শিরোনাম
◈ রৌমারীতে পাহাড়ি ঢলে সাঁকো ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, ভোগান্তিতে ৩০ হাজার মানুষ ◈ পাকিস্তানকে নরক বলে বিতর্কের ঝড় তুললেন জাভেদ আখতার ◈ অভিনয়ের জন্য হয়রানি? নুসরাত ফারিয়ার গ্রেফতার নিয়ে প্রশ্ন ◈ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি-প্রোভিসি নিয়োগে সার্চ কমিটি ◈ ভারতের নিষেধাজ্ঞায়  প্রথম দিনেই রফতানি কমেছে ৬০ শতাংস ◈ আরব আমিরাতের বিরু‌দ্ধে আ‌রো এক‌টি ম্যাচ বাড়‌লো ◈ ১০ হাজারেরও বেশি হয়রানিমূলক রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত ◈ আওয়ামী লীগের ডিএনএতেই গণতন্ত্র নেই: সালাহউদ্দিন আহমদ ◈ সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়নে রেকর্ড গড়ল ২০২৪-২৫ অর্থবছর ◈ এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কলম বিরতি সাময়িক স্থগিত

প্রকাশিত : ১৯ মে, ২০২৫, ০৭:৫৯ বিকাল
আপডেট : ১৯ মে, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বেপজা : লুৎফে সিদ্দিকী

নিজস্ব প্রতিবেদক : বেপজা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর মধ্যে শ্রম সংস্কার বিষয়ক দুই বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা (২০২৫-২০২৭) বাস্তবায়নের জন্য লেটার অব ইনটেন্ট স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। 

বেপজাকে শ্রম ও পরিবেশগত মানের উৎকর্ষের প্রতীক হিসেবে অভিহিত করে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, বেপজার ইপিজেড সমূহ উচ্চমান, শ্রমিক কল্যাণ এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থার জন্য সুপরিচিত, যা অন্যদের জন্য একটি মডেল হিসেবে কাজ করে। ইপিজেড শ্রমিকরা ইপিজেডের বাইরের শ্রমিকদের তুলনায় ৩০-৪০ শতাংশ বেশি মজুরি এবং কল্যাণমূলক সুবিধা পান। বেপজা ও আইএলও’র এই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগিতামূলক মনোভাবের প্রশংসা করে তিনি বলেন, এটির বাস্তবায়ন শ্রমিকের অধিকার আরও জোরদার করবে, ইপিজেড শ্রম মানকে আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করবে এবং প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করবে।

বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান এবং আইএলও এর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পওটিয়াইনেন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এই লেটার অব ইনটেন্টের লক্ষ্য ইপিজেড সমূহে শ্রমিকদের অধিকার, সামাজিক সুরক্ষা এবং নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করা।

বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, বেপজা ও আইএলও এর মধ্যে এই দুই বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা ইপিজেডের শ্রম মান, শ্রমিক অধিকার এবং কর্মস্থলের নিরাপত্তা জোরদার করবে। এটি বাংলাদেশের জাতীয় কর্মপরিকল্পনা এবং জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা শোভন কাজ এবং সামাজিক সংলাপকে উৎসাহিত করবে।

তিনি বলেন, এ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক ক্রেতা ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে, ফলে দেশের রপ্তানি ও শিল্প সক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে এবং টেকসই শিল্প খাত গঠনে সহায়ক হবে। তিনি বেপজা এবং আইএলও এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সফল সহযোগিতার কথাও স্মরণ করেন।

বেপজার সাথে অতীতের সফল সহযোগিতার কথা স্মরণ করে আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর  টুমো পওটিয়াইনেন বলেন, আমরা শ্রম প্রশাসন, নৈতিক ব্যবসা চর্চা এবং আঘাতজনিত দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ (ইআইএস) এই তিনটি মূল ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার মাধ্যমে এই অংশীদারিত্বকে আরও গভীর করছি।

ইপিজেড পরিদর্শনের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বলেন, কর্মস্থলের নিরাপত্তা, শ্রমিক অধিকার, কল্যাণ, শিশু পরিচর্যা এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ মৌলিক অধিকার ইতোমধ্যেই ইপিজেডে ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত। এই লেটার অব ইনটেন্ট ইতিবাচক এই চর্চাগুলোকে আরও কাঠামোবদ্ধ করতে এবং সরকারের বৃহত্তর নীতিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে সহায়তা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বেপজা ইতোমধ্যে ইপিজেড সমূহের শ্রমিক সুরক্ষা এবং উন্নত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বেপজা, আইএলও এবং জিআইজেড মিলে ইপিজেডের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য আঘাতজনিত দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ (ইআইএস) চালুর জন্য একটি লেটার অব ইনটেন্ট স্বাক্ষর করেছে। যা শ্রমিক সুরক্ষায় একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।

বর্তমানে বেপজার অধীনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটটি ইপিজেড এবং চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া পটুয়াখালী ও যশোর জেলায় আরও দুটি ইপিজেড স্থাপনের কাজ চলছে। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বেপজা দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বেপজাধীন জোন সমূহে ৪৪৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে যেখানে সাড়ে ৫ লাখ বাংলাদেশি নাগরিক কর্মরত রয়েছেন। ইপিজেড সমূহে এ পর্যন্ত মোট বিনিয়োগ এসেছে ৭ দশমিক ১৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং মোট রপ্তানি হয়েছে ১১৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পণ্য।

উল্লেখ্য বেপজা তার জোন সমূহে কর্মরত শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজ করে থাকে। জোন সমূহের শ্রমিকদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ইপিজেডে হাসপাতাল অথবা মেডিকেল সেন্টার এবং শ্রমিকদের সন্তানদের পরিচর্যার জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করেছে। শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বেপজা বিভিন্ন ধরনের সচেতনতামূলক কার্যক্রমও পরিচালনা করছে। এছাড়া বেপজা পরিচালিত স্কুলসমূহে ইপিজেডের শ্রমিকদের সন্তানরা ভর্তুকি মূল্যে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে। 

অনুষ্ঠানে আইএলও’র টেকনিক্যাল অফিসার ছায়ানিচ থাম্পারিপাত্রা এবং বেপজার অতিরিক্ত নির্বাহী পরিচালক (শিল্প সম্পর্ক) নাজমুল ইসলাম ভূঁইয়া কর্মপরিকল্পনার মূল বিষয়সমূহ তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেপজার সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. আশরাফুল কবীর।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়