জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি :: লক্ষ্মীপুরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের পিটুনিতে মানসিক ভারসাম্য হারানো ছাত্রদল নেতা সুলতান বাপ্পীর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সে অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকালে সুলতান বাপ্পীকে নিয়ে পরিবারের লোকজন ঢাকায় গেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, সুলতান বাপ্পী ছাত্রদলের সক্রিয় নেতা ছিলেন। সবশেষ খালেদা জিয়ার অসুস্থার সময় দোয়া চেয়ে মসজিদে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করলে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডারদের দফায় দফায় হামলা-পিটুনিতে বাপ্পী অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে মানসিক ভারসাম্য হারালে তাকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। এতে দীর্ঘদিন ধরে তিনি শয্যাশায়ী অবস্থায় পড়ে ছিলেন। শুয়ে থাকতে গিয়ে তার কোমর থেকে নিচের অংশে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি তাকে নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দৃষ্টিগোচর হয়। বাপ্পীকে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে দেশনায়ক তারেক রহমান তার চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। আশা করি, বাপ্পী উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসে আবারও আমাদের সঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয় হবেন।
জানা গেছে, তারেক রহমানের নির্দেশে সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন নেতা-কর্মীদের নিয়ে সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের রমারখিল গ্রামে সুলতান বাপ্পীর বাড়িতে যান। এ সময় মামুনের মোবাইল ফোনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন ভিডিও কলের মাধ্যমে বাপ্পীর সঙ্গে কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার চিকিৎসার সব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন বলে জানান কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির। বাপ্পী সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক এবং স্থানীয় রমারখিল গ্রামের আইশার বাড়ির আব্দুল লতিফ সরকারের ছেলে।
বাপ্পীর ভাই মো. ছোলায়মান বলেন, ২০২১ সালে খালেদা জিয়ার সুস্থতায় মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করার পর দফায় দফায় বাপ্পীকে পিটিয়েছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তখন তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে মানসিক ভারসাম্য হারান। এরপর থেকে তাকে আমরা তিনটি শেকল দিয়ে বেঁধে রাখতাম বাড়িতে। তাকে মানসিক হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছিল।
এ সময় সুলতান বাপ্পী সবার কাছে সুস্থতা কামনায় দোয়া চেয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, তার পরিবারকে যেন উপার্জনের ব্যবস্থ করে দেওয়া হয়। জড়িত সবার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চেয়েছেন বাপ্পী।
কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন বলেন, ছাত্রদল নেতা সুলতান বাপ্পীর বিষয়টি গণমাধ্যমের সহযোগিতায় আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাবতীয় খোঁজখবর নিয়ে তাকে ঢাকায় এনে চিকিৎসা করানোর জন্য বলেছেন। এটি ইতিবাচক ঘটনা। তার চিকিৎসার পুরো দায়িত্ব তিনি নিয়েছেন। সে অনুযায়ী ছাত্রদল কাজ করছে। গত ১৭ বছর আওয়ামী দুঃশাসনের কারণে, বিশেষ করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর যেরকম হামলা করেছে, আপনারা অতীতে দেখেছেন। লক্ষ্মীপুরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আমাদের অনেক নেতা-কর্মী শহীদ ও আহত হয়েছেন। ছাত্রদল নেতা বাপ্পী তার প্রমাণ।