সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হাতুর রিসার্চ সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে ইসরায়েলের জন্য ঘোরতর বিপদের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরব ও মুসলিম প্রধান দেশগুলো যদি একযোগে ইসরায়েলের জন্য আকাশপথে অবরোধ আরোপ করে, তবে ইসরায়েলের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তাগত প্রভাব মারাত্মক হতে পারে।
অবরোধের কারণ:
৯ সেপ্টেম্বর কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো হামলায় ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনাটি সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়ার অনুঘটক হতে পারে। এই হামলার জবাবে কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনার জন্য ৫৭ সদস্যের ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও আরব লীগ দোহায় জরুরি বৈঠকে বসেছে।
অর্থনৈতিক প্রভাব:
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আকাশপথে অবরোধ আরোপ করা হলে ইসরায়েলের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) সর্বোচ্চ ৫.৭ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে, যা দেশটিকে ভয়াবহ মন্দার মুখে ঠেলে দেবে।
বিকল্প রুটে যেতে হলে প্রতিটি ফ্লাইটের সময় চার থেকে ছয় ঘণ্টা বাড়বে, যা প্রতি ফ্লাইটে ৩০০ থেকে ৬০০০ ডলার পর্যন্ত খরচ বাড়াতে পারে। ইসরায়েলের এয়ারলাইন সংস্থা এলআলের আয় ৬০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।
পর্যটন শিল্প ধসে পড়তে পারে এবং হীরার মতো অতি উচ্চমূল্যের ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মতো সংবেদনশীল পণ্যের রপ্তানি ব্যাহত হতে পারে।
ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব:
আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর একযোগে আকাশপথ অবরোধে নতুন আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামো তৈরি হবে। এতে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র তীব্র কূটনৈতিক সংকটে পড়বে এবং ইসরায়েলকে রক্ষা করা ও আরব দেশগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব বজায় রাখার মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বাধ্য হবে।
তুরস্ক, পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া যদি এই অবরোধে যোগ দেয়, তবে ইসরায়েল এশিয়া ও আফ্রিকার প্রবৃদ্ধিশীল বাজারগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হারাবে। এই কঠোর পদক্ষেপ গোটা মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনীতির চালচিত্র মৌলিকভাবে বদলে দিতে পারে।
এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের জন্য আকাশপথে অবরোধ আরোপ করা হলে তেলাবিবের অর্থনীতি ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং এর ভূ-রাজনৈতিক প্রভাবও সুদূরপ্রসারী হবে।