শিরোনাম
◈ জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ ফিলিস্তিনির স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আরো জোরালো হচ্ছে  ◈ নারী বিশ্বকাপ খেলতে শ্রীলঙ্কায় রওনা হ‌লো বাংলাদেশ দল ◈ এ‌শিয়া কা‌পের সুপার ফো‌রে পরপর দুইদিনে ২ ম্যাচ নিয়ে টাইগার কোচ সিমন্সের অসন্তোষ প্রকাশ ◈ কক্সবাজার সৈকতের অবৈধ দোকান উচ্ছেদ ও লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ ◈ সরকারের গণমাধ্যমের ওপর কোনো হস্তক্ষেপ নেই: তথ্য উপদেষ্টা ◈ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সহজে নতুন উদ্যোগ: সীমা দ্বিগুণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক ◈ মেঝেতে ছেলে-মেয়ের লাশ, বিছানায় মায়ের ◈ এনসিপির মার্কা শাপলাই হতে হবে, অন্য কোনো অপশন নেই: সারজিস আলম ◈ নিউইয়র্কের বিমানবন্দরের ঘটনায় প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৬:৫৭ বিকাল
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৭:৪২ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোহ কুড দ্বীপ: থাইল্যান্ডের এক গোপন স্বর্গ

আজকের পত্রিকার প্রতিবেদন: ভ্রমণপিয়াসিদের কাছে অজানাকে জানতে চাওয়ার একটা তীব্র ইচ্ছা কাজ করে। এমন কোথাও যাওয়ার নেশা কাজ করে, যেখানে আগে কেউ যায়নি বা খুব কম মানুষ গেছে। ভ্রমণের জন্য থাইল্যান্ড জনপ্রিয় একটি গন্তব্য। সবুজে ঘেরা প্রকৃতি, স্বর্গীয় সৈকত এবং জিবে জল আনা খাবারের জন্য বিশ্বজুড়ে এর খ্যাতি বেড়েই চলেছে। অনেক ভিড়ের মধ্যেও একটু নির্জনতা যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য থাইল্যান্ডের এক নতুন ঠিকানা হতে পারে কোহ কুড দ্বীপ। থাইল্যান্ডের এই গোপন স্বর্গে একবার ঘুরে এলে আপনি হয়তো বারবার ফিরে যেতে চাইবেন। ২০১৪ সালে ‘দ্য গার্ডিয়ান’ কোহ কুডকে আখ্যা দিয়েছিল ‘থাইল্যান্ডের শেষ অক্ষত দ্বীপ’ হিসেবে।

গোপন দ্বীপ কোহ কুড

থাইল্যান্ডের চতুর্থ বৃহত্তম দ্বীপ কোহ কুড। এটি ব্যাংককের দক্ষিণ-পূর্বে কম্বোডিয়া সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত। এই বুনো ও নির্জন দ্বীপ এখনো অতিরিক্ত পর্যটনের প্রভাব থেকে অনেকটা মুক্ত। ঘন জঙ্গল ও ঢেউখেলানো পাহাড়ঘেরা শান্ত সমাহিত দ্বীপ এটি। এর স্বচ্ছ পানির ধারে বিস্তৃত সাদা বালুর সৈকত যেকোনো পর্যটকের মন জয় করে নিতে সক্ষম। যাঁরা ফুকেট বা কোহ সামুইয়ের ভিড় থেকে দূরে কিছু সময় কাটাতে চান, তাঁদের জন্য এটি আদর্শ এক গন্তব্য। নারকেলগাছের ছায়া, সাদা বালুর সৈকত, গরম ও স্বচ্ছ সমুদ্রের পানি, বানর ও রঙিন পাখি, গর্জন করা ঝরে পড়া ঝরনা—সব মিলিয়ে এক স্বপ্নের জায়গা। এখানে গাড়ির চলাচল প্রায় নেই, তাই স্কুটারই ভরসা।

যা করা যায় কোহ কুডে

কোহ কুড জায়গাটা বেশ ছোট। এখানে গাড়ি প্রায় চলে না বলে ভিড় অনেক কম। দ্বীপটির অনেক রিসোর্ট মূল রাস্তা থেকে ভেতরে বলে কাঁচা রাস্তা ধরে যেতে হয়। আপনি রিসোর্ট থেকে বের হয়ে হেঁটে মূল সড়কে গেলে আশপাশে দোকান, বার বা রেস্টুরেন্ট না-ও পেতে পারেন। দ্বীপে পিকআপ, ট্রাক ও ট্যাক্সি পাওয়া যায় খুব কম। এগুলোতে দ্বীপে ঘোরা যায়। যেসব পর্যটক স্কুটার ভাড়া নেন না, তাঁদের নিয়ে সৈকত, ঝরনা ইত্যাদি দেখাতে নিয়ে যায় এরা। দ্বীপটিতে স্কুবা ডাইভিং, স্নরকেলিং, হাইকিং, সাইক্লিং, ট্রেইল রানিং ও কায়াকিং করা যায়। তবে হ্যাঁ, থাইল্যান্ডের অন্যান্য জনপ্রিয় দ্বীপের মতো সহজলভ্য ও সুবিধা এখানে মিলবে না।

বিখ্যাত সৈকতগুলো

তা ফো বিচ: বিশাল নারকেলগাছের ছায়ায় আরামদায়ক বিশ্রামের জন্য বিখ্যাত।

আও নই বিচ: জেটির ওপর সূর্যাস্ত দেখার জন্য জনপ্রিয় এটি। দ্বীপের অন্যতম সুন্দর দৃশ্য এখান থেকে দেখা যায়।

আও প্রাও বিচ: একই নামে একটি রিসোর্টও আছে এখানে।

খলং হান ও খলং ইয়াই কি বিচ: দ্বীপটির উত্তর প্রান্তে অবস্থিত এই সৈকত।

অ্যাওয়ে বিচ: দ্বীপের দীর্ঘ সাদা বালুর সৈকত।

‍ঝরনা দেখতে চাইলে যেখানে যেতে পারেন

কোহ কুডের গভীর জঙ্গলে রয়েছে দুটি বিখ্যাত ঝরনা। সেগুলোর নিচের প্রাকৃতিক পুলে সাঁতার কাটা যায়। ঝরনা দুটি হলো—

খলং ইয়াই কি ফলস: প্রায় ১৫ মিটার উচ্চতা থেকে এখানে পানি পড়ে। এই ঝরনার নিচের জায়গাটি সাঁতারের জন্য আদর্শ।

খলং চাও ফলস: দ্বীপের দর্শনীয় ও জনপ্রিয় ঝরনা এটি। ৩০ মিটার উচ্চতা থেকে পানি পড়ে এই ঝরনা থেকে।

এ ছাড়া খলং নাম কেও নামে ছোট আরেকটি ঝরনার পথে আছে দুটি বহু পুরোনো গাছ। এসব গাছের একটির বয়স প্রায় ৭০০ বছর। এর নাম চাই। এর বিশাল দৃশ্যমান মূল দেখে মুগ্ধ হতে হয়। গাছের গায়ে জড়ানো কমলা কাপড় একে আলাদাভাবে চিনিয়ে দেয়। অন্য গাছটি আনুমানিক ৫০০ বছরের পুরোনো। এর নাম মাকা গাছ।

স্থানীয় সংস্কৃতি ও খাবার

দ্বীপের পাশের জেলেপল্লি ঘুরে দেখতে ভুলবেন না। সেখানে স্থানীয় থাই সি ফুডের রেস্তোরাঁগুলোতে মেলে তাজা ও সুস্বাদু থাই খাবার; যা আপনার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ করে তুলবে।

সৈকত ও থাকার জায়গা

কোহ কুড দ্বীপের পশ্চিম ও দক্ষিণ উপকূলে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে মূল সৈকতগুলো। বর্তমানে সেখানে ৫০টির বেশি থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। সুপার লাক্সারি ছয় তারকা রিসোর্ট থেকে শুরু করে মাছ ধরার গ্রামে স্থানীয় হোমস্টেও আছে। এর জনপ্রিয় এলাকা হলো খলং চাও সৈকত ও নদীর মোহনার আশপাশ। সেখানে নদীর ধারে মাঝারি দামের স্থানীয় বাংলো, মিনি-মার্ট, সস্তা রেস্টুরেন্ট—সবই আছে।

যাওয়ার আদর্শ সময়

ভ্রমণের সময়টাই ঠিক করে দেবে, আপনি দ্বীপে কোন ধরনের অভিজ্ঞতা পাবেন। আবহাওয়া, সাগরের অবস্থা, ভিড় ও খরচ—সবই সময় অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি দ্বীপটিতে যাওয়ার আদর্শ সময়। সে সময় থাকে প্রচুর রোদ আর কম আর্দ্রতা। সমুদ্র থাকে শান্ত ও স্বচ্ছ। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারিতে হোক কুড দ্বীপের রাত থাকে কিছুটা ঠান্ডা। সাঁতার, স্নরকেলিং, সৈকতে সময় কাটানোর জন্য আদর্শ সময় এটিই। এ সময় দ্বীপটিতে সবকিছুর দাম থাকে বেশি এবং রিসোর্টগুলো থাকে পূর্ণ। তাই আগেভাগে বুকিং জরুরি।

মার্চ গরম ও শুষ্ক সময়। এপ্রিলে সেখানে থাকে গ্রীষ্মকাল, প্রচণ্ড গরম। তাপমাত্রা প্রায়ই ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়। মে মাসের শেষে শুরু হয় বর্ষাকাল। তখন হালকা হলেও ঘন ঘন বৃষ্টি হয়। এই সময়ের একটা ভালো দিক হলো, পর্যটকের সংখ্যা থাকে কম। প্রকৃতি থাকে সবুজ ও সতেজ। আবাসনে পাওয়া যায় ছাড়। এ সময় থাই নববর্ষ ‘সংক্রান’ উপলক্ষে অনেক স্থানীয় পর্যটক দ্বীপটিতে বেড়াতে যায়। জুন থেকে মধ্য অক্টোবর পর্যন্ত চলে ভারী বর্ষাকাল। এ সময় প্রায়ই সেবা বিঘ্নিত হয় আবহাওয়ার কারণে। তখন কিছু সৈকতে সাঁতার ঝুঁকিপূর্ণ থাকে।

সূত্র: ইএন ভোলস, খোহ চ্যাং ট্রাভেল গাইড

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়