শিরোনাম
◈ ঢালাও মামলা-গ্রেপ্তার গ্রহণযোগ্য নয়: তদন্তের আগে গ্রেপ্তার না করার পরামর্শ ড. শাহনাজ হুদার ◈ শেখ মুজিব স্বাধীনতা চাননি—ফেসবুক পোস্টে দাবি আমান আযমীর, ‘তারবার্তার’ প্রসঙ্গকে বললেন মিথ্যা ◈ ব্রাইট‌নের কা‌ছে চ্যাম্পিয়ন লিভারপুলের হার  ◈ আবারও গ্রেপ্তার হলেন আলোচিত-সমালোচিত সংগীতশিল্পী নোবেল ◈ যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছায় দেশত্যাগে প্রথম চার্টার্ড ফ্লাইট, প্রত্যাবাসিতদেরকে দেওয়া হলো ১ হাজার ডলার করে! ◈ জামিন পেলেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া ◈ ভারতীয় বিভিন্ন সংস্থার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা! ◈ ঢাকা দাবি পূরণের শহর, বাড়ছে দুর্ভোগ ◈ আটঘরিয়ায় জামায়াত অফিসে আগুন: ফায়ার সার্ভিস বলছে, জামায়াতের অফিসে আগুন নেভাতে গিয়ে কোরআন শরিফ দেখেননি ◈ চীন, হংকং ও সিঙ্গাপুরসহ বি‌ভিন্ন দে‌শে হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে ক‌রোনা ভাইরাস, ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে

প্রকাশিত : ২০ মে, ২০২৫, ০৩:৩০ রাত
আপডেট : ২০ মে, ২০২৫, ১২:০৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক বাড়ানোর জবাবে বাংলাদেশে পাল্টা ছাড়ের পরিকল্পনা

যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বাড়তি শুল্ক কমানোর জন্য আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করতে আসন্ন বাজেটেই অন্তত ১০০ ধরনের আমদানি পণ্যের শুল্ক কমাতে যাচ্ছে সরকার।

সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দেন।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান ছাড়াও আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক অনুবিভাগের নীতি শাখার সদস্য, প্রথম সচিব ও দ্বিতীয় সচিবরা উপস্থিত ছিলেন বৈঠকে।

বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ১০০টি ট্যারিফ লাইনের পণ্যে শুল্ক শূন্য করার প্রস্তাব করেছিলাম যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির বিষয়টি মাথায় রেখে।

“তখন তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) জিজ্ঞেস করেছিলেন, শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বেলায় কীভাবে সম্ভব? আমরা বলেছি, এটা সম্ভব না। তবে আমরা বিশ্লেষণ করেছি এসব পণ্যে শুল্ক ছাড় দিলে তার সুবিধা যুক্তরাষ্ট্রই পাবে।”

এক বা একাধিক সমজাতীয় পণ্যের নির্দিষ্ট শুল্ক হার ঠিক করা হয় ‘ট্যারিফ লাইন’ বা এইচএস কোড দিয়ে। তার মাধ্যমেই আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন হয়।

তেল, গ্যাস, অস্ত্র, ফাইটার বিমানের পার্টস, মিসাইল এমন ১৫-১৬টি পণ্যও এর মধ্যে রয়েছে, যা কেবল সরকার কেনে। আর সরকারি কেনাকাটার মাধ্যমেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো সম্ভব বলে ওই কর্মকর্তার ভাষ্য।

তিনি বলেন, অস্ত্র ও যুদ্ধ বিমান, মিসাইল জাতীয় পণ্য সরকার কিনলে তখন চুক্তির আওতায় শুল্কমুক্ত সুবিধা থাকে। ফলে রাজস্ব হারানোর শঙ্কা থাকে না।

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এদেশে আসে ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। আমদানি রপ্তানির ব্যবধান ঘোচাতে গত এপ্রিলে বিশ্বের শতাধিক দেশের ওপর বড় অংকের শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্রের ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।

বাংলাদেশের পণ্যের ওপর আগে থেকেই ১৫ শতাংশ শুল্ক ছিল। আরও ৩৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঢুকতে সব মিলিয়ে ৫২ শতাংশ শুল্কের হুমকিতে পড়ে বাংলাদেশের পণ্য।

বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। নতুন করে সম্পূরক শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত বড় ধাক্কা খেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়।

এ নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে সম্পূরক শুল্ক পুনর্বিবেচনা করতে ডনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি পাঠান প্রধান উপদেষ্টা।

বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত রাখার অনুরোধ করা হয় সেখানে।

বাংলাদেশের মত অনেক দেশই শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেন দরবার শুরু করে। কোনো কোনো দেশ মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক হার শুন্যের ঘরে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য বৈষম্য কমাতে বাংলাদেশ আগে থেকেই ১৯০ ধরনের পণ্যের শুল্কহার শূন্য রেখেছে। এবার আরও ১০০ ধরনের পণ্য সেই তালিকায় যুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে।

এক সপ্তাহের মাথায় নতুন ঘোষণা দেন ট্রাম্প। তিনি চীনের পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করার কথা বলেন। আর অন্য দেশগুলোর ক্ষেত্রে যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল, তা তিন মাসের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দেন। এই সময় দেশগুলোর পণ্যে ন্যূনতম ১০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপিত হবে বলে জানান।

আরো যা যা সিদ্ধান্ত: প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত এনবিআরের ওই কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “খুব বেশি রেভিনিউ আসবে না, সরকার বিপাকে পড়তে পারে, সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বাড়বে, সেসব জায়গায় কর না বসাতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।”

সেজন্য বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর প্রসঙ্গ এসেছে এবং করপোরেট কর হার অপরিবর্তিত রাখার কথা বলা হলেও শর্ত পালনে কিছু শিথিলতার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয় বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ব্যক্তি ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা মৎস্য, ডেইরি ও পোলট্রি খাতে বিনিয়োগ দেখিয়ে কর ছাড়ের সুবিধা নিয়েছেন। ওই সুযোগ তুলে দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে।

তবে বাড়ি, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট কেনার সময় কালো টাকা দিয়ে বিনিয়োগ করে সুযোগ বহাল রাখারই সিদ্ধান্ত এসেছে।

করপোরেট কর হার না বাড়লেও টার্নওভার কর দ্বিগুণ, ব্যক্তি করদাতার ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন কর ৫ হাজার টাকা, সর্বোচ্চ কর ৩০ শতাংশে উন্নীত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

অর্থ উপদেষ্টা আগামী ২ জুন টেলিভিশনের মাধ্যমে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করবেন। তা কার্যকর করা হবে অধ্যাদেশ আকারে। ভ্যাট ও শুল্ক তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়ে যাবে।

অন্য সময় সংসদে বাজেট অধিবেশনে এসব নিয়ে আলোচনা হলেও এবার সংসদ না থাকায় বিভিন্ন আলোচনা, টক শো, বাজেট প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো কিছুর সংযোজন বিয়োজন লাগলে তা করে পরে অর্থ আইন (অধ্যাদেশ) আকারে পাস করা হবে। উৎস: বিডিনিউজ২৪

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়