এস. এম সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল মৎস্যভান্ডার নামে খ্যাতবিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে জিউধরা ইউনিয়নে ৩ কিলোমিটার একটি ইটসোলিং রাস্তার বেহাল দশা। বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দে পরিনত হয়ে চলাচলে ৮ গ্রামের লাখো মানুষের দুর্ভোগ চরমে। স্থানীয়দের দাবি জনগুরুত্বপূর্ন এ রাস্তাটি পুন:নির্মাণ করে জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘব করার। এদিকে মোংলা বন্দরে যেতে শত শত শ্রমিক পড়েছে চরম বিপাকে।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নে বরইতলা পাশখালী হয়ে লক্ষিখালী বাজার অভিমুখি ৩ কিলোমিটার ইট সোলিং রাস্তাটি দীর্ঘ ১৫ বছরেও সংস্কার না হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে বড় বড় খানা খন্দে পরিনত হয়েছে। যে কারনে জনগুরুত্বপূর্ন এ রাস্তাটি থেকে প্রতিনিয়ত বরইতলা, পাশখালী, লক্ষিখালী, ঠাকুরনতলা, ভাইজোড়া, ডুমুরিয়া, বাইনতলা ও সোমাদ্দারখালীর ৮ গ্রামের ৭/৮ হাজার মানুষের চলাচলের অভাবনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা পড়েছে বিপাকে। এ রাস্তাটি থেকে প্রতিদিন দক্ষিণ বাংলা কলেজ, আলোকিত বাংলা ট্যাকনিক্যাল কলেজ, হাজী রাজাউল্লাহ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সোমাদ্দারখালী তালিমুননেছা মহিলা দাখিল মাদ্রাসা, সোমাদ্দাখালী দাখিল মাদ্রাসা ২টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শত শত শিক্ষার্থীরা যাচ্ছেন পাঠদানে।
এছাড়াও বরইতলা কমিউনিটি ক্লিনিক লক্ষিখালী বাজার শ্রীধাম লক্ষীখালী গোপালচাঁদ সেবাশ্রমসহ গুরুত্বপূর্ন স্থাপনাগুলোতে মানুষের যাতয়েত করতে হয় এ রাস্তা থেকে। এমনকি পাশ্ববর্তী মোংলা বন্দরে এ অঞ্চলের শত শত শ্রমিক যাচ্ছে দৈনন্দদিন কাজে। বর্ষা মৌসুমে এ রাস্তাটি থেকে যাতায়াত করতে গিয়ে শিশু বৃদ্ধরা অনেকেই দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। গ্রামের কোন মানুষ অসুস্থ হলে জরুরি ভিত্তিতে অ্যাম্বুলেন্স সহ কোন যানবাহনে চিকিৎসায় নেওয়ারও ব্যবস্থা থাকছে না। ১৫ বছর আগে রাস্তায় ইট বসেছে এ রাস্তাটিতে পরবর্তীতে আর কোন উন্নয়ন বা সংস্কারের কাজ হয়নি। ইউপি নির্বাচনের প্রতিহিংসার জলঞ্জলি দিতে হয়েছে গ্রামের সাধারণ মানুষকে উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে বিগত ১৫ বছর ধরে।
পাশখালী গ্রামের মাদ্রাসার শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ, অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মিজানুর রহমান, বরইতলা গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম শেখসহ একাধিক গ্রামবাসি বলেন, ২০১০ সালে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খান হাবিবুর রহমান এর আমলে এ রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে আর কোন সংস্কার হয়নি, ২/৩ বছর পূর্বে হাজী রাজাউল্লাহ স্কুলের সামনে থেকে সামান্য কিছু জায়গায় ইট বসানো হয়েছিল। তারা হাজী রাজাউল্লাহ স্কুল থেকে লক্ষীখালী বাজার অভিমুখী ৫ কিলোমিটারের ইট সোলিং এ রাস্তাটি পুন:নির্মানের জোর দাবি জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আরিফুল ইসলাম বলেন, জিউধরা ইউনিয়নে গত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ন পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩ এর মাধ্যমে দক্ষিণ বাংলা কলেজ হতে লক্ষীখালী বাজার অভিমুখি ১ কিলোমিটার হ্যারিং বন্ড রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে রাস্তাটির পরিধি বৃদ্ধি হয়নি। নতুন করে বরাদ্দ এলে পরিধিবৃদ্ধি করার পরিকল্পনা রয়েছে।