে আসুন।
যুবক সেখানে গিয়ে তাদের সঙ্গে বসলেন। মহিলারা তার সালামের জবাব দিলেন না। পরে মহিলারা বললেন, “সালাম একটি ইবাদত, আমাদের ইবাদত আদায়ের অনুমতি নেই।
যুবক দেখল, মহিলাদের মধ্যে একজন পাখিকে দু’ডানা দিয়ে বাতাস করছিল, আর অপরজনের মাথায় পাখি ঠোকর খাচ্ছিল। প্রথম মহিলা বললেন, আমি নেক এবং অনুগত স্ত্রী ছিলাম, তাই আল্লাহ আমাকে এ মর্যাদা দিয়েছেন। দ্বিতীয় মহিলা বললেন, “আমি সতী স্ত্রী হলেও স্বামীর প্রতি অবাধ্য ছিলাম। আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিচ্ছেন, তবে আমার নেক আমলের কারণে কবরকে বাগিচা বানিয়েছেন। তুমি যখন দুনিয়ায় ফিরে যাবে, আমার স্বামীর কাছে আমার জন্য সুপারিশ করবে।
সাত দিন পর যুবককে বলা হলো, তিনি আবার কবর থেকে বেরিয়ে আসুন। যুবক তার পুত্রকে কবর থেকে বের করলেন এবং বাড়িতে নিয়ে গেলেন। এর পর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ল। মহিলার স্বামী এসে তাকে মাফ করলেন। পরে স্বপ্নের মহিলার সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো, যিনি বললেন, তোমার জন্য আল্লাহ আমাকে শাস্তি থেকে মুক্তি দিয়েছেন। আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।
শিক্ষা: এই ঘটনা থেকে আমরা শিখতে পারি, মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধা, তাদের সেবা এবং নেক আমল কত গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমরা মা-বাবার সাথে ভালো ব্যবহার করি, আল্লাহ খুশি হবেন এবং আমাদের জন্য জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা নিশ্চিত করবেন। এছাড়াও, স্বামীর প্রতি অনুগত থাকা, ইবাদত ও নেক আমল পালন করাও আমাদের আখিরাতের জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। উৎস: সময়নিউজ টিভি।