বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ওপর গত ৩ এপ্রিল বাড়তি শুল্ক আরোপ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৯ এপ্রিল থেকে কার্যকর করার প্রাথমিক নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে তিন মাসের জন্য আলোচনার সুযোগ দিয়ে ৯ জুলাই পর্যন্ত নতুন শুল্ক প্রয়োগ স্থগিত করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক কমানোর জন্য চার ধরনের কৌশল নিয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র নতুন শুল্ক ধার্য করে ৩৭ শতাংশ। সেটি কমানোর জন্য ইতোমধ্যে দুই দেশের সরকারের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার (৩ ও ৪ জুলাই) ওয়াশিংটনে আবারও বৈঠকে বসতে যাচ্ছে দুই দেশ।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে চার ধরনের কৌশলের মাধ্যমে শুল্ক কমানোর বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশের সক্ষমতা বিবেচনা করে কতটুকু ছাড় দেওয়া যায়— সে বিষয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করবে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
জানতে চাইলে সরকারের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, দুপক্ষের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। আগামী ৯ জুলাই স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে আমরা শুনতে পেয়েছি, বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের জন্য এই মেয়াদ আরও বাড়তে পারে। কারণ, অনেক দেশ এ বিষয়ে আলোচনার বিভিন্ন স্তরে রয়েছে।
বাংলাদেশ কী ধরনের কৌশল নিচ্ছে জানতে চাইলে বাংলা ট্রিবিউনকে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা মূলত চারটি বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছি। বাংলাদেশের সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এর মধ্যে যতটুকু সম্ভব ছাড় দেওয়া যায়, সেটি আমরা বিবেচনা করবো।’
চার কৌশল
১. মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক হার হ্রাস, ২. আমদানির ক্ষেত্রে অশুল্ক বাধা দূর করা, ৩. বেসরকারি খাতকে অধিক আমদানিতে উৎসাহিত করা এবং ৪. সরকারি আমদানি বৃদ্ধি করা– এই চারটি কৌশল বিবেচনা করছে সরকার।
এ কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ যেসব মার্কিন পণ্য আমদানি করে, তার অনেকগুলোর ওপর শুল্ক হার অত্যন্ত কম। যেমন- কৃষিপণ্য। অন্য যেসব সম্ভাব্য আমদানি পণ্য, যেগুলোর ওপর শুল্ক বেশি আছে— সেগুলোর শুল্ক কমানো হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, ‘অশুল্ক বাধা যেমন তুলা আমদানির ক্ষেত্রে ফুমিগেশনগত জটিলতা নিরসন করা হয়েছে। এ ধরনের আরও অশুল্ক জটিলতা থাকলে সেটি আমরা দেখবো।’
বেসরকারি খাতে আমদানি বৃদ্ধির জন্য উৎসাহ প্রদান করা হবে উল্লেখ করে আরেকটি সূত্র জানায়, সরকারি খাতেও আমদানি বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন, ‘গম, এলএনজি বা অন্যান্য উপকরণ—যেগুলো সরকার ব্যবহার করবে– এমন পণ্যের আমদানি বাড়ানো হবে।’
বোয়িং থেকে প্লেন কেনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে কেনা হবে।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করেছে ৮৩৬ কোটি ডলার এবং আমদানি করেছে ২২১ কোটি ডলার। উৎস: বাংলাট্রিবিউন।