শিরোনাম
◈ বিএনপি কর্মীকে হত্যাচেষ্টা: শেখ হাসিনাসহ ৯৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা ◈ জুলাই শহিদ পরিবারের করা পদত্যাগ দাবি নিয়ে যা বললেন আসিফ নজরুল ◈ বড় সাইবার হামলার শঙ্কা নির্বাচনের আগে! ◈ মাইলস্টোনের ৩ শিক্ষক মানবতা ও সাহসিকতায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন: প্রধান উপদেষ্টা ◈ পিআর পদ্ধতি কোনোভাবেই মেনে নেব না: দেশে ফিরে মির্জা ফখরুল ◈ ৩ কার্গো এলএনজি আসবে যুক্তরাজ্য থেকে, ব্যয় কত? ◈ ফরিদপুরে আড়িয়াল খাঁ ও পদ্মায় পানি বৃদ্ধি, বন্যা-নদী ভাঙন আতঙ্কে মানুষ ◈ ছাত্রলীগের হামলায় মানসিক ভারসাম্য হারানো ছাত্রদল নেতার চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান ◈ এনবিআরের ১৭ কর্মকর্তার সম্পদের হিসাব চাইলো দুদক ◈ ‘গণঅভ্যুত্থানের পর অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে বাংলাদেশ’

প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট, ২০২৫, ০৪:৫৬ দুপুর
আপডেট : ১৯ আগস্ট, ২০২৫, ০৯:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বান্দরবানের ১১ কোটি টাকার টানেলে পানি চুয়ে পড়ছে, ধ্বসের ঝুঁকিতে যাত্রীরা!

বান্দরবান বাসস্টেশন এলাকায় তিন বছর না যেতেই ঝরনার মত পানি পড়ছে দৃষ্টিনন্দন টানেলে।

বান্দরবানের নির্মিত দৃষ্টিনন্দন টানেল কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হলেও নির্মাণে তিন বছর না যেতেই টানেলের ভিতর প্রাচীর ফেটে চুয়ে চুয়ে পড়ছে পানি। টানেল ভিতর বেশ কয়েকটি স্থানে প্রাচীর ফেটে পানি চুয়ে পড়ার ফলে সড়কের স্যাতস্যাতে কাদামাটি পরিণত হওয়ার পাশাপাশি টানেলটি ধ্বসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া পাহাড়ের দু’পাশে মাঝখানে নির্মিত এই টানেলটি পাহাড় থেকে মাটি ধ্বস ও পানি পড়ার কারণ হিসেবে কতৃপক্ষ অবহেলা ও গাফিলতি কারণে এমন দূর্দশা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন পথচারীরা।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে নির্মিত বান্দরবানের বর্তমান বাসস্ট্যান্ড থেকে হাফেজঘোনা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল যাওয়ার পথে নির্মিত ৫০০ ফুট দৈর্ঘ্য টানেলটি তিন বছর না যেতেই বিভিন্ন অংশে ফাটল সৃষ্টি হয়ে ঝরনার মত পানি বের হচ্ছে। এ টানেলটিতে বিগত সরকারের আমলে উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের যোগসাজশে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, টানেলটি তৈরি করার পর থেকে নেয়া হয়নি কোন রক্ষনাবেক্ষণের উদ্যেগ। উদ্বোধনে পর টানেলটি সৌন্দর্যভাবে দেখা গেলেও পরবর্তীতে সেই চিত্র পালটে যায়। দীর্ঘদিন মাস ধরে টানেল ভিতরে রাখা হচ্ছে বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন। এই টানেল সড়ক দিয়ে হাজার মানুষের চলাচল করে থাকে।

টানেল ভিতর বাস রাখা কারণে সড়ক সংকুচিত হওয়ার পাশাপাশি দুর্গন্ধে অতিষ্ট পথচারীরা। আর সেই সাথে ওয়াল ফেটে পানি চুয়ে পড়ার কারণে টানেল ধ্বসের পড়া আতঙ্কে রয়েছে সড়কের চলাচলকারীরা। এতে কতৃপক্ষ তদারকি না করা কারণে এমন দুর্দশা চিত্র ফুটে উঠেছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসীরা।

জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নবনির্মিত ৫০০ ফুট লম্বা টানেল সড়ক নির্মানের কার্যাদেশ পেয়েছিলেন রাজু কন্ট্রাকশন স্বত্বধিকারী ঠিকাদার রাজু বড়ুয়া। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে কাজটি শুরু হলেও দুই দফায় অর্থ বরাদ্দের পর ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলে তৃতীয় দফায় অর্থ বরাদ্দের পর নির্মাণকাজ শেষ হয় গতবছর। এরপর ২৭ অক্টোবর সকালে টানেল সড়কের ফলক উন্মোচন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমানে স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর বাহাদুর উশৈসিং। কিন্তু উদ্বোধনের তিন বছর না পেরোতেই বিভিন্ন স্থান থেকে ওয়াল ফেঁটে পানি চুয়েঁ পড়ার এমন দুর্দশা ও দুর্নীতির চিত্র দেখা মিলেছে । 

সরেজমিনে দেখা গেছে, বাস টার্মিনাল সংলগ্ন নির্মিত দৃষ্টিনন্দন টানেলটি ৫২০ ফুট দৈর্ঘ্যের প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতার লম্বা। এই টানেল ভিতরে রাখা হয়েছে বাস, ট্রাকসহ অনান্য যানবাহন। টানেল ভিতর গিয়ে দেখা মিলে অন্য রকম চিত্র। ওয়ালে দু’পাশে ছেদ হয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে পানি চুয়ে পড়ছে। আবার কিছু কিছু ওয়ালেও পানি চুয়ে পড়ার চলমান। পানি পড়ার কারণে সড়কে জমাট হচ্ছে কাদামাটি এবং কার্পেটিং সড়কও গর্তে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয় টানেল উপর পানি যাতায়াতের পথ ব্যবস্থা না করাতে ধ্বসে পড়ছে মাটি মিশ্রিত পানি। এতে করে ওয়াল ধ্বসে পড়া আশঙ্কার পাশাপাশি সৌন্দর্যবর্ধন হারাচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এই টানেলটি।

উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের অর্থায়নে ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে এ টানেলটি। টানেল উদ্বোধন হয়েছে বিগত ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর। তবে টানেলটি নির্মাণের ফলে বর্তমান বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যানজট কমে আসবে বলা হলেও টানেলটি নির্মাণের পর যানজট দ্বিগুণ বেড়েছে।

বিষয়টি জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইয়াসির আরাফাত  বলেন, টানেলের দুর্নীতির কথা এড়িয়ে গিয়ে তিনি জানান, টানেলের ছাদের উপরে পানি নিষ্কাশনের জন্য যে পাইপ লাইন দেওয়া হয়েছিল, সেই পাইপ লাইনগুলো চুরি হয়ে গেছে। তাই টানেলের ছাদ থেকে পানি পড়ছে এবং টানেলের বৈদ্যুতিক তারও চুরি হয়ে গেছে। পরে গত কয়েকদিন আগে নতুন তার লাগিয়ে নতুনভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু দিনের মধ্যে টানেলটি সংস্কার করে এনইউ'র মাধ্যমে বান্দরবান পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি। সূত্র: জনকণ্ঠ, রুপালী বাংলাদেশ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়