মো.নিয়ামাতুল্লাহ, ইবি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ((টিএসসিসি) ১১৬ নং কক্ষে টাকার বিনিময়ে অনুষ্ঠান করার সুযোগ পায় বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। এতে শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক মনোভাব বিকাশে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসিসি সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র বলে পরিচিত হলেও সাংস্কৃতিক কোনো প্রাণ সঞ্চার না হওয়ায় সংগঠনগুলো আক্ষেপ প্রকাশ করেছে।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রয়েছে প্রায় ৩৫টি। এসব সংগঠনগুলো তাদের কার্যক্রমকে গতিশীল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান করে থাকে। যার সিংহভাগ অনুষ্ঠান হয় টিএসসিসির ১১৬ নং কক্ষে। কিন্তু প্রতিটি অনুষ্ঠান করতে তাদের গুনতে হয় টাকা।
জানা গেছে, প্রতিটি প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠানের জন্য ৩০০ টাকা করে নেওয়া হয়। যা সংগঠনগুলো বহন করে থাকে। অথচ ছাত্র-শিক্ষক মিলনায়তন কেন্দ্র শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতিমনা করে গড়ে তোলা ও বিভিন্ন কারিকুলাম শিক্ষা অর্জনের জন্য তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা মনে করছেন তাদের সংস্কৃতি চর্চা বিকাশে এ অর্থায়ন যদিও সামান্য তারপরেও এটি প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে। সংস্কৃতি চর্চায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে টিএসসিসি কোন ভূমিকা পালন করছেনা বলেও মন্তব্য করেন শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মঞ্চের (ঐক্যমঞ্চ) আহ্বায়ক নুরুল্লাহ মেহেদি বলেন, সংগঠনগুলোর পৃষ্ঠপোষক হলো টিএসসিসি৷ টিএসসিসি চাইলে সংগঠনগুলোকে গতীশীল করতে পারে। কিন্তু দুঃখের বিষয় টিএসসিসি সংগঠনগুলোকে গতীশীল করার লক্ষ্যে যে ভূমিকা পালন করা দরকার তার বিন্দুপরিমাণও লক্ষ্য করা যায় না।
বর্তমান টিএসসিসি সংগঠন বান্ধব ভূূমিকা পালন করতে ব্যর্থ। বরং গতিশীল করতে স্বতঃস্ফুর্ত ভূমিকা পালন করার বিপরিতে ১১৬ নং কক্ষে অনুষ্ঠান করতে টাকা নেওয়া হয়। যদিও টাকা মওকুফ করার কথা হয়েছিলো কিন্তু পরবর্তীতে এ বিষয়ে কোনো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ((টিএসসিসি) পরিচালক অধ্যাপক ড. রুহুল কে এম সালেহ বলেন, এটি টিএসসিসির নীতিমালা। মূলত অনুষ্ঠান বাবদ যে টাকা নেওয়া হয় তা টিএসসির ফান্ডে জমা হয়। তাছাড়া টিএসসিসির কিছু ব্যায় আছে যেমন, কর্মচারী আছে তাকে বেতন দেওয়া, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আপ্যায়ন, বিদ্যুৎ এর বিল বেড়েছে, এসির বিল, প্রয়োজনীয় চেয়ার, টেবিল রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি কাজের ক্ষেত্রে এসব টাকা ব্যয় করা হয় যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বহন করেনা।
অনুষ্ঠানে করতে টাকা মওকুফের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো কর্তৃত্ব নাই, এটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিষয়।
ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিএসসিসি) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, আমার যতটুকু মনে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যান্তরীন সংগঠনগুলোর কাছে অনুষ্ঠানের জন্য কোন টাকা নেওয়া হয়নি। বহিরাগত কোনো সংগঠন প্রোগ্রাম করতে চাইলে তাদের থেকে টাকা নেওয়া হতো। তবে, বর্তমানের কোনো নীতিমালা সম্পর্কে আমি জানি না।
এ বিষয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, এটা আমি ঠিক বলতে পারবো না, আমার জানা নেই। টাকা নেওয়া হয় কি না, কোন আলোকে নেওয়া হয় এটা আমার জানা নেই। টিএসসিসির পরিচালকই ভালো বলতে পারবে।
প্রতিনিধি/ জেএ