এল আর বাদল : চিনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করে ফেলল আমেরিকা। নিজেই সেই খবর জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, চিনের পরেই হয়তো ভারতের সঙ্গে ‘খুব বড়’ বাণিজ্যচুক্তি করতে চলেছেন তাঁরা। ট্রাম্প এ-ও জানিয়েছেন যে, সব দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করার পথে হাঁটবে না ওয়াশিংটন। -- আনন্দবাজার
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) হোয়াইট হাউসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প জানান, বুধবার চিনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করেছে আমেরিকা। তবে এই চুক্তির বিষয়ে সবিস্তার কিছু জানাননি তিনি। চিনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করার পরেই ট্রাম্পের মুখে শোনা যায় ভারতের কথা। বলেন, আমরা সবে মাত্র চিনের সঙ্গে (বাণিজ্য) চুক্তি করলাম। সবার সঙ্গে আমরা চুক্তি করব না। তবে কিছু দারুণ চুক্তি হবে। যেমন পরেরটাই হয়তো হবে ভারতের সঙ্গে। খুব বড় চুক্তি হবে সেটা।
অনেক দেশের সঙ্গে আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি করছে না, সে কথা জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, আমরা কয়েক জন (কয়েকটি দেশকে)-কে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি। বলেছি অনেক ধন্যবাদ। তোমায় ২৫, ৩৫ কিংবা ৪৫ শতাংশ (শুল্ক) দিতে হবে। এটাই (বাণিজ্যচুক্তি করার) সহজ উপায়। ট্রাম্প এ-ও জানান যে, তাঁর প্রশাসনের আধিকারিকেরা চান আরও বেশি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করতে। কিন্তু তিনি তেমনটা চান না।
প্রসঙ্গত, মে মাসেই আমেরিকার বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছিলেন, খুব শীঘ্রই ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যিক বোঝাপড়া চূড়ান্ত হবে। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছিল, দুই দেশই নিজেদের বাণিজ্যিক স্বার্থের কথা মাথায় রেখে এই চুক্তি করতে চলেছে। গত ১০ জুন দেশের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেছিলেন, “দুই দেশের অর্থনীতিই লাভবান হয়, এমন দিকটি মাথায় রেখে স্বচ্ছ বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা চলছে।
চিন-সহ একাধিক দেশের উপর পারস্পরিক শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। অর্থাৎ যে দেশ আমেরিকা থেকে রফতানি হওয়া পণ্যে যত পরিমাণ শুল্ক চাপায় সমপরিমাণ শুল্ক সেই দেশ থেকে মার্কিন মুলুকে আমদানি হওয়া পণ্যে চাপানোর সিদ্ধান্ত নেয় ট্রাম্প প্রশাসন। ভারতের পণ্যে শুল্কের পরিমাণ ছিল ২৬ শতাংশ। ৯ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তার আগে হোয়াইট হাউস এই বর্ধিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করে দেয়।
কিন্তু স্থগিতাদেশ সব দেশের ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হলেও ব্যতিক্রম ছিল চিন। পাল্টা চিনের পণ্যে শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন ট্রাম্প। চিনা পণ্যের উপর শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করে দেওয়া হয়। পাল্টা চিন ১২৫ শতাংশ শুল্ক চাপায় মার্কিন পণ্যে। তবে এর মধ্যেই চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সমঝোতা করতে জুনে লন্ডনের ল্যাঙ্কাস্টার হাউসে আমেরিকা-চিন প্রতিনিধিস্তরের বৈঠক হয়।
অন্য দিকে, ট্রাম্প একাধিক বার ট্রাম্প দাবি করেছেন, ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত তিনিই থামিয়েছেন। বুধবার ট্রাম্প জানান, তিনি নাকি দুই দেশকেই জানিয়েছিলেন, সংঘাত না-থামালে দিল্লি এবং ইসলামাবাদের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করবে না আমেরিকা। তার পরেই দুই দেশ সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় বলে দাবি ট্রাম্পের। চিনের পরে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করার ইঙ্গিত দিলেও পাকিস্তান প্রসঙ্গ এখনও পর্যন্ত উত্থাপন করেননি ট্রাম্প।