লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে দুই সন্তানের জননী ও স্থানীয় এক গৃহবধূর মুখের অংশকে সুপার এডিট করে ফেসবুক ও টিকটক আইডিতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
গৃহবধূর চেহারার সঙ্গে অচেনা অন্য একাধিক নারীর প্রদর্শিত শরীরের অশ্লীল দেহের সঙ্গে যুক্ত করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টিকটক আইডিতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে গৃহবধূকে বেধড়ক মারধর করে তালাকের হুমকি দিয়ে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন স্বামী।
উপজেলার চরমার্টিন ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় গৃহবধূর মা বাদী হয়ে সোমবার রাতে কমলনগর থানায় এক নারীসহ চারজনকে অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
গৃহবধূর অভিযোগ, গত চার মাস ধরে দেশ এবং বিদেশ থেকে ব্যবহারকারী একাধিক ফেইক ফেসবুক আইডিসহ অন্তত ৩০টিরও বেশি টিকটক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রতিদিনই গৃহবধূর বিকৃত করা ছবি ও কয়েক সেকেন্ডের এডিট করে বানানো ভিডিও পোস্ট করা হচ্ছে। ন্যক্কারজনক এমন কাণ্ডকে কেন্দ্র করে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হলে গৃহবধূকে তালাকের হুমকি দিয়ে দুই শিশুসন্তানসহ বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তার স্বামী। স্বামীর দেওয়া তালাকের হুমকিতে দিশেহারা হয়ে একাধিকবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলেও জানান ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূ।
অভিযোগ সূত্র জানা যায়, পূর্বের সংঘটিত পারিবারিক তুচ্ছ একটি ঘটনার প্রতিশোধ নিতে এক প্রতিবেশী দীর্ঘদিন ধরে গৃহবধূর সংসার ভাঙার পরিকল্পনা করেন। কৌশলে গৃহবধূর মোবাইল থেকে তার ছবি এবং ভিডিও সংগ্রহ করে নেয় ওই নারী। পরে প্রবাসে থাকা এলাকার পরিচিত কয়েকজন বন্ধুদের দিয়ে গৃহবধূর ছবি বিকৃতি করে ফেইক ফেসবুক আইডি ও টিকটকে ছড়িয়ে দেয়।
সম্প্রতি আরেক প্রতিবেশী নিজ নামীয় ফেসবুক আইডি থেকে গৃহবধূর কুরুচিপূর্ণ একটি ছবি পোস্ট করলে গৃহবধূর মা-বাবা এলাকার গণ্যমান্য লোকজনদের নিয়ে তার মোবাইল জব্দ করেন। পরে ওই মোবাইলে গৃহবধূর ছবি বিকৃতি করে পোস্ট করার প্রমাণ মেলে।
কমলনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তহিদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।