ফেরি থেকে অটোরিকশাসহ মেঘনায় ছিটকে পড়ার ১৩ ঘণ্টা পর শাশুড়ি-পুত্রবধূর লাশ উদ্ধার হয়েছে। শনিবার ভোররাত পাঁচটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার কড়িকান্দি ও নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার বিশনন্দী ফেরিঘাট পাড়ি দেওয়ার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- খালেদা বেগম (৫৫) ও ফারজানা বেগম (২২)। আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন বিকেল ৬টার দিকে জানান, অটোরিকশাটি উদ্ধার হয়েছে। ভেতরে দুই নারীর লাশ পাওয়া গেছে।
এর আগে দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার করা হয় খালেদা বেগমের ছেলে কামাল হোসেনকে (১৯)। তিনি চিকিৎসাধীন। তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার রসুল্লাবাদ গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
কামালের চাচাতো ভাই মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ‘আমার চাচা-চাচি সপরিবারে ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে বসবাস করেন। চাচা একটা পেট্রোল পাম্পে চাকরি করেন। চাচি, তার দুই ছেলে ও এক পুত্রবধূ সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে আজ বাড়ি ফিরছিলেন। পথে ফেরিতে ওঠার পর কিছুদূর আসার পর ঝাঁকুনি লেগে অটোরিকশাটি মেঘনা নদীতে পড়ে যায়। এ সময় আমার চাচাতো ভাই কামাল উঠতে পারলেও চাচি ও চাচাতো ভাইয়ের বউ বের হতে পারেনি।’
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ভোর পাঁচটার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক কুদ্দুছ ও ফারজানার স্বামী সাগর মিয়া পাশে নেমে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ভেতরে তিনজন বসা ছিলেন।
তাদের অভিযোগ, ফেরিটির পেছনে কোনো রেলিং বা সুরক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। ফলে সামান্য ঝাঁকুনি লাগতেই কাত হয়ে অটোরিকশাটি যাত্রীসহ মেঘনা নদীতে পড়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে কড়িকান্দি-বিশনন্দী ফেরিঘাটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই বললেই চলে।
আড়াইহাজারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাত হোসেন জানান, তিনি দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সকালেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
এই দুর্ঘটনাকে অত্যন্ত মর্মান্তিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফেরিতে নিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।