ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা বিদ্বেষ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ।
সোমবার দেশটির রাজধানী বাকুতে অনুষ্ঠিত ‘Islamophobia in Focus: Unveiling Bias, Shattering Stigmas’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পাঠানো এক লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ইসলামফোবিয়া এখন একটি বৈশ্বিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুসলিম বিশ্ব এই অন্যায় ও বিপজ্জনক প্রবণতার বিরুদ্ধে একযোগে কণ্ঠ তুলতে হবে।’
আলিয়েভ বলেন, ‘ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ, ঘৃণা ও অসহিষ্ণুতা দিন দিন বাড়ছে এবং তা আজ আর বিচ্ছিন্ন নয়, বরং বেশ ‘সুনির্দিষ্ট ও কাঠামোবদ্ধ’।’
প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ইসলামফোবিয়া আজ কিছু দেশে কার্যত রাষ্ট্রীয় নীতিতে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে যেসব দেশের ঔপনিবেশিক অতীত আছে, সেখানে মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা, শিক্ষা, আবাসন ও কর্মসংস্থানের অধিকার ক্রমাগতভাবে খর্ব করা হচ্ছে—সবই ধর্মনিরপেক্ষতার ছদ্মাবেশে।’
আজারবাইজান প্রেসিডেন্ট স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, ইসলামের ওপর আক্রমণ ও মুসলমানদের হেয় প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টা স্বাধীন মত প্রকাশের নামে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
তিনি অভিযোগ করেন, কিছু রাষ্ট্র ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী এই ইসলামবিদ্বেষকে উসকে দিচ্ছে। ‘চরমপন্থী দল ও ডানপন্থী রাজনীতিকেরা ইসলাম ও মুসলমানদের পশ্চিমা মূল্যবোধের জন্য হুমকি হিসেবে তুলে ধরে জনমত পেতে চাইছে,’ বলেন তিনি।
আলিয়েভ বলেন, ‘কিছু গণমাধ্যম ইসলামকে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে গুলিয়ে ফেলে। তারা ইসলামকে একটি হুমকি হিসেবে তুলে ধরে নেতিবাচক জনমত তৈরি করছে। মুসলমানদের প্রতি সমাজে ভয় ও অবিশ্বাস ছড়িয়ে দিচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ও ইউরোপ কাউন্সিলের পার্লামেন্টারি অ্যাসেম্বলি ইসলামফোবিয়া বিস্তারে পরোক্ষভাবে ভূমিকা রাখছে—তাদের পক্ষপাতমূলক ও দ্বিমুখী নীতির কারণে।
বক্তব্যের শেষ ভাগে প্রেসিডেন্ট আলিয়েভ ইসলাম সম্পর্কে বলেন, ‘ইসলাম হলো শান্তি, সংহতি ও করুণার ধর্ম। যতোই অপপ্রচার চালানো হোক, ইসলাম এখনও ন্যায়বিচার, মানবিকতা ও উচ্চ নৈতিক মূল্যবোধের প্রতীক। এটি কোটি কোটি মানুষের জন্য নৈতিক দিকনির্দেশনা হয়ে রয়েছে।’
সূত্র: আনাদোলু