শিরোনাম
◈ শাপলা প্রতীক নিয়ে রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক! ◈ যুক্তরাষ্ট্র ফেরত টাঙ্গাইল জেলা আ.লীগ নেতা বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার ◈ বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা সম্মেলন ঘিরে বিএনপির পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, ফলাফল স্থগিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ◈ সাম্প্রতিক বন্যায় গোমতীর চরে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, কৃষকের মাথায় হাত ◈ বিরলে কিশোরকে গাছে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন,থানায় মামলা দায়ের ◈ ফরিদপুরে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা চক্রের মূলহোতাসহ ৫ জনকে আটক  ◈ পরকীয়া প্রেমিকের ঘরে উঠতে না পেরে স্বামীর নামে যৌতুক মামলা ◈ মুজিববাদী সংবিধানের নতুন পাহারাদার বিএনপি, পটুয়াখালীতে নাহিদ ইসলাম ◈ কাপাসিয়ায় এক রাতে কৃষকের ৮ গরু চুরি, আতঙ্কে কৃষকরা ◈ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, তারা গণতন্ত্রের শত্রু : মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত : ১৪ জুলাই, ২০২৫, ১২:০৩ দুপুর
আপডেট : ১৪ জুলাই, ২০২৫, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোটালীপাড়ার শত বছরের নৌকার হাটে নেই ক্রেতাদের হাঁকডাক

প্রমথ রঞ্জন সরকার, কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে ওঠা মৎস্য ঘের ,সরকারি খাল -জলাশয় দখল ও প্রকৃতিগত নানা কারনে কমেগেছে নৌকার ব্যববহার। তাই উপজেলার নৌকা বিক্রির হাটগুলোতে হচ্ছে না পূর্বের ন্যায় কেনা বেঁচা। 

সরেজমিনে উপজেলার শত বছরের    নৌকার হাটে বিক্রেতাদের এক রকম অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। নেই আগের মতো বাহারি ধরনের নৌকা। পূর্বে যেখানে শত শত নৌকা নিয়ে বিক্রেতাগণ বসে থাকতো, সেখানে এখন গুটি কয়েক বিক্রেতা। হাটে নেই ক্রেতাদের তেমন কোন হাকডাক।

পূর্বের চেয়ে বেঁচা বিক্রি কম হলেও গত বছরের তুলনায় এ বছর নৌকার দাম বেশি বলে জানিয়েছে জাঠিয়া গ্রামের নরেশ বাড়ৈ।

তিনি বলেন,সুন্দরি ও লোহা কাঠের নৌকা পাওয়া যেত।একটি নৌকা কিনলে ১৫/২০ বছর ব্যবহার করতে পারতাম। এখন বেশির ভাগ নৌকা রেইন্ট্রি ও মেহগুনি গাছ দিয়ে তৈরী হয়। এ সব নৌকা এক বছরের উপর ব্যবহার করা যায় না। তাই গতবারের নৌকাটি ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে এ বছর নতুন একটি নৌকা কিনতে এসেছিলাম। এখন দেখছি এ বছর দাম অনেক বেশী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নৌকা বিক্রেতা গোপাল ঘরামী বলেন, কাঠ,লোহা ও মিস্তিরিদের মুজুরি বৃদ্ধির কারনে আমাদেরকে বেশী দামে নৌকা বিক্রি করতে হচ্ছে।তা ছাড়া আগে যেখানে প্রতি হাটে ২০/৩০ টি নৌকা বিক্রি করতাম এখন সেখানে প্রতি হাটে ৩/৪টি নৌকা বিক্রি করি।তাই খরচ পুষিয়ে নিতে আমাদেরকে এবছর একটু বেশী দামে নৌকা বিক্রি করতে হচ্ছে।

নৌকা কম বিক্রির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অপর বিক্রেতা শ্যামল মন্ডল বলেন, খাল বিল দখল, অপরিকল্পিত মাছের ঘেরসহ নানা কারনে এখন আর আগের মতো নৌকার ব্যবহার হচ্ছে না। তাই নৌকা বিক্রি কমেগেছে।শুধু মাত্র কিছু কিছু ঘের মালিকরা তাদের ঘেরে মাছের খাবার দেওয়ার জন্য নৌকা কিনছেন।

স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মী সজল বালা বলেন, শত বছরে পুরনো ঘাঘর নৌকার হাট নিয়ে নদী কেন্দ্রীক একটি সংস্কৃতিক বলয় তৈরী হয়েছিল।সেটি আর এখন নেই। পূর্বে  দেখতাম খাল বিল দিয়ে গান গাইতে গাইতে নৌকা বেয়ে এই হাটে বিক্রেরা আসতো। ক্রেতাগণ নৌকা কিনে তারাও একই ভাবে আনন্দ করতে করতে বাড়ি যেত। কিন্ত সেই দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না।এখন ভ্যান গাড়িতে করে নৌকা নিয়ে হাটে আসে বিক্রি করতে। আবার ক্রেতাগণও নৌকা কিনে একই ভাবে নিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন,অপরিকল্পিত উন্নয়ন ও মাছের ঘের নির্মান এবং দখলদারিত্ব আমাদের সংস্কৃতির একটি অংশকে হত্যা করেছে।আমি এর প্রতিবাদ জানাই।আমাদের আগামী প্রযন্মের জন্য কিছুটা হলেও নৌকার প্রচলন ধরে রাখা উচিৎ। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আমি প্রশাসনের দুষ্টি আকর্ষণ করছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন,নৌকা হচ্ছে এ জনপদের মানুষদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি অংশ। একটা সময় এ এলাকায় মানুষদের মাঝে নৌকার প্রচলন বা ব্যবহার ছিল। কালের পরিক্রমায় নানা কারনে এই নৌকার প্রচলন বা ব্যবহার কমেগেছে।তাই এ এলাকায় নৌকা তৈরী বা ব্যবহার বাড়াতে উপজেলা প্রশাসের কাছে যদি কেউ কোন প্রকার সহযোগিতা চায় তা হলে আমরা তাকে সহযোগিতা করবো।অপরদিকে অপরিকল্পিত ভাবে মাছের ঘের তৈরী ও খাল বিল দখলমুক্ত করার জন্য উপজেলা প্রশাসন শীঘ্রই পদক্ষেপ গ্রহন করবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়