শিরোনাম
◈ আমিরাতে ভিসা সংকটে বাংলাদেশি কর্মীরা: অনিশ্চয়তায় কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স প্রবাহ ◈ কিশোরগঞ্জে যুবদলের দুই পক্ষের সংঘর্ষে  যুবক নিহত আহত ৩০ ◈ সাড়ে ১৩ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা—সমাধান খুঁজতে কক্সবাজারে সম্মেলন ◈ ২০১৮ সালের নির্বাচনের বদনাম ঘোচাতে চায় পুলিশ: ডিএমপি কমিশনার ◈ নেপালে মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকের প্রচার, তাসনিম জারার ব্যাখ্যা ◈ জীবনের শেষ চিঠিতে যা লিখে গেছেন বিভুরঞ্জন ◈ দুবাইয়ে কোটিপতিদের স্রোত: কারণ কী?” ◈ বেনাপোল বন্দরে প্রথম চালানে ৩১৫ টন চাল আমদানি  ◈ মেঘনায় উদ্ধার হওয়া লাশটি সাংবাদিক বিভুরঞ্জনের, নিশ্চিত করলেন স্বজনেরা ◈ জুলাই সনদ নিয়ে মতামত দিয়েছে ২৩টি দল

প্রকাশিত : ০১ মার্চ, ২০২৩, ০২:১৪ দুপুর
আপডেট : ০১ মার্চ, ২০২৩, ০২:১৪ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শিমুল ফুলে প্রকৃতি সেজেছে নতুন রূপে

শিমুল ফুল

মনিরুজ্জামান: দ্বীপ জেলার বোরহানউদ্দিন  উপজেলার বিভিন্ন  এলাকায় গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল। নাকে ভেসে আসছে শিমুল ফুলের ঘ্রাণ। প্রকৃতি যেন  সাজছে শিমুল ফুলের শোভায় । কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতানে ফাগুনের উত্তাল হাওয়া দিচ্ছে দোলা।বাতাসে দোল খাচ্ছে শিমুল ফুলের রক্তিম আভায়।  গাছের ডালে ফুটে থাকা শিমুল ফুলে মানুষের মনকে যেন রাঙিয়ে তুলেছে। সব মিলিযে শিমুল ফুলে এখন বসন্তের হাসি।

 সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিষয়ের সহকারী নীল কমল পাল,কৃষি শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক এএইচএম মোস্তফা কামাল বলেন, বসন্তের শুরুতে শিমুল গাছে ফুল ফোটে। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে যায়। তখন বাতাসে আপনা আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সঙ্গে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই এর জন্ম হয়। প্রাকৃতিকভাবেই শিমুল গাছ বেড়ে উঠছে।

তাছাড়া  বালিশ, লেপ ও তোষক তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই। শিমুল গাছ কেবল সৌন্দর্যই বাড়ায় না এই গাছে রয়েছে নানা উপকারিতা এবং অর্থনৈতিকভাবে ও বেশ গুরুত্ব বহন করছে।

প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন হচ্ছে শিমুল গাছ। এ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজগুণ। আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকরা এখনো নানা রোগের চিকিৎসায় এ গাছের বিভিন্ন অংশ ব্যবহার করে। শিমুল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম বোমবাক্স সাইবা লিন। বীজ ও কাণ্ডের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তার হয়।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায় গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে শিমুল ফুল। পাশাপাশি বসন্তের সঙ্গে সঙ্গেই প্রকৃতি যেন নিজ রূপে সেজে উঠেছে । রাস্তার দু’পাশে, পুকুরপাড়ে  শিমুল গাছে ফুল বাতাশে দোলা খাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়।  পথচারিসহ দর্শনার্থীদের  মন কাড়ছে শিমুল ফুল ।  লাল ফুলের কারণে পুরো এলাকায় হয়ে উঠেছে রক্তিম আভা।

মেঘনার পাড় এলাকায়  ঘুরতে আসা মো. মহসিন মিয়া,আব্দুর রহমান,বকুল বেগম বলেন, শিমুল ফুলের সৌন্দর্য সত্যিই মুগ্ধ করবে যে কাউকে। সময় সুযোগ হয়ে উঠে না ঘুরতে। অনেক দিন ধরে শিমুল ফুল দেখতে পরিকল্পনা ছিল।  খুবই ভালো লাগছে।

 সাচড়া ইউনিয়নের আকবর ভিটা এলাকায় ঘুরতে আসা  রহমান শেখ ও হাফসা ,জেএম মমিন,আবুল কালামবলেন, অনেক দিন পর ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসা। তাই দুজন বিকালে ঘুরতে বের হয়েছেন। বাড়ি সংলগ্ন পুকুর পাড়ে রক্ত রাঙা শিমুল ফুল দেখে সত্যিই অভিভূত।

দেউলা ইউনিয়নের এথছহাক  মিয়া বলেন, তার ২টি গাছে ভালো শিমুল ফুল এসেছে। আসা যাওয়ার পথে মানুষের নজর কাড়ছে। তিনি আশা করছেন এবার ৪-৫ হাজার টাকার তুলা বিক্রি হবে।

অন্যান্য গাছের মতো এ গাছ কেউ শখ করে রোপণ করে না। নেওয়া হয় না কোনো যত্ন। প্রাকৃতিকভাবেই গাছ বেড়ে ওঠে। এ গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে। এর ছাল, পাতা ও ফুল গবাদিপশুর খুব প্রিয় খাদ্য।

বর্তমানে মানুষ এ গাছ কারণে-অকারণে কেটে ফেলছে মানুষ। অতীতে নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ও ইটভাটার জ্বালানি, দিয়াশলাইয়ের কাঠি হিসেবে ব্যবহার হলেও সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি। ফলে আজ বিলুপ্তির পথে শিমুল গাছ। 

কুতুবা ইউনিয়নের বাসিন্দা ইস্রাফিল আলম বলেন, আগে গ্রামে প্রচুর শিমুল গাছ ছিল। এখন আর দেখা যায় না। একটি বড় ধরনের গাছ থেকে তুলা বিক্রি করে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। আগের যুগে শিমুল তুলা দিয়ে লেপ, তোশক ও বালিশ তৈরি করা হতো। কিন্তু শিমুল তুলার মূল্য বৃদ্ধিতে গার্মেন্টের জুট কাপড় দিয়ে তৈরি তুলা, পাম্পের তোশক, বালিশসহ পঞ্চ, কাপাশ তুলা আজ স্থান দখল করে নিয়েছে। '

লোপ তোষক তৈরির  প্রতিষ্ঠান রাকিব বেডিং এর মালিক ইব্রাহিম খোকন বলেন, প্রতিকেজি শিমুল তুলা ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রয় হয়।দাম বেশি হওয়ার কারণে এখন মানুষ তুলার পরিবর্তে ফাইবার ও উল দিয়ে লেপ,তোষক বানায়।

বোরহানউদ্দিন উপজেলার বন বিভাগের ফরেস্ট গার্ড(এসডি) মাসুদ রানা  বলেন,শিমুল গাছ লাগানোর আলাদা প্রকল্প নাই।তবে আমরা বিভিন্ন রাস্তা ও উপকূলীয় রক্ষা বাধেঁ লাগিয়ে থাকি।

বন ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংশ্লিষ্টরা জানান, বাণিজ্যিকভাবে এখন দেশের কোথাও এই শিমুলগাছ বা তুলা চাষ করা হয় না। এটি প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠে। যার কারণে শিমুলগাছ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। এর তুলাটা খুবই ভালো এটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ হলে মানুষ আসল তুলার মর্ম বুঝত।

প্রতিনিধি/জেএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়