ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই আত্মগোপনে একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক রিয়াজ আহমেদ। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কেউই জানেন না এই নায়কের বর্তমান অবস্থান। গুঞ্জন রয়েছে, পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন এই অভিনেতা। আবার কেউ কেউ বলছেন, দেশেই লুকিয়ে আছেন রিয়াজ। যদিও এর সত্যতা পাওয়া যায়নি।
এদিকে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে হঠাৎ করেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে চিত্রনায়ক রিয়াজের মৃত্যুর খবর। তবে এ নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য মেলেনি। রিয়াজের খবর জানে না বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিও। রিয়াজের ব্যবহৃত নম্বরটি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকেই বন্ধ রয়েছে।
রিয়াজের ঘনিষ্ঠ একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিল্পী রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘এমনটা হওয়ার কথা না। আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম। এমন কিছু হয়ে থাকলে এতক্ষণে তোলপাড় হয়ে যেত।’
ঢাকাই চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা নায়কদের একজন রিয়াজ। এক সময়ের ব্যস্ত এই অভিনেতা অনেক বছর ধরে অভিনয়ে অনিয়মিত। তবে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার ক্ষমতার আগ পর্যন্ত কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে বেশ সরব ছিলেন তিনি। বেশ কয়েকবার তাকে বর্তমানে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত ফাঁসির আসামি শেখ হাসিনার সফর সঙ্গী হতেও দেখা গেছে।
দীর্ঘদিন তিনি আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক উপকমিটির সদস্য ছিলেন। দলের নানা সাংস্কৃতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন, বক্তৃতা দিয়েছেন। এমনই ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিটিভি ও এফডিসির মানববন্ধনের নেতৃত্বে ছিলেন রিয়াজ।
আলোচিত ‘আলো আসবেই’ গ্রুপেও বেশ সক্রিয় ছিলেন তিনি। তবে ক্ষমতাচ্যুত হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর নিজেকে সব মাধ্যম থেকে গুটিয়ে নিয়েছেন এই নায়ক।
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে টানা দুই যুগ রিয়াজ ছিলেন ঢালিউডের শীর্ষ জনপ্রিয় মুখ। ‘বাংলার নায়ক’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে নাম লেখান তিনি। এরপর একে একে অসংখ্য সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন।
২০২২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর রিয়াজ অভিনীত সর্বশেষ ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমাটি মুক্তি পায়। এরপর আর নতুন কাজে তার দেখা মেলেনি। লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকা রিয়াজ এখনো বাংলা সিনেমার এক অনুভবের নাম।