ফিরোজ আহম্মেদ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহে প্রচণ্ড গরমে জনজীবনের নাভিশ্বাস উঠেছে। আর এই দাবদাহে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। শ্রেণিকক্ষে ফ্যানের অভাব আর ডে-শিফটে প্রচণ্ড তাপমাত্রার মধ্যে পাঠদান কার্যক্রম যেন এক চরম কষ্টের নামান্তর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফ্যান নেই। কোথাও একটি ফ্যান থাকলেও তা সচল নয়, আবার কোথাও ফ্যান ঠিক মত চলে না। ফলে গরমে ক্লাসে বসেই ঘাম ঝরাচ্ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ছে মাঝপথেই। ফলে কমে যাচ্ছে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি।
সদর উপজেলার মুরারীদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে যেখানে অন্তত ৪টি ফ্যান প্রয়োজন, সেখানে রয়েছে মাত্র ৩টি, তার মধ্যে একটি পুরোপুরি অচল এবং অন্যটি মাঝেমধ্যে থেমে যায়। এই অবস্থায় শ্রেণিকক্ষে থাকা যেন শিক্ষার্থীদের জন্য এক অদৃশ্য শাস্তি।
শহরের খান-এ-খোদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্রও ভিন্ন নয়। সেখানে শ্রেণিকক্ষ সংকুচিত, বাতাস প্রবাহের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই, আর একটি সচল ফ্যান যেন বিলাসিতার নামান্তর। এই গরমে শিশুরা নাজেহাল হয়ে ক্লাস করছে, অনেকেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে।
নাজমুল হোসেন নামের এক শিক্ষক বলেন, ডে-শিফটে ক্লাস পরিচালনার ফলে দুপুরের পর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। ছুটির পর শিক্ষার্থীদের তপ্ত রোদে বাড়ি ফিরতেও চরম কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। তাদের দাবি, প্রতিটি শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থা এবং ডে-শিফটের পরিবর্তে মর্নিং শিফট চালু করা হোক।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আনন্দ কিশোর সাহা বলেন, "শিক্ষকদের বক্তব্য সঠিক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।"
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, ঝিনাইদহ জেলার ৬টি উপজেলার মধ্যে মোট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯০৭টি। এসব বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১,৬৭,৪০১ জন।