শিরোনাম
◈ বিদ্যুৎ আমদানিতে আদানির ৪০ কোটি ডলারের ‘শুল্ক ফাঁকির’ অনুসন্ধানে দুদক ◈ হাইকোর্টে চিন্ময় দাসের জামিন ◈ আবারও ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে গোলাগুলি ◈ আজ গভীর রা‌তে বা‌র্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মু‌খোমু‌খি ◈ প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি, প্রস্তুতি না রাখা আত্মঘাতী: প্রধান উপদেষ্টা ◈ বড় সুখবর দ্বৈত নাগরিকত্বের আবেদনকারীদের জন্য ◈ টি-টোয়েন্টি সি‌রিজ খেল‌তে পাকিস্তানে যাচ্ছে বাংলাদেশ ◈ আমার স্বামী চায় আমি খোলামেলা জামা পরি: মডেল পিয়া বিপাশা ◈ বিচারকাজে বাধা ও হুমকি: শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ ◈ ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার ঘর হস্তান্তর: সেনাবাহিনীর দক্ষতায় অর্ধেক খরচে সফল বাস্তবায়ন

প্রকাশিত : ২০ মার্চ, ২০২৫, ০৯:১৯ সকাল
আপডেট : ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : এল আর বাদল

তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক কোথায় দাঁড়িয়ে?

এল আর বাদল : ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক কী হতে পারে, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। এমন এক পটভূমিতে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তুলসী গ্যাবার্ডের দিল্লি সফরে সেখানকার মিডিয়ায় দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশে ইসলামি চরমপন্থার উত্থান, সন্ত্রাসবাদের হুমকি, সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে এনেছেন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে। তবে মার্কিন ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্সের প্রধানের এমন বক্তব্য দুই দেশের সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলতে পারে, নাকি এটি আন্তর্জাতিক রাজনীতির একটি অংশ- এসব প্রশ্ন সামনে আসছে। সূত্র, বিবিসি বাংলা

কূটনীতি বিষয়ে বিশ্লেষকদের অনেকে মনে করেন, তুলসি গ্যাবার্ডের বক্তব্যে এসেছে এক ধরনের সতর্কবার্তা যা বাংলাদেশের জন্য নতুন করে শঙ্কা তৈরি করতে পারে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষিক সম্পর্কের কোনো পরিবর্তন দৃশ্যমান নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের নীতি এখনও স্পষ্ট না হওয়ায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা আছে বলে বলছেন বিশ্লেষকেরা।

তাদের মতে, এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশকে প্রমাণ করতে হবে তারা গণতন্ত্রের পথে হাঁটছে। দীর্ঘ সময় নির্বাচন না হলে বাংলাদেশকে অনির্বাচিত সরকারের দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার ঝুঁকি থাকছে।

তবে দেশে এখন সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের মতই একই ধরনের বক্তব্য দিচ্ছে। অন্যতম প্রধান দল বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ইসলামীপন্থি দলগুলোও একইভাবে দেখছে। ইসলামি চরমপন্থার উত্থানের অভিযোগ নিয়েও আপত্তি রয়েছে এই দলগুলোর।

কিন্তু বিশ্লেষকেরা মনে করেন, খেলাফত প্রতিষ্ঠার দাবিতে ঢাকায় মিছিল হওয়ার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজার ভাঙার ঘটনা, নাটকসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হামলা করে বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ফলে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বহিঃপ্রকাশ হতে পারে।

কতটা গুরুত্ব বহন করে তুলসীর বক্তব্য

মার্কিন সরকারের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা প্রধানের পদে আছেন তুলসী গ্যাবার্ড। জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালকের এই পদ সৃষ্টি করা হয় ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনার পর। এই পরিচালকের যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা সম্পর্কিত গোপন সব নথি পাওয়ার অধিকার আছে। একইসঙ্গে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রধান গোয়েন্দা পরামর্শক হিসেবেও কাজ করবেন।

গত নভেম্বরে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে তুলসী গ্যাবার্ডের নাম ঘোষণা করেন। সে সময় এই মনোনয়ন নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছিল।

এমন সমালোচনাও এসেছিল যে, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে রাজনীতিকীকরণ ঘটতে পারে এবং তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তবে সমালোচনা উপেক্ষা করে তুলসী গ্যাবার্ডকে নিয়োগ দেওয়া হলে ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করেছেন তিনি।

ফলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের প্রধান গোয়েন্দা পরামর্শক এবং গোয়েন্দা প্রধান যখন বক্তব্য দেন বা উদ্বেগের কথা তুলে ধরেন, তখন তা গুরুত্ব বহন করে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন। তারা বলছেন, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তুলসী ব্যাগার্ডের বক্তব্যকে যদি গুরুত্ব দেওয়া না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে সঠিক হবে না।

অন্তর্বর্তী সরকার কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে

সরকারের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারকে। কারণ তার বক্তব্যে ইসলামী চরমপন্থা, খেলাফতসহ যে বিষয়গুলো এসেছে, সেগুলো সরকার ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।

এছাড়া যখন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির বিষয় সামনে আসছে, সে প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ পর্যায়ের কারও এমন বক্তব্য অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্বস্তিতেও ফেলেছে।

ফলে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য গুরুত্ব পেয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে এর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তুলসী গ্যাবার্ডের করা মন্তব্য বিভ্রান্তিকর এবং “বাংলাদেশের সুনাম ও ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর।

কারণ বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবে শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইসলাম চর্চার জন্য সুপরিচিত এবং চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অসাধারণ অগ্রগতি অর্জন করেছে।

বিবৃতিতে অন্তর্বর্তী সরকার দাবি করেছে, “গ্যাবার্ডের মন্তব্য সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ বা অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে করা হয়নি” বরং “পুরো জাতিকে মোটা দাগে ও অযৌক্তিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে”।

সরকারের একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্য নিয়ে সরকারের ভেতরে নানা আলোচনা রয়েছে। তাদের কেউ কেউ মনে করছেন, গত বছরের পাঁচই অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের শাসনের পতনের পর থেকে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ধর্মীয় সন্ত্রাসের অভিযোগকে সামনে আনছে প্রতিবেশি দেশ ভারত। তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যে ভারতের বয়ান বা ব্যাখ্যাই উঠে এসেছে।

সরকারের ভেতরে এই আলোচনাও আছে যে, ভারত সফরে এসে সেখানকার মিডিয়ায় বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সাক্ষাৎকারে তুলসী গ্যাবার্ড মন্তব্য করেছেন। ফলে তুলসীর বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান কি না, এই সন্দেহের কথাও সরকারের কেউ কেউ বলছেন।

রাজনৈতিক দলগুলো দেখছে যেভাবে

এ বিষয়টিতে সরকারের অবস্থানের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর পার্থক্য নেই বলা যায়। কারণ দলগুলোও একইরকম বক্তব্য দিচ্ছে। বিএনপি নেতারা বলছেন, বাংলাদেশ এখন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধানের মন্তব্য নানা আলোচনার সৃষ্টি করছে।

তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যের পেছনে ‘ষড়যন্ত্র’ দেখছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বিবিসি বাংলাকে বলেন, সংখ্যালঘু নির্যাতন ও জঙ্গিবাদের কথা বলে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার একটা ষড়যন্ত্র চলছে। এর অংশ হিসেবে ওই ধরনের মন্তব্য এসেছে কি না, সেই সন্দেহ থাকে।

ইসলামী আন্দোলনসহ ইসলামপন্থি কয়েকটি দলের মূল্যায়নও একইরকম। তবে বামপন্থি কোনো কোনো দল বিষয়টাকে রাজনৈতিক চাপ হিসেবে বর্ণনা করছে।

তাদের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারের গত সাত মাসে ইসলামী চরমপন্থার কোনো কোনো গোষ্ঠীর প্রকাশ্য তৎপরতা দেশের ভেতরেও শঙ্কা তৈরি করছে। এ সব গোষ্ঠীর তৎপরতা নিয়েন্ত্রণে অনেক ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার নীরব থেকেছে নাকি ব্যর্থ হয়েছে, এই প্রশ্ন উঠছে।

আর এমন প্রেক্ষাপটে তুলসীর গ্যাবার্ডের বক্তব্যে বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা বলে মনে করছে ওই দলগুলো। তারা বলছে, বিষয়টাকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা সাইফুল হক বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন, চরমপন্থা উত্থানসহ বিভিন্ন ইস্যুতে যে প্রচারণা কোনো কোনো পক্ষ থেকে চালানো হচ্ছে, সে সব বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো কনভিন্স (আশ্বস্ত) হয়েছে। সেকারণে তাদের গোয়েন্দা প্রধানের কথায় তার প্রকাশ ঘটেছে।

‘বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের আড়চোখে দেখার সম্ভাবনা’

সাবেক কূটনীতিকদের কেউ কেউ মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যদিও এখনও পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয় একটা স্থির অবস্থায় আছে, সেখানে রয়েছে অনিশ্চয়তা। কারণ বাংলাদেশসহ অনেক দেশের ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি এখনও স্পষ্ট হয়নি। আর এমন পটভূমিতে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যকে অন্তর্বর্তী সরকারের গুরুত্বের সঙ্গেই নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তারা।
সাবেক কূটনীতিক হুমায়ুন কবির বিবিসি বাংলাকে বলেন, আসলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম টার্গেট হচ্ছে চীনের প্রভাব ঠেকানো। দক্ষিণ এশিয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য সহ সবক্ষেত্রেই চীনের প্রভাব বাড়ছে। সেজন্য চীনের প্রভাব ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে সহায়ক শক্তি হিসেবে দেখছে। ফলে ভারতের অবস্থানকেও তারা অনেক ক্ষেত্রে সমর্থন করতে পারে।

এই মধ্যে আগামী ২৬শে মার্চ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। হুমায়ুন কবির বলেন, বাংলাদেশ চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে- এমন একটা ধারণা নতুন করে সামনে এসেছে। এর সঙ্গে এখন প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশকে আড়চোখে দেখার সুযোগ দিতে পারে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যালেন্স রক্ষা করে এই সফরকে কীভাবে ব্যবহার করে, তার ওপরও বিষয়টা নির্ভর করে।

সাবেক এই কূটনীতিক মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রধানের বক্তব্যকে অন্য কোনোভাবে ব্যাখ্যা না করে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রমাণ করতে হবে। সেই সাবধানবার্তা এসেছে বলেই তার ধারণা।

তুলসীর বক্তব্যে সরকার কি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে

আরেকজন বিশ্লেষক আমেরিকান পাবলিক ইউনিভার্সিটি সিস্টেম-এর শিক্ষক সাঈদ ইফতেখার আহমেদও মনে করেন, দক্ষিণ এশিয়াসহ গোটা এশিয়ায় চীনের প্রভাব আটকানোই মূল লক্ষ্য ট্রাম্প প্রশাসনের। চীনকে থামাতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নের কৌশল নিয়েছে। তারা চীনকে আলাদা করে ফেলতে চাইছে।

ইফতেখার আহমেদ বলেন, চীনকে ঠেকিয়ে যুক্তরাষ্ট্র তার স্বার্থের জন্য যা করার প্রয়োজন হবে, সেটাই করবে। আর এর অংশ হিসেবে ভারতকে পাশে রেখে ওই ধরনের বক্তব্য এসেছে, যা বাংলাদেশের ভাবমূর্তির জন্য ক্ষতিকর হচ্ছে। সেটা বিবেচনায় নেওয়ার অবস্থানে নেই যুক্তরাষ্ট্র।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র শুধু চরমপন্থা বা জঙ্গিবাদকেই নয়, ইসলামপন্থি মতবাদকেই ক্ষতিকর হিসেবে দেখছে বলে মনে করেন ইফতেখার আহমেদ। এই বিশ্লেষক বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্কের অনিশ্চয়তা কাটাতে হলে মূল নিয়ামক হতে পারে দেশকে নির্বাচনমুখী করা। সেখানে যদি দীর্ঘদিন নির্বাচন না দিয়ে এগোতে চায়, তাহলে বাংলাদেশ অনির্বাচিত সরকারের তালিকায় পড়তে পারে।

‘কঠোর ব্যবস্থার প্রমাণ দেখানো প্রয়োজন’

ইসলামি চরমপন্থা, সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ যে ইস্যুগুলো এসেছে, সেগুলোর ক্ষেত্রেও কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে তার প্রমাণ দেখানো প্রয়োজন বলেও মনে করেন বিশ্লেষকেরা।

তারা এ-ও বলছেন, সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগের ক্ষেত্রে ষড়যন্ত্র আছে এবং রাজনৈতিক কারণে কিছু ঘটনা ঘটতে পারে, এসব বক্তব্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবধানবার্তাকে উপেক্ষা করলে সেটা ক্ষতিকর হবে।

অন্যদিকে, অন্তর্বর্তী সরকারের গত সাত মাসে দেশের বিভিন্ন জায়গায় দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বা মব হামলায় অনেক ক্ষেত্রে ইসলামি চরমপন্থার কোনো কোনো গোষ্ঠীর তৎপরতা নিয়ে রাজনীতিতে নানা আলোচনা হয়েছে।

নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীরের তৎপরতাও অনেক সময় দৃশ্যমান ছিল। সর্বশেষ গত সাতই মার্চ হিজবুত তাহ্রীর খেলাফত প্রতিষ্ঠার দাবি নিয়ে রাজধানী ঢাকায় জমায়েত করেছিল। যদিও পুলিশের বাধায় তাদের মিছিল প- হয়ে যায়। কিন্তু গত সাত মাসে চরমপন্থিদের তৎপরতায় অন্তর্বর্তী সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। সরকারের অবস্থান নিয়ে দেশের ভেতরেই আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে। এ নিয়ে পশ্চিমাদের কাছেও ভুল বার্তা গেছে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন।

তবে বিশ্লেষকেরা মনে করেন,যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের কাছে অন্তর্বর্তী সরকারের সেই কঠোর অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে। তখন পশ্চিমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে তার প্রভাব পড়তে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়