পার্সটুডে- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তিনটি আরব দেশ সফর করেছেন। এ সময় বড় বড় চুক্তি সই হয়েছে, ট্রাম্প যেভাবে চেয়েছেন ঠিক সেভাবেই সব অর্জন করেছেন। কিন্তু আরব অঞ্চল গাজা তথা ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বন্ধ করতে এসব আরব দেশের নেতাদের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানানো হয় নি। এ কারণে আরব নেতাদের প্রতি আরব জনগণ ক্ষুব্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মিশরের কয়েকজন বিশ্লেষক।
পার্সটুডে'র তথ্য বলছে, মিশরের প্রখ্যাত রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও অধ্যাপক ইসমাইল সাবরি বুধবার বলেছেন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন তার সাম্প্রতিক বিবৃতিতে বলেছেন কেবল মার্কিন প্রেসিডেন্ট গাজা যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য ইসরাইলের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন।
ম্যাক্রনের বক্তব্য তুলে ধরার পর ইসমাইল সাবরি বলেন, আরব নেতারা গাজা পরিস্থিতি সম্পর্কে ভালো করেই জানেন। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যেমন ট্রাম্পকে সিরিয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে রাজি করিয়েছেন, ঠিক তেমনি তিনি পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের অন্য নেতাদের সাথে মিলে ট্রাম্পকে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং মানবিক ক্রসিং খুলে দিতে বলতে পারতেন।
সাবরি আরও বলেন- ট্রাম্প যদি তাদের কথা নাও শুনতেন তবুও তাদের অন্তত এই আবেদনটি উত্থাপন করা উচিত ছিল এবং গাজার ভাই-বোনদের প্রতি তাদের কর্তব্য পালন করা উচিত ছিল। কিন্তু তারা কিছুই করেন নি ও ভবিষ্যতেও তারা কোনো চেষ্টা করবেন না, কারণ গাজা যুদ্ধ তাদের অগ্রাধিকারের মধ্যে ছিল না এবং তারা কেবল বিনিয়োগ, অর্থ-কড়ি, তেল, জ্বালানি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, প্রযুক্তি ও অস্ত্র চুক্তি নিয়েই ব্যস্ত ছিল। এই অঞ্চলের সমস্যা ও সংকট তাদের কাছে কোনো গুরুত্বই পায় নি।
মিশরীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক জোর দিয়ে বলেন, আরব বিশ্বের জনগণের ক্ষোভের কারণ হলো ট্রাম্প যে তিনটি দেশ পরিদর্শন করেছেন, সেই দেশের নেতারা গাজার জন্য কিছুই করেন নি।
সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতারা ট্রাম্পকে অসংখ্য উপহার এবং অর্থ প্রদানের কথা তুলে ধরে বলেন, কূটনীতিতে এই রীতি একেবারেই নজিরবিহীন। তারা ট্রাম্পের পেছনে যে বিপুল অঙ্কের অর্থ ঢেলেছেন তা দিয়ে কেবল ট্রাম্পকেই নয়, গোটা বিশ্বকেই কেনা যেত।
মিশরের আরেকজন বিশ্লেষক আব্বাস মনসুর বলেছেন, মার্কিনীরা এখন তাদের সেই পূর্বপুরুষদের মতো আচরণ করছে যারা রেড ইন্ডিয়ানদের ধ্বংস করেছিল। মধ্যপ্রাচ্যের প্রকৃত বাসিন্দাদের সঙ্গেও তারা একই আচরণ করছে। মার্কিনীরা আমেরিকার আদিবাসীদের ধ্বংস করেছে এবং এখন তারা ফিলিস্তিনি জনগণকে ধ্বংস করছে। মার্কিনীদের শেকড় হত্যা ও লুটপাটের ওপর প্রতিষ্ঠিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেছেন। ওয়াশিংটন ঘোষণা করেছে, পারস্য উপসাগরের আরব দেশগুলোর সাথে কৌশলগত সহযোগিতা জোরদার করা ট্রাম্পের সফরের প্রধান উদ্দেশ্য। ট্রাম্পের সফরের সময় তিনটি আরব দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোটি কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।