মুযনিবীন নাইম: [২] জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে দুই ঘণ্টার জন্য প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
[৩] সোমবার সকাল নয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এরপর বেলা ১১টার দিকে অবরোধ কর্মসূচি শেষ করেন তারা।
[৪] আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের গেটে তালা দিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের ব্যানারে ‘অবরোধ’ লেখা সম্বলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে দেন তারা। ফলে প্রশাসনিক ভবনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্টদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
[৫] শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো,অছাত্রদের বের করে গণরুম বিলুপ্ত করা; নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা; ধর্ষণের ঘটনায় প্রক্টর ও মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষের অপরাধ তদন্ত করা এবং সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত চলাকালে তাদের প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া; মাদকের সিন্ডিকেট চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
[৬] অবরোধ চলাকালে এক শিক্ষার্থী বলেন, 'সিন্ডিকেট সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের কোনো বাস্তবায়ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন করতে পারেনি। তারা পাঁচ কর্মদিবস সময় চেয়েছেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় রোববার শেষ হলেও অছাত্রদেরকে বের তো দূরে থাক বরং প্রশাসন তাদেরকে নিয়ে ভাগবাটোয়ারার মিটিং করছে প্রতিনিয়ত। তাই পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা অবরোধ করছি।'
[৭] নিপীড়ন বিরোধী মঞ্চের সংগঠক ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন জলি বলেন, 'উপাচার্য গতকাল বলেছেন আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি অছাত্রদের বের করার। তিনি যদি আপ্রাণ চেষ্টা করেই থাকবে তাহলে এই পাঁচ দিনে অন্তত পাঁচশত শিক্ষার্থী বের করার কথা। যদি সেটা না পারেন তাহলে তিনি কোন নৈতিকতার বলে তিনি তার পদে আছেন সেই প্রশ্নটি করতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গত কয়েকবছর ধরে ঘুরে ঘুরে পদে আসছেন। আমরা জানিনা তার মধ্যে বিশেষ কি গুণ রয়েছে, কোনো বিশেষ গুণতো দেখতে পাই না। তিনি নিজেও নিপীড়নের দায়ে অভিযুক্ত, অসংখ্য নিপীড়নের ঘটনাকে তিনি উস্কে দিচ্ছেন। তাকে বারবার ক্ষমতায় বসিয়ে কি বুঝাতে চান আমরা বুঝি না।'
[৮] এদিকে, রবিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের প্রক্টর অফিসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের অবাঞ্ছিত সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন ও সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেলের সাথে গোপনে বৈঠক করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানের বিরুদ্ধে।
[৯] প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী
এমএন/এসসি/আইএফ