ফিরোজ আহম্মেদ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ ও সেখান থেকে ফেরার সময় গত দুই মাসে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ মোট ৭২০ জনকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। একই সময়ে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য, স্বর্ণের বার এবং চোরাচালান পণ্যও জব্দ করা হয়েছে।
৫৮ বিজিবি মহেশপুর ব্যাটালিয়নের দেওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২৫ সালের ১ মে থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল ও বিশেষ অভিযানে এসব আটক ও জব্দের ঘটনা ঘটে।
আটকদের পরিসংখ্যান:
ভারত থেকে ফেরার সময় আটক: ৩০৪ জন
নারী: ১০০ জন
পুরুষ: ১০৫ জন
শিশু: ৯৯ জন
বাংলাদেশ থেকে ভারতে যাওয়ার সময় আটক: ৪১৬ জন
নারী: ১৮০ জন
পুরুষ: ১২৯ জন
শিশু: ১১৭ জন
আটকদের মধ্যে ৩ জন ভারতীয় নাগরিক, ৪ জন দালাল এবং ৪ জন মাদক-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি রয়েছেন।
জব্দকৃত পণ্য:
মাদকদ্রব্য:
ভারতীয় মদ: ১,১২৮ বোতল
ফেন্সিডিল: ১,৬৯৫ বোতল
ইয়াবা: ১৪,৮৯৭ পিস
হিরোইন: ২ কেজি ২৭ গ্রাম
কোকেন: ১ কেজি ৪৩০ গ্রাম
গাঁজা: ১৯ কেজি ৭১৬ গ্রাম
ভায়াগ্রা ট্যাবলেট: ১০,৩৯০ পিস
স্বর্ণ:
১১টি স্বর্ণের বার (মোট ওজন ১ কেজি ৫২৭ গ্রাম)
আনুমানিক মূল্য: ২ কোটি ১৩ লাখ ২৯ হাজার ৬ টাকা
অন্যান্য পণ্য:
ভারতীয় ওষুধ: ৪,৬৯৮ পিস
আতশবাজি: ১২৯ বক্স
বাইসাইকেল: ২টি
মোটরসাইকেল: ৩টি
চশমা: ৮৭টি
ভারতীয় রুপি: ৫০০
আইনগত ব্যবস্থা:
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং মহেশপুর থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সতর্কবার্তা ও নজরদারি:
বিজিবি জানায়, সীমান্ত এলাকায় নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। চোরাচালান ও মানব পাচার প্রতিরোধে স্থানীয় জনগণকে সচেতন থাকতে এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ সম্পর্কে দ্রুত তথ্য দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, দুই মাসে এত সংখ্যক নারী, পুরুষ ও শিশুর আটক হওয়া এই অঞ্চলে মানব পাচারের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিষয়টি সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য একটি সতর্কবার্তা হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।