রিয়াদ ইসলাম, ঈশ্বরদী: [২] পাবনার ঈশ্বরদীতে সুমাইয়া খাতুন (২১) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে গিয়েছিলো তার স্বামী। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে। এ ঘটনার পর সুমাইয়ার শ্বশুরবাড়ির লোকজন গা ঢাকা দিয়েছেন। এদিকে সুমাইয়া হত্যার বিচার ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করেছে নিহতের স্বজনরা।
[৩] বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা সদরের রেলগেট এলাকায় এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। রোদ-গরম উপেক্ষা করে শত শত নারী ও পুরুষ এতে জড়ো হয়েছিলেন।
[৪] নিহত গৃহবধূর পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সোমবার উপজেলার পূর্ব টেংরি কদমতলা গ্রামে শোবার ঘর থেকে গৃহবধূ সুমাইয়াকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করেন পরিবারের লোকজন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থানা-পুলিশকে বিষয়টি জানায়। একপর্যায়ে গৃহবধূর মরদেহ হাসপাতালে রেখে তার স্বামী পালিয়ে যান।
[৫] পারিবারিক অসম্মতিতে ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর সুমাইয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের ছয়মাস পর মেয়ের পরিবার মেনে নেয়। এরপর যৌতুক দেওয়া হয়। তবে অল্প কয়েক মাস যাওয়ার পর আবার যৌতুকের টাকার জন্য শুরু হয় নির্যাতন। সম্প্রতি সুমাইয়াকে বাবার বাড়ি শহরের পশ্চিম টেংরি কাচারিপাড়া গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মৃত্যুর দুইদিন আগে দুই পরিবারের সমঝোতার ভিত্তিতে সুমাইয়াকে স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল।
[৬] শহরের পশ্চিম টেংরি কাচারিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আরমান মন্ডল জানান, তার মেয়ে পূর্ব টেংরি কদমতলা এলাকার মৃত দৌলত খাঁনের ছেলে তালাত মাহামুদ আকাশ খাঁনের সঙ্গে বিয়ে করেন। গত সোমবার বেলা ১২টার পর প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পারেন পারিবারিক বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। এরপর জানতে পারেন তার মেয়ে মারা গিয়েছে। পরে মেয়ের স্বামীসহ পরিবারের লোকেরা মেয়ের মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান।
[৭] আরমান মন্ডলের দাবি, রোববার রাতে তার মেয়েকে নির্যাতন করা হয়েছে। এরপর তার মৃত্যু হলে গলায় ফাঁস দিয়ে ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালানো হচ্ছে। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
[৮] মরদেহের সুরতহাল তৈরির সঙ্গে যুক্ত ঈশ্বরদী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়ে মরদেহের ময়নাতদন্ত করেছেন। এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না মৃত্যুর কারণ। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে সঠিক কারণটি বোঝা যাবে।
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :