রুকুনুজ্জামান, পার্বতীপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ যতই দিন ঘনিয়ে আসছে ততই শিল্পীরা নিখুঁত রং তুলিতে দেবীকে অপরুপ সাজে সাজিয়ে তুলছেন। নর-নারী, তরুন-তরুণী এমনকি বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও দেবীর আর্শিবাদ পাওয়ার আশায় দেবীর আগমনের প্রতিক্ষার প্রহর গুনছে। এবার পার্বতীপুর পৌরসভা ও ১০ ইউনিয়নে ১৩৮টি মন্ডপে হিন্দু ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূঁজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। হিন্দু ধর্মাবল্বমীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজাকে ঘিরে পার্বতীপুরে প্রতিমা শিল্পীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। পার্বতীপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্ডপে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে থাকবে সিসি ক্যামেরা। উপজেলা প্রশাসন দূর্গাপুজা শান্তিপূর্ণভাবে ও উৎসব মূখর পরিবেশে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় উপজেলার পৌরসভা ও ১০ ইউনিয়নের পূজা উদযাপন কমিটি নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এ দূর্গোৎসব শুরু হবে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বোধনের মধ্য দিয়ে। বাকি আর মাত্র ৬দিন। হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ এ ধর্মীয় উৎসব কে ঘিরে ইতিমধ্যেই উপজেলার প্রতিটি মন্ডপ সাজানোর ধুম পড়েছে। প্রতিমা তৈরীর শিল্পীরা তাদের সর্বমেধা দিয়ে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। উপজেলায় এবার ১৩৮টি পূজা মন্ডপ তৈরী হচ্ছে। এরমধ্যে উপজেলার বেলাইচন্ডি ইউনিয়নে ২৩, মন্মথপুর ইউনিয়নে ২৫, রামপুর ইউনিয়নে ১৩, পলাশবাড়ী ইউনিয়নে ৯, চন্ডিপুর ইউনিয়নে ১১, মোমিনপুর ইউনিয়নে ১২, মোস্তফাপুর ইউনিয়নে ৭, হাবড়া ইউনিয়নে ১১, হামিদপুর ইউনয়নে ৩, হরিরামপুর ইউনিয়নে ১১ টি এবং পৌরসভায় ১৩টি পুজা মন্ডপে দূর্গাপুজা অনুষ্ঠানের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তবে, পৌরসভাসহ ১৩ ইউনিয়নের ১২৫টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। পূজামন্ডপ গুলোতে সাড়ম্বরে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রতিমা শিল্পীরা দিন-রাত ব্যস্ত প্রতিমা নির্মাণে। এবার গজ হাতিতে দূর্গা মা’র আগমন। রাত-দিন পরিশ্রম করে শিল্পীরা তৈরি করছেন দূর্গা, শিব, লক্ষী, স্বরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, মহিষ, অসুর, সিংহের মৃন্ময় মূর্তি। প্রতিমা সৌন্দর্য আর চাকচিক্য নিয়ে বিভিন্ন মন্ডপে চলছে নীরব প্রতিযোগিতা। এই শারদীয় দূর্গোৎসবকে ঘিরে নানা আয়োজনে ব্যস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। শারদীয়া দুর্গা উৎসবকে ঘিরে প্রতিমা তৈরী নিয়ে মহাব্যস্ত সময় পার করতেছে প্রতিমা শিল্পীরা। কাদা-মাটি, খড়-কাঠ আর প্রতিমা নিয়েই এখন দিন-রাত কাটছে তাদের। শিল্পীরা নিখুঁত রং তুলিতে দেবীকে অপরুপ সাজে সাজিয়ে তুলছেন। গ্রাম-শহর, বাসা-বাড়ী’র পারিবারিক মন্দির গুলোতেও দূর্গা
প্রতিমা তৈরী কাজে রাত-দিন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শিল্পীরা। চলছে পুজার কেনাকাটা। বাংলাদেশ পুজা উদযাপন পরিষদ পার্বতীপুর উপজেলা সভাপতি শ্রী কৈলাশ প্রসাদ সোনার বলেন, পৌরসভায় ১৩টা ও উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ১২৫টি মোট ১৩৮টা মন্ডপে পূজা উৎযাপন হবে। চলতি মাসের ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠি পূজার মধ্যদিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্ম্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় শারদীয় দুর্গোৎসব। ২৯ সেপ্টেম্বর সপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর অষ্টমী, ১ অক্টোবর নবমী, ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনের উৎসব।
পার্বতীপুর উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, এবার দূর্গাপুজা মন্ডপে নিরাপত্তার দায়িত্বে কতজন আনসার-ভিডিপি সদস্য মোতায়েন করা হবে তার সঠিক তথ্য দিতে পারেনি এই কর্মকর্তা। এমনকি উপজেলায় এবার কতগুলো মন্ডপে পুজা উদযাপন হবে এর সঠিক তথ্য তিনি জানাতে পারেনি। এখনও তালিকা চলমান রয়েছে বলে তিনি দাবী করেন। অথচ শারদীয় দূর্গা পুঁজার বাকি আর মাত্র ৬দিন। পার্বতীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্রতিটি মন্ডপে পুলিশের পাশাপাশি আনছার-ভিডিপি ও গ্রাম পুলিশ চৌকিদার নিয়োগ করা হয়েছে।
এব্যাপারে পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাদ্দাম হোসেন বলেন, পূজা শুরুর আগেই উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিটি মন্ডপে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়েছে। সেই সাথে পূজা উদযাপন কমিটিকে মন্ডপে সিসি ক্যামেরা রাখতে বলা হয়েছে। দূর্গাপুজা শান্তিপূর্ণভাবে ও উৎসব মূখর পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য প্রতিটি মন্ডপের নিরাপত্তার দায়িত্বে আনসার-ভিডিপি সদস্য ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সাথে আমরা সেনা বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি।