হাবিবুর রহমান সোহেল, কক্সবাজার: টানা চারদিনের বিরতির পর কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে ফের নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে। সোমবার (২৮ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুটি ইঞ্জিনচালিত সার্ভিস ট্রলার ৭৭ জন যাত্রী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
সাম্প্রতিক জোয়ার ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপে দেখা দিয়েছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি। সাগরের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ফুট বেড়ে যাওয়ায় দ্বীপের চারপাশে গাছপালা ও ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা, দ্রুত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না নিলে দ্বীপটি একদিন সাগরে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
সেন্টমার্টিনের জেলে জাহানগীর বলেন, “সাগরে এখন মাছ ধরতে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। পানি প্রতিদিনই বাড়ছে, ঘরবাড়িতে ঢুকে পড়ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে দ্বীপ টিকবে না।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য সৈয়দ আলম বলেন, “সাগরের পানি দ্বীপ ঘিরে ফেলেছে। আগে যে পানি হতো, এবার তা আরও ২-৩ ফুট বেড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ ও জিও ব্যাগ প্রকল্প গ্রহণ জরুরি।”
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম জানান, “বৈরী আবহাওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার থেকে রোববার পর্যন্ত চারদিন নৌচলাচল বন্ধ ছিল। এতে দ্বীপে খাদ্য সংকট দেখা দেয়। এখন ট্রলার চলাচল শুরু হওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে। তবে এমন সংকট বারবার হয়, তাই সি-ট্রাক ও সি-অ্যাম্বুলেন্স চালুর দাবি করছি।”
সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ জানান, দুর্যোগের কারণে প্রায়ই নৌপথ বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে দ্বীপের সঙ্গে মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং পণ্য সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, “সেন্টমার্টিনে জোয়ারের পানি বাড়লে সমস্যা হয়, বিশেষ করে গত বছর থেকে এটি প্রকট হয়েছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয়দের মতে, বর্ষার মৌসুমে দ্বীপে জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ত পানির ঢল এবং পর্যটন বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিকভাবে চরম সংকটে পড়ে দ্বীপবাসী। তাই তারা দ্বীপ রক্ষায় টেকসই পরিকল্পনার দাবি জানিয়েছেন।