বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর দ্বিতীয় দিনেও দেশে ডলারের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানি এলসির (ঋণপত্র) জন্য অধিকাংশ ব্যাংক বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ডলার ১২২ টাকায় লেনদেন করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ব্যাংকগুলোর ট্রেজারি প্রধানদের এক অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয় বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তবে দুইটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ১২২ টাকা ৫০ পয়সা দরে কিনেছে। তারা জানিয়েছে, লাভের বিষয়টি বিবেচনা না করে গ্রাহকের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক ট্রেজারি প্রধান নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ওই দিন কোনও মৌখিক নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।
ব্যাংকারদের ভাষ্য, ঈদ সামনে রেখে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে, ফলে ডলারের সরবরাহও যথেষ্ট রয়েছে। এ কারণে বাজারে কোনও অস্বাভাবিকতা বা ডলার সংকট দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, এর আগের দিন (১৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর ঘোষণা দেয়। এর আওতায় ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে দর-দাম আলোচনা করে ডলার লেনদেন করতে পারবে, যা আইএমএফের শর্ত পূরণের একটি অংশ।
তবে বাজারভিত্তিক হার চালু হলেও এখনও একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে বিনিময় হার বজায় রাখতে হবে—এমন একটি 'অঘোষিত ব্যান্ড' থাকছে বলে ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনে বাজারে হস্তক্ষেপ করবে— ডলার কিনবে বা বিক্রি করবে।
এর আগে, ডলারের ক্রয় ও বিক্রয় দরের মধ্যে সর্বোচ্চ ১ টাকার ব্যবধান রাখার নির্দেশনা ছিল। ১৩ মে জারি করা একটি সার্কুলারের মাধ্যমে সেটিও বাতিল করা হয়েছে।
গত কয়েক মাস ধরেই ব্যাংকগুলো ১২২ থেকে ১২২.৫০ টাকা দরে ডলার লেনদেন করে আসছে। বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর পরও আপাতত সেই দামেই স্থিতি দেখা যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রকৃত বাজারভিত্তিক হার কার্যকর করতে হলে স্বচ্ছ ও নমনীয় নীতিমালার প্রয়োজন, যাতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ে এবং বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।