বাজারভিত্তিক বিনিময়হার চালুর পর দেশের খোলাবাজারে (ওপেন মার্কেট) ডলারের দর বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে মানি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোতে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২৭ টাকায়। যদিও ব্যাংকিং চ্যানেলে লেনদেন হচ্ছে ১২২ টাকা ৫০ পয়সার মধ্যে। এমন অবস্থায় বাজারে অস্থিরতা ঠেকাতে কঠোর অবস্থানের বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ডলারের রেফারেন্স রেট ১২২ টাকা ৪৩ পয়সা, যা একদিন আগেও ছিল ১২১ টাকা ৬৮ পয়সা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সাতটি বিশেষ টিম মাঠে নামিয়েছে। টিমগুলো বাজার তদারকিতে কাজ করছে।
এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, অনেক মানি এক্সচেঞ্জ ব্যাংক থেকে ডলার সংগ্রহ করেও বাজারে ছাড়ছে না। বাড়তি দামের আশায় মজুত করে রাখছে।
মতিঝিল, পল্টন, ফকিরাপুল এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, মানি এক্সচেঞ্জগুলোর বোর্ডে ডলারের দাম লেখা ১২৪ টাকা হলেও বাস্তবে তা মিলছে না। ডলার নেই বলে জানানো হলেও আড়ালে গিয়ে বেশি দাম দিলে ডলার মিলছে। বিশেষ করে হজ মৌসুমে ডলারের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাজারে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
পল্টন এলাকার ডলার ক্রেতা শরিফুল ইসলাম জানান, ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে ২,৫০০ ডলার প্রয়োজন হলেও ব্যাংক থেকে মাত্র ২০০–৩০০ ডলার পাওয়া যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে মানি এক্সচেঞ্জ ঘুরছেন, যেখানে প্রতি ডলারে ১২৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২৭ টাকা চাওয়া হচ্ছে।
রাষ্ট্র মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে ডলারের কোনো সংকট নেই। আমদানি চাহিদা সীমিত থাকায় এবং পর্যাপ্ত রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহের কারণে বাজারে ভারসাম্য রয়ে গেছে। প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় বিলিয়ন ডলারের আমদানি বিল পরিশোধ করতে হয়, যেখানে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স মিলিয়ে প্রায় সাত বিলিয়ন ডলার আয় হচ্ছে।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপের মুখে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের বিনিময়হার নির্ধারণের দায়িত্ব ব্যাংক ও গ্রাহকের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। যদিও বাজার পুরোপুরি মুক্ত হয়নি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বাজারে কেউ অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, খোলাবাজারে পাঁচ টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি অন্যায়। এ ধরনের কার্যক্রম নজরে এলে জড়িত মানি এক্সচেঞ্জগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে জরিমানার পাশাপাশি প্রয়োজনে লাইসেন্স বাতিল করা হবে। উৎস: জাগোনিউজ২৪