নুরুল হক: সোয়াই নদীর অবস্থান- আজ থেকে প্রায় ১৫০-২০০ বছরের আগে এই নদীটি প্রবাহমান ছিল।বিভিন্ন তথ্যাদি বিশ্লেষন করলে দেখা যায় এই নদীটি দিয়ে বড় বড় পাল তোলা নৌকা কেউ কেউ বলেন জাহাজ চলাচল করতো মূলত বৃটিশ শাসনামলে। যদিও বর্তমানে নদীটির কোন অস্তিত্ব নেই।
ময়মনসিংহ সদরের চর নিলক্ষিয়া গ্রামের ভাটিপাড়া থেকে ব্রহ্মপুত্রের বাম দিক দিয়ে এই নদীর সৃষ্টি। নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বরাত দিয়ে একটি পত্রিকা থেকে জানা যায় বর্তমান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত দিক হতে এই নদী সৃষ্টি হয়ে সদরের শেষ প্রান্ত সাহেব কাচারি (রাজগঞ্জ বাজার) বাজার থেকে আধা কিলোমিটার পুর্বে যেখান থেকে গৌরীপুর সীমানা শুরু হয়েছে সেখান দিয়ে রাস্তা অতিক্রম করে বিসকা বাজারের পশ্চিম দিক দিয়ে খৈলাপুরী বিলের মধ্যদিয়ে কাশিগঞ্জ বাজার পার হয়ে শ্যামগঞ্জ বাজারের কাছ দিয়ে পুর্বধলাকে এক পাশে রেখে নেত্রকোনা সদরের পার্শ্ব দিয়ে গিয়ে মগড়া নদীতে মিশে গেছে।
কাজ চলমান এলাকায় গিয়ে জানা যায় ১৯১২ সালের আগের নকশা দিয়ে এই নদীর খনন কাজ করা হচ্ছে। খননকাজ এলাকায় আগে নদীর কোন চিহ্ন না থাকলেও খননের পরে নদী দৃশ্যমান হচ্ছে। নেত্রকোনার মগড়া নদী থেকে বর্তমান খননকাজ এলাকার দৈর্ঘ্য ৪৬ কিমি। টেন্ডার হয়েছে বিসকার কাছে রেললাইনের আগ পর্যন্ত খৈলাপুরি বিল পর্যন্ত। সদরের অংশে এখনো খননের কোন টেন্ডার হয় নাই। যদি সদরের অংশ খনন কাজ সম্পন্ন করে তাহলে এই নদীটি বিরাট প্রবাহমান নদী হবে এটা নিশ্চিত বলা যায়।
আমার একজন পরিচিত পানি বিশেষজ্ঞ জানান ভাটিতে প্রবাহমান নদী খুব স্রোতস্বিনী হয়। সেক্ষেত্রে এই নদীটি সম্ভাবনাও প্রচুর। আর একবার স্রোতস্বিনী হয়ে গেলে নদীর প্রসস্থতা এখন যাই থাকুক না কেন পরবর্তীতে নদীর প্রশস্ততা বেড়ে যাবে খনন ছাড়াই! আর তা ছাড়া পানিটা আসবে আমাদের এই ব্রহ্মপুত্রে। নেত্রকোনা জেলার আগাম বন্যার পানি এসে ঢুকে পড়বে ব্রহ্মপুত্রে।
অবশ্য এ সময়টাতে বিশেষ করে মে- জুনে ব্রহ্মপুত্রে পানি একবারেই কম থাকে। এ সময়ে ব্রহ্মপুত্রে পানি ঢুকলে এর শ্রী বৃদ্ধি পাবে এটা নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। আবার উল্টোদিকে চিন্তা করলে এরকমও ভাবনা আসে যখন ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বন্যা হবে বিশেষ করে মধ্য জুলাইয়ে ব্রহ্মপুত্রে বন্যা শুরুর মৌসুম। সেই মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রেও পানি বাড়লো আবার মগড়া নদীর পানিও বাড়লো তখন কিন্তু এই বিস্তীর্ণ এলাকায় দীর্ঘস্থায়ী জলমগ্ন হয়ে যেতে পারে এটা আমার ব্যাক্তিগত মতামত।
বর্তমানে খৈলাপুরী বিল পর্যন্ত নদী খনন করা হবে। যদি খননকাজ এ পর্যন্ত থাকে তাহলেও আমরা জলমগ্ন বা বন্যার আশংকায় পড়বো।
ভালো প্রত্যাশা- আবার এটাও আশা করি এই নদী প্রবাহমান হলে ব্রহ্মপুত্রে আবার সৌন্দর্যে ভরে উঠবে বিশেষ করে বর্ষার আগে। পানির স্তর উপরে উঠে আসবে। সেচ ব্যবস্থাও সহজ হবে। ভালো কিছুর প্রত্যাশায় রইলাম।
লেখক পরিচিতি: সাবেক শিক্ষার্থী ঢাবি ও জাতীয় পর্যায়ে ৫ বার পুরস্কারপ্রাপ্ত মৎস্য খামারি।
আপনার মতামত লিখুন :