শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] গেল ঈদে ইউটিউবে মুক্তি পেয়েছিল ফারহান আহমেদ জোভান অভিনীত নাটক ‘রূপান্তর’। নাটকের গল্পটি মূলত একজন তরুণ চিত্রশিল্পীকে ঘিরে। যিনি শৈশবে ট্রেন দুর্ঘটনায় হারিয়েছেন পরিবারের সদস্যদের। যার ফলে তিনি জানতেই পারেননি তার বাবা-মা কে কিংবা কোন ধর্মের মানুষ। বড় হয়েছেন অনাথ আশ্রমে। বড় হয়ে হয়েছেন চিত্রকর। পেয়েছেন খ্যাতিও।
[৩] এর মধ্যে একজন ধনীর দুলালী তার আঁকায় মুগ্ধ হয়ে প্রেমে পড়েন। বিয়ের জন্য পারিবারিকভাবে প্রস্তাব দেওয়া হয় শিল্পীকে। কিন্তু তিনি জানিয়ে দেন, তার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়। এরপর চিকিৎসকের মাধ্যমে জানা যায়, তিনি আসলে একটি হরমোনজনিত বিরল জটিলতায় ভুগছেন। তিনি দেখতে পুরুষের মতো হলেও মানসিকভাবে তিনি একজন নারী।
[৪] নাটকটি নিয়ে ১৬ এপ্রিল সকাল থেকে নেটদুনিয়ায় শুরু হয়েছে তুমুল সমালোচনা। দিনজুড়ে অন্তত শতাধিক পোস্ট ও লাখ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে নাটকটির বিরুদ্ধে। বয়কটের ডাক এসেছে এর অভিনেতা জোভান ও স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের বিরুদ্ধেও।
[৫] তীব্র সমালোচনার মুখে এরমধ্যে রাফাত মজুমদার রিংকু পরিচালিত নাটকটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ইউটিউব থেকে। এমনকি বিষয়টি নিয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন কেন্দ্রীয় চরিত্রের অভিনেতা জোভান। এই বিষয়টিও ভালোভাবে নেননি অনেক সাংস্কৃতিক কর্মী ও শিল্পীরা। তেমনই একজন হচ্ছেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ও নাট্যাভিনেতা চারু পিন্টু। তিনি জোভানের ক্ষমা চাওয়ার প্রসঙ্গে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
[৬] বুধবার (১৭ এপ্রিল) ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে চারু পিন্টু বলেন, ‘এদেশে ভালো গল্প নির্মাণ হয়না কেন! কারন আমি তুমি সে আগডুম বাগডুম দিয়ে ভরা। চরিত্র নিয়ে সবসময় চ্যালেঞ্জ করতে হয় নিজের সাথে নিজের, মানুষের সাথেও নিজের। থিয়েটার থেকে আসা শিল্পীগণ যেটা হ্যাডম রাখে ভাইরাল শিল্পীরা তা রাখেনা।’
[৭] জোভান প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, ‘জোভানের পারফর্ম সেরকম খুব বেশি দেখা হয়নি। কিন্তু ট্রান্সজেন্ডার চরিত্র নিশ্চই ভালো করেছে। কিন্তু সামাজিক মৌলবাদিদের চাপের মুখে নিজের ক্ষমা প্রার্থনা চাওয়া একটা বোকাচাঁদ গোত্রের শিল্পী প্রমান করলো। চোখে যদি চোখ রেখে চ্যালেঞ্জ না জানাতে পারেন তাহলে পায়ে মেহেদি পরে ঘরেই থাকুন, পাবলিক প্লেসে এক্টিং করার দরকার নাই। বলছে কে এক্টিং করতে? কেন বিশ্বাস করতে পারছেন না আপনার চরিত্রের পাশেও হাজার মানুষ সমর্থন দেবে। নিজেকে ভাঙচুর-এর ভেতর দিয়েই একটা শিল্পীর জন্ম হয়। মোশাররফ করিম ছাইয়া ছাইয়া নাটকে দুর্দান্ত করেছেন, উনিতো অভিনয় করে চলেছেন। নগরকীর্তন সিনামা কী অসাধারণ। একজন অভিনেতার চোখ ও সিদ্ধান্ত খুব স্ট্রিকলি থাকতে হয়।’
[৮] সবশেষ এই চিত্রশিল্পী লেখেন, ‘অভিনেতা আর শিল্পী শব্দের ভেতর বিস্তর ফারাক। আপনার এই নতি স্বীকার শিল্পী বা অভিনেতা সুলভ আচারণও না। আপনাকে বলবো ভাড়াটে এক্টর। কেবল টাকার জন্য এসব আগডুম বাগডুম করেন।’ পোস্টের শেষে হ্যাসট্যাগ দিয়ে চারু পিন্টু লিখেছেন, ‘বয়কট ভিউখোর শিল্পীগণ’।
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :