এএইচ রাফি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: [২] সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক সাকিল হোসেন (৪০)। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালিয়ে চলে তার জীবন। কিন্তু অন্য সব সাধারণ চালকের মতো নন সাকিল। একহাতের কব্জি নেই তার। তারপরও অন্যের বোঝা না হয়ে থেমে থাকেনি তার জীবন সংগ্রাম। কব্জি ছাড়া এক হাতেই চালান সিএনজি চালিত অটোরিকশা।
[৩] ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থেকে সদর উপজেলায় ফেরার পথে এই প্রতিবেদকের সাথে সাকিল হোসেনের। কব্জি ছাড়া এক হাতে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালিয়ে আসেন সাকিল। কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে।
[৪] সাকিল জানান, তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সদরের পাঠানপাড়া গ্রামে। তার পিতার নাম মৃত নান্নু শেখ। ৪ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে সাকিল ৩য়। জন্মের সময়েই আমার ডান হাতের কব্জি ছিল না। আমাদের পরিবারও তেমন স্বচ্ছল ছিল না। তাই পড়ালেখা আর করা হয়নি। বাবা মারা গেছেন অনেক বছর হয়ে গেছে। ভাইয়েরা যে যার মতো চলতে শুরু করে। আমাকেও আলাদা করে দেয়। ফলে আমার বয়স যখন ১৫ তখন থেকেই বিভিন্ন পেশায় কাজ করা শুরু করি। পরে এক হাতে কব্জি ছাড়াই সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালানো শিখি। গত ২০/২২ বছর ধরে সিএনজি চালিয়ে আসছি।
[৫] তিনি বলেন, এরই মাঝে আমি বিয়ে করি। আমি এখন দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। এমনিতে সুখে আছি।
[৬] সাকিল আরও বলেন, জীবিকার তাগিদে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সরাইল-নাসিনগর সড়কে সিএনজি চালাই৷ তাও আবার মালিক থেকে ভাড়া নিয়ে। মালিকের ভাড়া দিয়ে যা আয় থাকে তা নিয়ে সংসার চালাতে কষ্ট হয়। কোন দিন আয় থাকে ৪০০ টাকা, আবার কোন দিন থাকে ৫/৬শ’ টাকা। কিন্তু জিনিস পত্রের যে দাম, তা দিয়ে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে সংসার চালানো কষ্টসাধ্য। এরমাঝে সম্প্রতি শুরু হয়েছে হরতাল অবরোধ। রাস্তায় মানুষের চলাচল কম। কোন দলই গরীবের কথা ভাবে না।
প্রতিনিধি/একে