মুরাদনগরে শিশু সোহাগীর রহস্যজনক মৃত্যু: ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন
শিশু সোহাগির কবরের পাশে দাঁড়িয়ে খেলার সাথীরা দোয়া করছেন।
এন এ মুরাদ, মুরাদনগর কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কামারচর গ্রামে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী সোহাগীর মৃত্যু ঘিরে রহস্যের জট ঘনীভূত হয়েছে। মেধাবী ও প্রাণচঞ্চল এই শিশুটির মৃত্যু নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভ ও সন্দেহ দানা বেঁধেছে। স্থানীয়দের দাবি, সোহাগীকে হত্যা করে সেটিকে আত্মহত্যা হিসেবে সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
শিশুটি কামারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, সোহাগী পড়ালেখায় অত্যন্ত মনোযোগী এবং আচরণে শান্ত-ভদ্র ছিল। তারা এ মৃত্যুকে অস্বাভাবিক ও দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন।
জানা যায়, সোহাগী কামারচর গ্রামের আল-আমিনের প্রথম স্ত্রীর মেয়ে।। দীর্ঘদিন ধরে সোহাগী সৎ মায়ের সঙ্গে বসবাস করছিল। সৎ মা শারমিন আক্তার ও পিতা আল-আমীন প্রায়ই সোহাগীর ওপর অত্যাচার ও নিপিড়ন করত। বুধবার বেলা ১১ টায় মেয়েটির মরদেহ নিয়ে বাড়িতে কান্নাকাটি করলে এলাকাবাসী এগিয়ে আসেন। তখন সোহাগীর পরিবার জানান, সে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সৎ মা পরিকল্পিতভাবে সোহাগীকে হত্যা করে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করেছে। ঘটনার পরপরই কোনো ময়নাতদন্ত ছাড়াই তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করা হয়, যা আরও সন্দেহ বাড়িয়ে তুলেছে।
এলাকাবাসী ও স্হানীয়দের দাবি, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক। পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও তদন্ত হওয়া দরকার, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ধামাচাপা পড়ার সুযোগ না থাকে।
আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের সন্দেহজনক মৃত্যুতে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ দাফন সম্পূর্ণ অবৈধ ও ফৌজদারি অপরাধের মধ্যে পড়ে। প্রশাসনের এমন উদাসীনতা বা দায়িত্বহীনতা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
স্হানীয় ওয়ার্ড মেম্বার বাছির মিয়া জানান, পুলিশের এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুনকে জানানো হয়েছে তিনি বলছেন পরিবারের অভিযোগ না থাকলে দাফন করে দাও।
৯নং কামাল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বাশার খান জানান, কামারচরে সোহাগীর নামে একটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি দাফনের একদিন পর আমি জানতে পেরেছি। তবে এটি কোন ধরনের মৃত্যু তাঁর প্রকৃত ঘটনা তদন্ত করে উদঘাটন করা হউক।
এ বিষয়ে মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, “আমি এবিষয়ে কিছুই জানি না।”