খন্দকার রাকিবুল ইসলাম, রংপুর: [২] মিঠাপুকুরে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় কেন্দ্রের বাইরে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় এক শিক্ষককে কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
[৩] বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে রবিউল ইসলাম নামে এক শিক্ষকের এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ফটোকপি ব্যবসায়ী খায়রুল বাশারকে ২০০ টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বিকাশ চন্দ্র বর্মণ।
[৪] জানা যায়, বৃহস্পতিবার ইংরেজি ২য় পত্রের পরীক্ষা চলছিলো। পরীক্ষা চলাকালে উপজেলার রাণীপুকুর এরশাদ মোড়ে রাইজিং পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ খায়রুল বাশারের ফটোকপির দোকান বাশার এন্টারপ্রাইজে প্রশ্নের উত্তরপত্র ফটোকপি ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের দায়ে এক শিক্ষককে আটক করা হয়। অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম খোড়াগাছ স্কুল এন্ড কলেজের (নন এমপিওভুক্ত) সহকারি শিক্ষক। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয় এবং পরীক্ষা চলাকালীন অবস্থায় ফটোকপির দোকান খোলা রাখার অপরাধে বাশার এন্টারপ্রাইজকে ২০০ টাকা জরিমানা হয়।
[৫] এদিকে উপজেলার বৈরাতী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা চলাকালীন সময় সকাল ১০:১৫ মিনিটে বহিরাগত কয়েকজন যুবকের মোবাইল ফোনে কেন্দ্রের ভিতর থেকে প্রশ্ন আসে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তায় দেখা যায়, কেন্দ্র সংলগ্ন শমেসের চায়ের দোকানে বসে হোয়াইটস্অ্যাপ ব্যাবহার করে উত্তরপত্র কেন্দ্রের ভিতর সরবরাহ করছেন তারা।
[৬] বিদ্যালয়ের কেন্দ্রসচিব ও প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়ে বিষয়টি অস্বীকার করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, একজন পরিক্ষার্থী পরিক্ষা শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যে মোবাইল ফোন নিয়ে বাথরুমে গেলে সাথে সাথে তার মোবাইল জব্দ করে ট্যাগ অফিসারের হাতে তুলে দেই।
[৭] রাণীপুকুর স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব আব্দুল্লাহেল কাফি বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক খোড়াগাছ স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক। তিনি পরীক্ষা কেন্দ্রের কোন দ্বায়িত্বে ছিলেন না। ওনি পরীক্ষার হলে ঢুকতে পারেন নাই। ওনাকে তার আগেই আমি আটকিয়েছিলাম। পরপর ৩ দিন কিভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকলেন একজন বহিরাগত শিক্ষক আর প্রশ্নইবা কোথায় পেলেন অন্যদিকে সাংবাদিক শিক্ষা অফিসের লিখিত অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে পারবে না মর্মে সংবাদকর্মীকে হেনস্তার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমার অগোচরে বহিরাগত শিক্ষক প্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। আর সংবাদকর্মীকে হেনস্তা করিনি। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমি সৎ মানুষ। তাই আমাকে বিভিন্নভাবে ফাঁসানো হচ্ছে। প্রশ্নপত্র শিক্ষক কোথায় পেয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বালারহাট থেকে প্রশ্ন সরবরাহ করেছে বলে অভিযুক্ত শিক্ষক জানিয়েছেন।
[৮] এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিকাশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক রবিউল ইসলামকে এক মাসের কারাদন্ডসহ ফটোকপি ব্যবসায়ীকে ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।অভিযুক্ত শিক্ষক প্রশ্নপত্র কিভাবে পেলো সে বিষয়ে জানা যায়নি। তিনি আরো বলেন, বৈরাতী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন সময় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় অভিযুক্তদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
[৯] প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারী) ইংরেজী প্রথমপত্র পরীক্ষায় রাণীপুকুর স্কুল এ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে শাহ আবুল কাশেম দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল কাদের সুজনের স্থলে ভুয়া পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করায় সাকিবুল হাসান (১৮) নামে এক শিক্ষার্থীকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। দন্ডপ্রাপ্ত সাকিবুল হাসান মানিকগঞ্জ জেলার পারুলিয়া দৌলতপুর এলাকার আনছার আলীর ছেলে।
প্রতিনিধি/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :