শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৬:৫০ বিকাল
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কর ফাঁকি স্বীকার করে পদত্যাগ ব্রিটেনের উপ–প্রধানমন্ত্রীর, স্টারমারের জন্য বড় ধাক্কা

পদত্যাগ করেছেন ব্রিটেনের উপ-প্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেইনার। তাঁকে কর ফাঁকির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। রেইনারের বিরুদ্ধে যখন অভিযোগ আনা হয়, তখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার তাঁকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিলেন। কিন্তু আজ শুক্রবার নিজের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করে পদত্যাগ করেন রেইনার। দেশটির একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশনে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তিনি একজন মন্ত্রীর নৈতিক মানদণ্ড পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ঘটনা প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের জন্য এক নতুন ধাক্কা। ৪৫ বছর বয়সী রেইনার স্টারমারের দল থেকে পদত্যাগ করা অষ্টম এবং সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী।

অ্যাঞ্জেলা রেইনার স্টারমারকে পাঠানো পদত্যাগপত্রে বলেছেন, ‘নতুন বাড়ি কেনার পর কর সংক্রান্ত বিষয়ে আমি কোনো বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেইনি। এ জন্য আমি অনুতপ্ত... আমি এই ভুলের সম্পূর্ণ দায় নিচ্ছি।’

পদত্যাগপত্রের উত্তরে স্টারমার বলেন, সরকার থেকে রেইনারের এমন বিদায়ে তিনি অত্যন্ত দুঃখিত, তবে তিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সাম্প্রতিক জরিপে লেবার পার্টি পপুলিস্ট রিফর্ম ইউকে দলের পেছনে পড়ে গেছে। এর ফলে স্টারমারের নেতৃত্ব ও দলের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনে আরও চ্যালেঞ্জ তৈরি হলো। আগে থেকেই সমালোচকেরা লেবারের পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে দাতাদের কাছ থেকে দামি পোশাক ও কনসার্টের টিকিট নেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন।

উপ-প্রধানমন্ত্রীর মতো একজন নেত্রীকে হারানো স্টারমারের জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর। কারণ শ্রমজীবী পরিবারের কিশোরী মা থেকে রাজনীতির শীর্ষ পর্যায়ে উঠে আসা রেইনার লেবার পার্টির ডানপন্থী ও বামপন্থী শাখার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করেছিলেন। স্টারমারের চেয়ে তাঁর জনপ্রিয়তাও বেশি ছিল।

কখনো কখনো স্টারমারের সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হলেও, রেইনার বুধবার নিজেই মন্ত্রিসভার নীতিশাস্ত্র বিষয়ক স্বাধীন উপদেষ্টার কাছে কর-ফাঁকির বিষয়টি তদন্তের অনুরোধ করেছিলেন।

প্রায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, আজীবন প্রতিবন্ধকতায় ভোগা ছেলেকে সহায়তার জন্য একটি ট্রাস্ট তৈরি করেছিলেন। সেই ট্রাস্টের কাছেই তিনি পারিবারিক বাড়ির শেয়ার বিক্রি করে ইংল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় সমুদ্রতীরবর্তী শহর হোভে একটি ফ্ল্যাট কেনেন। তিনি ভেবেছিলেন দ্বিতীয় বাড়ি কেনার জন্য যে বাড়তি কর দিতে হয়, তা তাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

কিন্তু পরে নতুন আইনি পরামর্শ নিয়ে তিনি স্বীকার করেন, এটি তাঁর ভুল ছিল। এখন তিনি বকেয়া কর মেটানোর প্রক্রিয়ায় আছেন।

রেইনারসহ মোট আটজন মন্ত্রী–প্রতিমন্ত্রী শুরুতেই স্টারমারের সরকার থেকে পদত্যাগ করেছেন। তাঁদের মধ্যে পাঁচজন নানা ধরনের অনিয়মে জড়িয়ে পদ ছাড়েন। ১৯৭৯ সালের পর থেকে কোনো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের শুরুতে এত বেশি মন্ত্রী হারাননি। এ সংখ্যাটি বরিস জনসনের চেয়েও বেশি, যিনি ‘কোভিড লকডাউন ভাঙা পার্টি কেলেঙ্কারি’তে জড়িয়ে পড়েছিলেন।

এই ঘটনার পর বছরের শেষ দিকে বাজেট প্রণয়নের মতো কঠিন কাজের আগে স্টারমারকে আরও দুর্বল মনে করা হচ্ছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, নতুন বাজেটে অতিরিক্ত কর বাড়ানোর প্রস্তাব আসতে পারে। অন্যদিকে নাইজেল ফারাজের রিফর্ম ইউকে দলের উত্থানও তাঁর জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়