গত ৪ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের ‘সন্ধ্যা থিয়েটার’-এ ‘পুষ্পা টু: দ্য রুল’ সিনেমার প্রিমিয়ারে একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এরপর তদন্তের কারণে গ্রেফতার করা হয় তেলেগু সুপারস্টার আল্লু অর্জুনকে। সম্প্রতি এই ঘটনায় অভিনেতাসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে চার্জশিট গঠন করা হয়েছে।
হায়দরাবাদের নামপল্লী আদালতের ৯ম অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম)-এর কাছে এই নথি জমা দিয়েছে পুলিশ।
গত ৪ ডিসেম্বর হঠাৎ জানা যায়, প্রিমিয়ারে যোগ নিচ্ছেন সিনেমার অভিনেতা আল্লু অর্জুন। এ খবর দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে থিয়েটারে ভক্তের সমাগম বাড়তে শুরু করে। যখন আল্লু অর্জুন থিয়েটারে উপস্থিত হন তখন দর্শকরা প্রবল ভিড়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। জনতার উপচেপড়া ভিড়ে থিয়েটারের প্রধান ফটক ভেঙে যায়।
নিরাপত্তারক্ষী ও থিয়েটার কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ভিড় নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জও করতে হয় পুলিশকে। এতে দর্শকের ভিড়ে পদদলিত হয়ে ৩৫ বছর বয়সী নারী রেবতী মারা যায়। শিশু শ্রীতেজও গুরুতর আহত হয়।
এরপর ভক্তের পরিবার সিনেমাটির নায়কসহ তার নিরাপত্তারক্ষী ও থিয়েটার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশ জানিয়েছে, এই ট্র্যাজেডি কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা ছিল না বরং এটি ছিল চরম অবহেলা ও নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের চূড়ান্ত উদাহরণ। চার্জশিটে আল্লু অর্জুনকে অভিযুক্ত করার মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, পরিস্থিতি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও তিনি থিয়েটারে উপস্থিত হয়েছিলেন। এমনকি পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে আগেভাগে সতর্ক করা হলেও তিনি তা আমলে নেননি এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো সমন্বয় ছাড়াই সেখানে যান।
চার্জশিটে আল্লু অর্জুন ছাড়াও সন্ধ্যা থিয়েটারের মালিক ও ব্যবস্থাপনা কমিটি, অভিনেতার ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপক এবং আটজন ব্যক্তিগত বাউন্সারের নাম রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, থিয়েটার কর্তৃপক্ষ ভিআইপিদের জন্য আলাদা প্রবেশপথের ব্যবস্থা করেনি। পাশাপাশি অভিনেতার বাউন্সারদের কিছু আচরণ ও অঙ্গভঙ্গি উত্তেজিত জনতাকে আরও বেপরোয়া করে তোলে, যা শেষ পর্যন্ত পদদলনে রূপ নেয়।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪-এ (অবহেলাজনিত মৃত্যু) এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে। এর আগে ডিসেম্বরে আল্লু অর্জুনকে সাময়িকভাবে গ্রেফতার করা হলেও পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান।