ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা এবার নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার (১৩ অক্টোবর) ‘লং মার্চ টু শিক্ষা ভবন’ পালন করবেন তারা।
তাদের দাবি, বহু প্রতীক্ষিত অধ্যাদেশ অবিলম্বে জারি করতে হবে, নয়তো আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তারা এখন এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছেন, যেখানে এক কদম পিছিয়ে আসা মানে বছরের পর বছর ধরে গড়ে ওঠা আশা ও আত্মত্যাগকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া।
তারা বলেন, এই ২৪-২৫ এ যে আন্দোলন শুরু হয়েছে, সেটা শুধু দাবি নয়, এটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের ইতিহাসে এমন সুশৃঙ্খল, পরিকল্পিত ও পরিণত আন্দোলন আগে দেখা যায়নি। আমরা আমাদের শেষ পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।
শিক্ষাভবন অভিমুখে লং মার্চ নিয়ে ইডেন কলেজ শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন মৌ বলেন, ‘আমরা ফিরব না, যতক্ষণ না অধ্যাদেশ ঘোষণার সময় চূড়ান্ত করা হয়।’
এ বিষয়ে বাঙলা কলেজ ১৭-১৮ সেকশনে শিক্ষার্থী মুত্তাকি বলেন, অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই শিক্ষা সিন্ডিকেটের দৃশ্যমান ও অদৃশ্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে। ২৪ সেপ্টেম্বর খসড়া প্রকাশের পর মতামত দেওয়ার জন্য ৭ কর্মদিবস সময় নির্ধারণ করা হলেও, এক মহল মরিয়া হয়ে উঠে, ফলে সেই সময়সূচি বাড়ানো হয়। গত ৯ অক্টোবর মতামত দেওয়ার সময় শেষ হলেও আমরা, শিক্ষার্থীরা, আশঙ্কা করছি—অধ্যাদেশ জারির পথে বাধা সৃষ্টি করতে সেই মহলের নেপথ্য কার্যক্রম এখনও চলমান।’
তিনি বলেন, ‘এ ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার একমাত্র উপায় হলো দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করা। কারণ এই অনিশ্চয়তার কারণে শিক্ষার্থীরা এখন স্বাভাবিকভাবে পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারছে না। আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছি, অধ্যাদেশ জারি না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। অক্টোবর চলবে ততদিন, যতদিন না অধ্যাদেশ জারি হবে। অক্টোবর হবে শিক্ষা সিন্ডিকেট ধ্বংসের মাস।’
ঢাকা কলেজ ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আবির মাহমুদ রবিন বলেন, ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের খসড়া প্রকাশের পর তা সংশোধন করার জন্য যে সময় দিয়েছিল নীতি নির্ধাকেরা তথা রাষ্ট্র তা ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে কিন্তু এখনো রাষ্ট্র কতৃক স্বীকৃত বা অনুমোদিত অধ্যাদেশ প্রকাশিত হয়নি। অন্যদিকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্যুতে বিভিন্ন মহলের ষড়যন্ত্র আমরা লক্ষ্য করছি, পাশাপাশি রাষ্ট্র কতৃক কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ বলা হয়নি যে কবে অধ্যাদেশ দেবে। সুতরাং যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে অধ্যাদেশ দেওয়া হয় এবং তা বাস্তবায়ন করে, সেই জন্য আমরা নতুন কর্মসূচিতে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে আমরা আন্দোলন করে আসছি তাই দ্রুত সময়ে মধ্যে অধ্যাদেশ জারি করলে আমরা শান্তিতে পড়ার টেবিলে ফিরতে পারব। যেহেতু এখনো এমন কিছু হয়নি তাই আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন হুমকির মুখে আছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আবারও নতুন কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হচ্ছি।
শিক্ষার্থীদের আশা, যত দ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারি করে তাদের পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে রাষ্ট্র তাদের সহায়তা করবে।