শিরোনাম
◈ সমমনাদের অসন্তোষ বাড়ছে, আসন বণ্টনে বিএনপি-র কঠিন সমীকরণ ◈ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থাকলেও বাড়ছে দারিদ্র্য—সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা ◈ ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ: ১২ গ্রুপে ৪৮ দল, একনজরে দেখুন কে কার প্রতিপক্ষ ◈ অবশেষে ‘শান্তি’ পুরস্কার পেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ◈ খালেদা জিয়ার এন্ডোস্কপি সম্পন্ন, বন্ধ হয়েছে পাকস্থলীর রক্তক্ষরণ ◈ নির্বাচনে অংশ নেওয়া জাতীয় পার্টির নিজস্ব ইচ্ছা: প্রেস সচিব ◈ লা‌তিন - বাংলা সুপার কা‌পে ব্রাজিলের কাছে পরা‌জিত বাংলাদেশ ◈ ব্রিটেনে অবৈধ ডেলিভারি ড্রাইভার অভিযানে ৬০ জনকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত, বাংলাদেশিও রয়েছেন আটক তালিকায় ◈ শেখ হাসিনার দুঃশাসনে খালেদা জিয়ার ওপর নেমেছিল নিপীড়নের ঝড়: তারেক রহমান ◈ মনোনয়ন পেলেন বিএনপির ১১ নারী প্রার্থী, কে কোন আসনে?

প্রকাশিত : ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৩:২৪ রাত
আপডেট : ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৬:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থাকলেও বাড়ছে দারিদ্র্য—সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির গল্প যতটা শোনা যায়, দারিদ্র্য হ্রাসের চিত্র ততটা আশাবাদী নয়। একসময় ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকা দারিদ্র্যের হার এখন অনেক ধীরগতিতে নেমে আসছে। চার বছর ধরে বাড়ছে দারিদ্র্যের হার। 

বলা হচ্ছে, প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও তার সুফল সবচেয়ে দরিদ্র মানুষের ঘরে পৌঁছাচ্ছে কম। বরং বৈষম্য আরও গভীর হচ্ছে, জীবিকা অনিশ্চয়তার বেড়াজালে আটকে যাচ্ছে লাখো পরিবার। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১০-১৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশের দারিদ্র্য হ্রাসের অগ্রগতি ছিল শক্তিশালী। সেই সময়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভোগব্যয়ও বাড়ছিল দ্রুত। কিন্তু ২০১৬ সালের পর প্রবৃদ্ধির কাঠামো বদলে যায়। উচ্চ আয়ের পরিবারগুলো বেশি লাভবান হয়, নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর আয় থমকে পড়ে। ফল হিসেবে ২০১৬-২২ সময়ে দারিদ্র্য হ্রাসের হার স্পষ্টভাবে কমে গেছে।

এখন দেশে ৩ কোটি মানুষের বেশি দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে। এ ছাড়া ৬ কোটি মানুষ, অর্থাৎ জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ যে কোনো বড় বিপর্যয়, অসুস্থতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অর্থনৈতিক আঘাতে আবারও দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যেতে পারে।

দেশের প্রতি ১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি দারিদ্র্য কমাচ্ছে মাত্র ০ দশমিক ৯ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার গড় যেখানে ১ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ প্রবৃদ্ধির গতি থাকলেও তা আর দারিদ্র্য মোকাবিলার শক্তিশালী ইঞ্জিন হয়ে কাজ করছে না।

রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র‌্যাপিড) নির্বাহী পরিচালক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু ইউসুফ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘দারিদ্র্য কমার গতি যা ছিল, এখন আর তা নেই। এটাই সবচেয়ে বড় সতর্কতা। প্রবৃদ্ধিকে কাগজে দ্রুত দেখানো সহজ, কিন্তু তার সুফল দরিদ্র মানুষের আয়ব্যয়ের বাস্তবতায় পৌঁছানোই মূল। বৈষম্য বাড়লে দারিদ্র্য স্থায়ী হয়, উন্নয়ন ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি, জলবায়ু-ঝুঁকি আর শহরাঞ্চলে চাকরি সৃষ্টির ধীরগতি আগামী কয়েক বছর দারিদ্র্য হ্রাসকে আরও কঠিন করে তুলবে। এখন নীতির লক্ষ্য হতে হবে আয় বাড়ানো, কর্মসংস্থান বিস্তৃত করা এবং সামাজিক সুরক্ষায় সঠিক মানুষকে শনাক্ত করা।’

এদিকে প্রতিবেদন বলছে, দারিদ্র্য বৃদ্ধির কারণ মোটা দাগে যথেষ্ট কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়া, চাকরি হারানো, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, মজুরি সেভাবে বৃদ্ধি না পাওয়া ইত্যাদি। ২০২৩-২৪ সালের মধ্যে ২০ লাখ কর্মসংস্থান কম হয়েছে। ২০২৫ সালে আরও ৮ লাখ কর্মসংস্থান কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এ সময়ে ব্যয় বেড়েছে বিভিন্ন খাতে। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিসহ সরকারি সহায়তা বিস্তৃত হয়েছে। তবে সুবিধাভোগী শনাক্তকরণের দুর্বলতা থাকায় প্রকৃত দরিদ্র পরিবারগুলোর একটি বড় অংশ কাক্সিক্ষত সহায়তা পাচ্ছে না। একই সঙ্গে মৌলিক সেবাগুলোর মানের উন্নতি খুব কম। স্কুলে ভর্তি বাড়লেও শেখার মানের ঘাটতি বড় বাধা। স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় বাড়ছে, কিন্তু মান স্থবির। দারিদ্র্য ধীরে কমার পেছনে আরেকটি বড় কারণ হলো মূল্যস্ফীতি। খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, তা নিম্ন আয়ের পরিবারে সরাসরি চাপ সৃষ্টি করছে।

প্রতিবেদনের হিসাবে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি বাংলাদেশের দারিদ্র্য ও আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্য হুমকির মুখে ফেলতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তন ২০৫০ সাল নাগাদ ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যুত করতে পারে। কৃষি খাতে জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। উৎস: বিডি-প্রতিদিন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়