চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চোর অপবাদ দিয়ে ‘মব’ করে কিশোর মাহিনকে পিটিয়ে হত্যা ও দুজনকে আহত করার ঘটনায় হওয়া মামলার প্রধান আসামি নাজিম মাস্টার এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ ছাড়া এজাহারনামীয় আরো দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ বলছে, নাজিম মাস্টার গা ঢাকা দিয়েছে। তাকে ধরতে নিয়মিত সম্ভাব্য স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।
এদিকে মঙ্গলবার সরেজমিনে মাহিনদের বাড়িতে গেলে মাহিনের মা খদিজা আকতার বলেন, প্রধান আসামি নাজিম মাস্টার তাঁর পরিবারকে প্রভাবশালীদের মাধ্যমে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন, তিনি নাকি প্রশাসনকে টাকা দিয়ে কিনে ফেলবেন। খাদিজা আকতার বলেন, ‘আমার ছেলে হত্যার সব আসামি গ্রেপ্তার না হলে আমি খাবার মুখে নেব না।’
রিহানের বাবা মুহাম্মদ লোকমান বলেন, ‘আসামিরা এখন বাঁচতে আমাদের টাকার অফার করছেন। ১০ লাখ লাগলে দেবে বলছে।
কিন্তু আমি ছেলে বিক্রি করব না।’
ফটিকছড়ি থানার ওসি নুর আহমদ মঙ্গলবার কালের কণ্ঠকে বলেন, আটক তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রধান আসামিসহ বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
গত শুক্রবার (২২আগস্ট) ভোরে ‘চোর’ অপবাদ দিয়ে মাহিন, রাহাত ও মানিক নামের তিন কিশোরকে ধরে এনে সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা।
এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন মাহিন। গুরুতর অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন তার দুই বন্ধু রাহাত ও মানিক। তাদের রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে। রাহাত হাসপাতালের অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে আর মানিক ক্যাজুয়ালটিতে চিকিৎসাধীন। দুজনেরই শরীরের একাধিক হাড় ভেঙে গেছে।
ওই ঘটনায় নিহত কিশোরের মা খাদিজা আকতার বাদী হয়ে ফটিকছড়ি থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে পাঁচজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় সাতজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে আজাদ হোসেন (২২), মো. নোমান (২৫) ও ফারাজ (২৩)-কে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁরা তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তারা জানান, লাঠিসোঁটা, মোটা তার ও কিলঘুষিতে কিশোর মাহিনের মৃত্যু হয়। মারধরে অংশ নেন অন্তত ৪০ জন। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া লোকজন সরে যান। উৎস: কালের কণ্ঠ।