শিরোনাম
◈ মহানবী (সা.) হালাল প্রাণীর যেসব অঙ্গ খাওয়া অপছন্দ করতেন ◈ সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে কী আছে ◈ বাজেট: মূল্যস্ফীতি, কর্মসংস্থান, বিনিয়োগে চ্যালেঞ্জ ◈ প্যারোলে মুক্তি মেলেনি, জেলগেটেই মায়ের মরদেহ দেখলেন সাবেক এমপি আসাদুজ্জামান ◈ বেনাপোল সীমান্তে নাসিরের  উটের দাম হাকা হচ্ছে ৩৫ লাখ, ক্রেতা নেই! ◈ বছরে একবারের বেশি স্বর্ণ আনলে মিলবে না ব্যাগেজ রুলসের ছাড় ◈ মঙ্গলবার শাহজালালের সার্ভার বন্ধ ৩ ঘণ্টা, চেক-ইন হবে ম্যানুয়ালি ◈ বাজেট প্রতিক্রিয়ায় যা বলছেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ও জাহিদ হোসেন ◈ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের মাধ্যমে জুলাই সনদ ঘোষণার অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার ◈ ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে আমরা ৩টি বিষয়ে আলোচনা করেছি : নাহিদ

প্রকাশিত : ০১ জুন, ২০২৫, ০৩:২৩ দুপুর
আপডেট : ০২ জুন, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করণে লাভের স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা

নিনা আফরিন,পটুয়াখালী : কুরবানীর ঈদেকে সামনে রেখে খামার পদ্ধত্তির পরিবর্তে দেশীয় পদ্ধত্তিতে পশু
মোটাতাজা করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীর প্রান্তিক কৃষকরা। খামার পদ্ধত্তিতে লোকসানের বিপরীতে চলতি বছর দেশীয় পদ্ধত্তিতে রেকর্ড সংখ্যক পশু পালনে সফল হয়েছেন তারা। চোরাই পথে গরু আমদানিতে সরকার কঠোর হলে দেশীয় প্রান্তিক চাষীরা লাভবান হবে বলে আশা তাদের।

জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর সুত্র জানায়, জেলার ৮টি উপজেলায় সর্বমোট এক লাখ ৩৩ হাজার ৩৭১ টি গবাদী পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রাথমিক চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ২৮ হাজার ১৮৮টি। জেলায় এ বছর পাঁচ হাজার ১৮৩টি কোরবানিযোগ্য প্রাণী উদ্বৃত্ত থাকবে বলে প্রত্যাশা এ দপ্তরের। এছাড়া চলতি বছর ছয় হাজার ৩৭৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকার গবাদী পশু হৃস্ট-পুষ্ট করা হয়েছে বলেও দাবী
জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর সুত্রের।

সরেজমিন পরিদশর্নকালে জেলার কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া,বানাতি বাজার,ধানখালী ও দেবপুর এলাকার একাধিক কৃষক জানান, আমন ধান কাটার পর দিগন্ত জুড়ে অনেক কৃষি জমি খালি পড়ে থাকে। যেসকল জমিতে সেচের সুবিধা রয়েছে সেখাসে কৃষকরা তরমুজ,মুগডাল অথবা অন্য যে কোন ফসলের চাষ করে থাকে। তবে নদী তীরবর্ী বেশীর ভাগ জমি এ সময় খালি পড়ে থাকে।

দেবপুর এলাকার প্রান্তিক কৃষক আবদুল বারেক(৫৫) জানান তিনি গরুর খামারি নন। কিন্তু প্রত্যেক বছর কোরবানির আগে ৫/৭টি গরু কিনে তিন চার মাস আগ থেকে মোটাতাজা করে কোরবানির হাটি বিক্রি করে থাকেন। এ বছর তিনি ৮টি গরু কিনে মোটাতাজা করছেন। পায়রা বন্দর সংলগ্ন খোলা মাঠে এ গরু গুলো লালন পালন করায় তার তেমন কোন খরচ হচ্ছে না। একই এলাকার সালাউদ্দীন বিশ্বাস(৬০) জানান তিনি
এবং তার পরিবার প্রায় শতাধীক গরু দেশীয় পদ্ধতিতে লালন পালন করছেন। কোরবানির বাজারকে সামনে নিয়ে তারা এগুলো লালন পালন করছেন বলে জানান তিনি। তিনি জানান শুধুমাত্র কৃমির ট্যাবলেট ছাড়া গরুকে অন্য কোন ওষুধ দেয়া লাগছে না। খোলামাঠে গরু চড়ানোর কারনে এগুলো খুবই হৃষ্টপুষ্ট হচ্ছে। কোরবানির বাজারে দেশীয় এ গরুগুলোর দাম সকল সময় ভালো থাকে। তিনি জানান এখানে গরু পালন করতে খরচ খুবই কম। ভালোভাবে যত্ন নিলে প্রতিটি গরুতে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। এ বছর তারা তিন চার মাসে ২০ লাখ টাকা লাভ করতে পারবেন বলে আশা করছেন। খামার পদ্ধত্তির চেয়ে এই পদ্ধত্তি লাভজনক হওয়ায় তারা এ পদ্ধতি বেছে  নিয়েছেন বলে দাবী তার। ধানখালী এলাকার সাউগার মো: উজ্জল (৩৫) জানান তিনি কোরবানিকে সামনে রেখে ৪৫টি ছাগল এবং ভেড়া পালন করছেন। দেশীয় পদ্ধতিতে এগুলো লালন পালন করায় বাজারে এগুলোর ভালো দাম পাবেন বলে মনে করেন তিনি। তার দাবী খোলা মাঠে লালন পালন করা যে কোন গরু ছাগল ফার্মের চেয়ে বেশী দামে বিক্রি হয়ে থাকে।

এ বিষয়ে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা,ডাঃ মোঃ হাবিবুর রহমান জানান, পটুয়াখালীতে এ বছর ৭৩ হাজার ৯৬০টি কুরবানীর গরু এবং ৪৫ হাজার ৯৬৪ টি ছাগল-ভোড়া মোটাতাজা করণ করা হয়েছে। খোলা মাঠে গ্রামীণ কৃষকের নিজস্ব পদ্ধতিতে হৃস্ট-পুষ্টকরণ গরুর সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজারের অধিক। ফার্ম পদ্ধতিতে গরুর সংখ্যা ৫৩ হাজার ৩৪৮টির মতো। এছাড়া ছাগল ভেড়া মোটতাজা করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৯৬৮টি। প্রতিটি গরু ৮০ হাজার টাকা দরে গরুর প্রাথমিক মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার ৯১৬ কোটি ৮০ লাখ এবং প্রতিটি ছাগল ও ভেড়া ১০ হাজার টাকা মূল্যে বাজার প্রাথমিক বাজার দর ধরা হয়েছে ৪৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা। 

তিনি জানান, কৃষকদের সময় উপযোগি প্রশিক্ষণ ও যথাযথ পরার্মশ এবং তাৎক্ষনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের মাধ্যমে গবাদি পশু হৃষ্ট-পুস্টিতে সক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। চলতি বছর কোরবানির জন্য এক কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭ টি গবাদি পশু প্রস্তুত  করা হলেও কোরবানীর জন্য চাহিদা রয়েছে ৫৬ লাখ ২ হাজার ৯০৫ টির। ছাগল ভেড়া প্রস্তুত রয়েছে ৬৮ লাখ ৬৮ হাজার ৯২০টি। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি পশু উদৃত্ত থাকার কথা নিশ্চিত করেছেন প্রানী সম্পদ অধিদপ্তর।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়