শিরোনাম
◈ জামায়াতের সঙ্গে জোট করার কারণ জানাল এনসিপি (ভিডিও) ◈ নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করলেন মাহফুজ আলম ◈ দেশে প্রবাসী আয়ে রেকর্ড ঢল: ডিসেম্বরের প্রথম ২৭ দিনে এলো ৩৩ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা ◈ জানুয়ারিতে চালু হবে ঢাকা-করাচি সরাসরি ফ্লাইট  ◈ হাদির খুনিদের দুই সাহায্যকারীকে আটকের দাবি নাকচ করল মেঘালয় পুলিশ ◈ অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই হাদি হত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে,আগামী ১০ দিনের মধ্যে চার্জশিট : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ◈ নির্বাচন ও গণভোট সামনে রেখে ৮ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইসির চিঠি ◈ তাহেরির মাহফিল বন্ধ করেছে উপজেলা প্রশাসন, জানা গেল কারণ ◈ সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বর্ণনা প্রত্যাখ্যান বাংলাদেশের ◈ নির্বাচনকে সামনে রেখে সাইবার নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

প্রকাশিত : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৭:০৬ বিকাল
আপডেট : ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চরভদ্রাসনে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত জনজীবন

চরভদ্রাসন এবং সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলায় গত কয়েকদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। হাড়কাঁপানো এই শীতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের, দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।

এলাকায় এখনো অনেক শীতার্ত মানুষ সরকারি কম্বল পাননি। একই সঙ্গে কোনো বেসরকারি বা সামাজিক প্রতিষ্ঠানকেও শীতবস্ত্র নিয়ে অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের দেখা না পাওয়ায় শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। বিশেষ করে ছিন্নমূল মানুষ, খেটে খাওয়া দিনমজুর, কৃষক ও কৃষিশ্রমিকরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। তীব্র শীতের কারণে অনেক কৃষক ও শ্রমিক নিয়মিত মাঠে কাজ করতে পারছেন না। জীবিকার তাগিদে কাজে গেলেও ঠান্ডা বাতাসে শরীর অবশ হয়ে আসছে।

শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ। এতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা। পর্যাপ্ত গরম কাপড়ের অভাবে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহানোর চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ একটি কম্বলের আশায় দিন পার করছেন।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের হিন্দু বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা রাবেয়া বেগম বলেন, “কয়দিন ধরে খুব টাল শীত পড়ছে। দিনে আগুন জ্বেলে কোনোরকমে সময় কাটানো যায়, কিন্তু রাইতে কষ্ট বেশি হয়। একটা কম্বল থাকলে রাইতে আরামে ঘুমাতে পারতাম।”

চর ঝাউকান্দা ইউনিয়নের গোপালপুর এলাকার কৃষিশ্রমিক আব্দুল মজিদ বলেন, “এখন প্রতিদিন পেঁয়াজের চারা লাগানোর কাজ করি। ভোরে উঠে মাঠে যেতে হয়। ঠান্ডা বাতাসে কাজ করতে গেলে শরীর অবশ হয়ে আসে। সরকারি কোনো সহায়তাই আমাদের কপালে জোটে না।”

এ বিষয়ে চর হরিরামপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান বিল্লাল বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে চরভদ্রাসনসহ চর হরিরামপুর ইউনিয়নে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে সাধারণ মানুষের জীবন চরম দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের নিম্নআয়ের মানুষ, দিনমজুর, বয়স্ক ও শিশুদের কষ্ট সবচেয়ে বেশি। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে শীতার্তদের তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া মাত্রই প্রকৃত অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।”

ঝাউকান্দা ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মান্নান শেখ বলেন, “আমরা এখনো কোনো কম্বল পাইনি। এই তীব্র শীতে মানুষ খুব কষ্টে আছে। দ্রুত কম্বল সরবরাহ করা হলে সাধারণ মানুষের অনেক উপকার হবে।”

চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাফিজুর রহমান বলেন, “শীতের প্রকোপ বাড়ার কারণে বর্তমানে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক এবং যাদের আগে থেকেই হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে, তাদের ঝুঁকি বেশি। সবাইকে পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরিধান করতে হবে এবং শিশু ও বয়স্কদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে।”

এ বিষয়ে চরভদ্রাসন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলেন, “তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে চরভদ্রাসনের জনজীবন মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বরাদ্দ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও এখনো কম্বল হাতে পাওয়া যায়নি। বরাদ্দ পাওয়া মাত্রই ইউনিয়ন পরিষদগুলোর মাধ্যমে দ্রুত প্রকৃত শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হবে।”

এদিকে দ্রুত শীতবস্ত্র বিতরণ না হলে চরভদ্রাসনের নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়