মনজুর এ আজিজ : বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত শুল্ক চূড়ান্ত নয় বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেছেন, ওয়ান টু ওয়ান নিগোসিয়েশনের মাধ্যমে এটা ঠিক হবে। এ লক্ষ্যে আগামীকাল ৯ জুলাই ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের বৈঠক হবে।
বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে গতকাল বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর এ নিয়ে আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ওখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) আমাদের বাণিজ্য উপদেষ্টা আছেন। উনি তিন দিন আগে গেছেন। আজকেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দল যাচ্ছে। ৮ তারিখে মিটিং। ওদের ৮ তারিখ মানে আগামীকাল বুধবার খুব ভোরবেলা। মিটিংয়ের পর আমরা বুঝতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘ইউএসটিআরের সঙ্গে আলাপ করবেন উনি (বাণিজ্য উপদেষ্টা)। কালকের পর আপনারা বুঝতে পারবেন।’
মিটিংয়ে কি কোনো উন্নতি হওয়ার আশা করা যায়? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে সালেহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা আশা করি। যাই হোক, সেটার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা অন্য পদক্ষেপগুলো নেব।’
বৈঠকে কি কোনো উন্নতি হওয়ার আশা করা যায়- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আশা করি। যাই হোক, সেটার পরিপ্রেক্ষিতে অন্যান্য পদক্ষেপগুলো নেবো। এখন পর্যন্ত বৈঠকটা মোটামুটি পজিটিভ। গত ৬ জুলাই একটা মিটিং হয়েছে, সেটা মোটামুটি পজিটিভ।
চিঠি তো ইতোমধ্যে ইস্যু হয়ে গেছে- সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন কথা বলা হলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ওটা প্রেসিডেন্ট দিয়েছেন। এটা ফাইনাল না। এটা ওয়ান টু ওয়ান নেগোসিয়েশনে ঠিক হবে। চিঠি তো বহু আগে দিয়ে দিতো, ৩৫ শতাংশ। এইটা আবার ১৪টা দেশের জন্য বলছে একই। কিন্তু ওয়ান টু ওয়ান নেগোসিয়েশন হবে, সেজন্যই তো ইউএসটিআর’র সঙ্গে কথা বলা। এটা ফাইনাল না।
ভিয়েতনাম কমাতে পারলে বাংলাদেশ কেন সেভাবে কমাতে পারল না—এই প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা ঠিক যে আমাদের ঘাটতি মাত্র ৫ বিলিয়ন ডলার। ভিয়েতনামের ১২৫ বিলিয়ন ডলার। ওখানে কিন্তু ওরা মোটামুটি ছাড় দিতে পারে। কিন্তু আমাদের এত কম বাণিজ্যঘাটতি, তাই এত শুল্ক দেওয়ার তো ন্যায্যতা থাকে না।’
তিনি বলেন, ওরা যেটা করছে ব্ল্যাঙ্কেট কতগুলো করেছে। চায়নার জন্য আলাদা। একেবারে চায়নার একটা সিঙ্গেল হ্যান্ডেলে ডিল করে ওরা। আর বাকিরা… এটা যেটা করেছে ১৪টা দেশের একই বলেছে। এখন আমরা নেগোশিয়েট করবো।
চিঠিতে যে সমস্ত কন্ডিশন দেওয়া হয়েছে এগুলো কি ফুলফিল করা সম্ভব? সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখন তো আমি কিছু বলতে পারবো না।
রাজস্ব আয় নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, এবার কালেকশন যা হয়েছে- মোটামুটি, একেবারে বিরাট গ্যাপ না। আর আগামী বছর চেষ্টা করছি শুধু ট্যাক্স, ভ্যাট না দিয়ে সিস্টেমটা চেঞ্জ করলে দেখবেন কালেকশনটা অনেক বেশি হবে। লিকেজ হবে না, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আতাঁত করে কিছু করতে পারবে না। আমাদের ট্যাক্স ক্যাপাসিটি ভালো, কিন্তু আমরা সেটা ইউটিলাইজ করতে পারিনি। সে কারণে রেভিনিউ কিছুটা শর্ট।