ভ্যাটিকানের সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনি থেকে সাদা ধোঁয়া উঠে এসেছে, যা রোমান ক্যাথলিকদের নতুন পোপ নির্বাচনের ইঙ্গিত দেয়। কার্ডিনালরা গোপন ভোটের মাধ্যমে দ্বিতীয় দিনেই নতুন পোপ নির্বাচনে সফল হয়েছেন। আমেরিকান কার্ডিনাল রবার্ট প্রিভোস্ট নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পোপ লিও চতুর্দশ (Leo XIV) নামে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন অনুসারীর ক্যাথলিক গির্জার এটি ২৬৭তম পোপ নির্বাচন।
বৃহস্পতিবার (০৮ মে) সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনি থেকে সাদা ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেন্ট পিটার্স বাসিলিকার ঘণ্টা বেজে উঠে এই ঐতিহাসিক ঘোষণাকে নিশ্চিত করেছে।
প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী, ক্যাথলিক চার্চের কার্ডিনালরা গোপন সমাবেশে মিলিত হয়ে নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য ভোট প্রদান করেন। ভোটের পর, যদি নতুন পোপ নির্বাচিত হন, তবে চিমনি দিয়ে সাদা ধোঁয়া ছাড়া হয়, যা বিশ্বজুড়ে ক্যাথলিকদের জন্য আনন্দের বার্তা বহন করে।
সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনি থেকে সাদা ধোঁয়া বের হওয়ার প্রায় ৭০ মিনিট পর পোপ লিও চতুর্দশ সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকার কেন্দ্রীয় বারান্দায় এসে উপস্থিত হন। এরপর ফরাসি কার্ডিনাল ডমিনিক মামবার্তি ঐতিহ্যবাহী লাতিন বাক্য "হাবেমুস পাপাম" (আমাদের পোপ হয়েছেন) উচ্চারণ করে হাজারো মানুষের সামনে ঘোষণা দেন।
৬৯ বছর বয়সী প্রিভোস্ট শিকাগোতে জন্মগ্রহণ করলেও জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন পেরুতে মিশনারি হিসেবে। ২০২৩ সালে তিনি কার্ডিনাল নিযুক্ত হন। তিনি সাধারণত প্রচারের আলো থেকে দূরে থাকেন এবং খুব কম সাক্ষাৎকার দিয়ে থাকেন।
গত মাসে প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের স্থলাভিষিক্ত হলেন লিও। পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন প্রথম লাতিন আমেরিকান পোপ, যিনি ১২ বছর ধরে গির্জার নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি ক্যাথলিক গির্জাকে আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলার নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, যার মধ্যে ছিল নারী ধর্মযাজক নিয়োগের প্রশ্নে আলোচনা এবং এলজিবিটি ক্যাথলিকদের আরও অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে পদক্ষেপ।
কনক্লেভ শুরুর আগে কিছু কার্ডিনাল ফ্রান্সিসের সংস্কারমূলক ভাবনার ধারাবাহিকতা চাইলেও, অন্যরা গির্জাকে পুরনো ঐতিহ্যে ফেরানোর পক্ষে মত দেন।
এবারের কনক্লেভের মাধ্যমে ২৬৭তম পোপ নির্বাচিত হলেন। এ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছেন ৭০টি দেশের ১৩৩ জন কার্ডিনাল। যে কার্ডিনালদের বয়স ৮০ বছরের নিচে, প্রথা অনুযায়ী তাঁরাই কেবল নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় অংশ নেন। নির্বাচনের সময় তাঁদের কঠোর গোপনীয়তা মেনে চলতে হয়।